‘দোষীরা যতই প্রভাবশালী হোক শাস্তি হবেই,’ মাঝিঠা বিষ মদ কাণ্ডে হুঁশিয়ারি কেজরির

পাঞ্জাবের অমৃতসরের মাঝিঠা ব্লকে বিষাক্ত মদ পানের ফলে ১৪ জনের মৃত্যু এবং ছয়জনের হাসপাতালে ভর্তির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আম আদমি পার্টির (আপ )…

kejriwal warnes in liquor case

পাঞ্জাবের অমৃতসরের মাঝিঠা ব্লকে বিষাক্ত মদ পানের ফলে ১৪ জনের মৃত্যু এবং ছয়জনের হাসপাতালে ভর্তির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আম আদমি পার্টির (আপ ) আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল (kejriwal)। মঙ্গলবার তিনি তাঁর অফিসিয়াল ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই ঘটনায় শোক জানিয়ে বলেছেন, দোষীদের কোনওভাবেই ছাড়া হবে না, তারা যতই প্রভাবশালী বা বড় ব্যক্তি হোক না কেন।

কেজরি লিখেছেন (kejriwal)

তিনি লিখেছেন, “মাঝিঠায় বিষাক্ত মদ পানে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত যে কেউ, তারা যতই প্রভাবশালী বা বড় হোক, তাদের ছাড়া হবে না। তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। যাঁরা দুঃখজনকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে ঈশ্বর শক্তি দিন। তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি।”

   

গোল্ডেন জুবিলিতে ঝড় তুলতে প্রস্তুত ব্লু কোল্টস ও গোর্খালিস

মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন

এর আগে একই দিনে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান মাঝিঠায় বিষাক্ত মদ পানের ফলে মৃত্যুর ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে থাকা দোষীদের কোনওভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না এবং তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে মান বলেন, “মাঝিঠার আশপাশের গ্রামগুলিতে বিষাক্ত মদ পানে অনেকের মৃত্যুর দুঃখজনক খবর পাওয়া গেছে।

নিরীহ মানুষের এই হত্যাকারীদের কোনওভাবেই ছাড়া হবে না। এগুলো মৃত্যু নয়, হত্যা।” তিনি আরও বলেন,(kejriwal) “যারা বিষাক্ত মদ দিয়ে মানুষের ঘরে শোকের পরিবেশ তৈরি করেছে, তাদের আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রয়াতদের আত্মার শান্তি কামনা করি। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে রয়েছে এবং সব ধরনের সাহায্য প্রদান করবে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১২ মে রাতে সংঘটিত এই ঘটনায় প্রধান পরিবেশক বা মূল কাণ্ডারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্ডার রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সতিন্দর সিং বলেন, “এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। মূল কাণ্ডারী সহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” অমৃতসর (গ্রামীণ) এর এসএসপি মনিন্দর সিং জানান, গতকাল চারজন স্থানীয় সরবরাহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যারা প্রভজিৎ সিং নামে একজনের নাম প্রকাশ করেন। প্রভজিৎ জানান, মিথানল সরবরাহকারী মূল কাণ্ডারী হলেন সাহিব সিং।

এসএসপি আরও বলেন, “প্রভজিৎ ৫০ লিটার মিথানল সংগ্রহ করেছিলেন, যা পাতলা করে ১২০ লিটার করা হয়। এটি চারজন স্থানীয় সরবরাহকারীর কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। আমরা ছয়জন গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১০৫ বিএনএস-এর কঠোর ধারা প্রয়োগ করেছি। এই ঘটনায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে (kejriwal)।”

Advertisements

মাঝিঠা ব্লকের পাঁচটি গ্রামে এই ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ছয়জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, মিথানলযুক্ত বিষাক্ত মদ সরবরাহের ফলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। মিথানল একটি শিল্প কাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

পাঞ্জাবে বিষাক্ত মদের সমস্যা

এই ঘটনা পাঞ্জাবে বিষাক্ত মদের সমস্যাকে আরও একবার উন্মোচিত করেছে। এর আগেও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় একই ধরনের ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ২০২৪ সালে সাংরুরে বিষাক্ত মদ পানে ২০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল এএপি সরকার।

বিরোধী দলগুলি এই ঘটনার জন্য সরকারের নীতি এবং তদারকির অভাবকে দায়ী করছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মান এবং কেজরিওয়াল উভয়েই এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাঝিঠার গ্রামগুলিতে এই ঘটনা শোকের ছায়া ফেলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সদস্যরা সরকারের কাছে ন্যায়বিচার এবং আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

বিরোধী দলগুলি আপ (kejriwal) সরকারের বিরুদ্ধে অবৈধ মদের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে। শিরোমণি অকালি দলের মুখপাত্র আরশদীপ সিং ক্লের বলেন, এই ধরনের ঘটনা সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ। অন্যদিকে, এএপি নেতৃত্ব দাবি করেছে, তারা এই ঘটনার তদন্তে কোনও ত্রুটি রাখবে না এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে।

এই ঘটনা পাঞ্জাবে অবৈধ মদের ব্যবসার গভীর সমস্যাকে আবারও সামনে এনেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা রোধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সঠিক তদারকির প্রয়োজন। সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং তদন্তের ফলাফল এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।