প্রত্যক্ষ পাক মদতের প্রতিবাদে পুনের বাজারে নিষিদ্ধ তুর্কি আপেল

ভারত ও পাকিস্তানের  মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে তুরস্কের পাকিস্তানের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থনের জেরে ভারতজুড়ে ‘তুরস্ক (turkish) নিষিদ্ধ’ আন্দোলন তীব্র গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। এই আন্দোলনের অংশ…

turkish apples banned in pune market

ভারত ও পাকিস্তানের  মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে তুরস্কের পাকিস্তানের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থনের জেরে ভারতজুড়ে ‘তুরস্ক (turkish) নিষিদ্ধ’ আন্দোলন তীব্র গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে পুনের ব্যবসায়ীরা তুর্কি আপেল বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ফলে স্থানীয় বাজার থেকে এই ফল প্রায় উধাও হয়ে গেছে।

সাধারণ নাগরিকরাও এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন

সাধারণ নাগরিকরাও এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন, তুর্কি (turkish) আমদানির পরিবর্তে অন্যান্য উৎস থেকে আপেল কিনছেন। এই বয়কট পুনের ফলের বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ তুর্কি (turkish) আপেল সাধারণত মৌসুমি ব্যবসায় ১,০০০ থেকে ১,২০০ কোটি টাকার টার্নওভারে অবদান রাখে।

   

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন (turkish)

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ কেবল আর্থিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং সশস্ত্র বাহিনী এবং সরকারের প্রতি সংহতি প্রকাশের একটি উপায়। পুনের কৃষি উৎপাদন বাজার কমিটি (এপিএমসি) বাজারের একজন আপেল ব্যবসায়ী সুয়োগ জেন্ডে মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমকে কে জানান, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে তুর্কি (turkish) আপেলের চাহিদা তলানিতে ঠেকেছে।

তিনি বলেন, “আমরা তুরস্ক (turkish) থেকে আপেল কেনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর পরিবর্তে আমরা হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, ইরান এবং অন্যান্য অঞ্চল থেকে ফল কিনছি। এই সিদ্ধান্ত আমাদের দেশপ্রেম এবং জাতির প্রতি সমর্থনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

অন্য একজন ফল ব্যবসায়ী জানান, তুর্কি (turkish) আপেলের জন্য গ্রাহকের চাহিদা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে কে বলেন, “গ্রাহকরা সক্রিয়ভাবে তুর্কি ফল এড়িয়ে চলছেন, যা খুচরা পর্যায়ে এই নিষেধাজ্ঞাকে আরও শক্তিশালী করছে।”

স্থানীয় গ্রাহকদের সমর্থন

স্থানীয় গ্রাহকরাও এই প্রবণতার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। একজন বাসিন্দা বলেন, “আমাদের কাছে আপেলের অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে, তাহলে কেন আমরা এমন একটি দেশ থেকে কিনব যারা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে? সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের উচিত সংবেদনশীল স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা।”

‘অপারেশন সংকল্পে’ বড় সাফল্য, ছত্তিশগড়ে খতম ৩১ মাওবাদী

প্রতিবাদের তাৎপর্য

তুরস্কের (turkish) অবস্থান বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার মুখে পড়েছে। তুর্কি পণ্য, বিশেষ করে আপেলের বয়কট ক্রমশ জনপ্রিয়  হয়ে উঠছে, যা জাতীয়তাবাদ এবং অর্থনৈতিক প্রতিরোধের একটি বৃহত্তর মনোভাব প্রতিফলিত করছে। আন্দোলন যত জোরালো হচ্ছে, ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকরা তুর্কি পণ্য প্রত্যাখ্যান করে বিকল্পের দিকে ঝুঁকছেন।

Advertisements

পুনের বাজারে তুর্কি (turkish) আপেলের আমদানি বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় উৎপাদক এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমদানিকৃত আপেলের চাহিদা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডের আপেল এখন বাজারে প্রাধান্য পাচ্ছে। এছাড়া ইরান থেকে আমদানিকৃত আপেলও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এই পরিবর্তন শুধু বাজারের গতিশীলতাই বদলে দেয়নি, বরং স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।

দেশের অন্যান্য শহরেও প্রভাব 

এই বয়কটের প্রভাব কেবল পুনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দেশের অন্যান্য শহরেও তুর্কি পণ্যের বিরুদ্ধে অনুরূপ আন্দোলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ‘ব্যান তুর্কি’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছে, যেখানে নাগরিকরা তুর্কি পণ্য বর্জনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। কেউ কেউ এই আন্দোলনকে ভারতের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার দিকে একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে

রাজনৈতিক মহলেও এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। বিরোধী দলগুলি সরকারের কাছে তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। তবে, সরকার এখনও এই বিষয়ে কোনো সরকারি বিবৃতি জারি করেনি। বিশ্লেষকদের মতে, এই বয়কট ভারত-তুরস্ক সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে।

পুনের ব্যবসায়ীদের এই পদক্ষেপকে অনেকে দেশপ্রেমের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। সুয়োগ জেন্ডে বলেন, “আমরা শুধু ব্যবসায়ী নই, আমরা এই দেশের নাগরিক। যখন জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন ওঠে, তখন আমাদের দায়িত্ব হল সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।”

অন্যদিকে, গ্রাহকদের মধ্যেও একই মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একজন গ্রাহক বলেন, “আমরা আমাদের ক্রয়ের মাধ্যমে একটি বার্তা দিতে চাই। তুরস্কের মতো দেশ যদি আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাহলে আমরাও তাদের পণ্য প্রত্যাখ্যান করব।”

ফলের বাজারে নতুন গতিশীলতা

এই আন্দোলনের ফলে পুনের ফলের বাজারে নতুন গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, স্থানীয় এবং অন্যান্য উৎস থেকে আপেলের সরবরাহ বৃদ্ধির ফলে বাজারে কোনো ঘাটতি হবে না। তবে, তুর্কি আপেলের উপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ীদের জন্য এই পরিবর্তন কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

আগামী দিনে এই আন্দোলন কোন দিকে যায়, তা নির্ভর করবে সরকারের নীতি এবং জনগণের অংশগ্রহণের উপর। বর্তমানে, পুনের ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকদের এই পদক্ষেপ জাতীয় ঐক্য এবং প্রতিরোধের একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে।