ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনা এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির আবহে , বারামুল্লা (baramulla) জেলার ১৭টি গ্রামে ২০টি অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ (ইউএক্সও) পাওয়া গেছে বলে বারামুল্লা পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। এই গোলাবারুদগুলো নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করার পর, জেলা প্রশাসন ১৭টি গ্রামের মধ্যে ছয়টি গ্রামের বাসিন্দাদের তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
পুলিশের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে (baramulla)
বারামুল্লা (baramulla) পুলিশের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জেলার ১৭টি গ্রামে ২০টি অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ (ইউএক্সও) পাওয়া গেছে বলে বারামুল্লা পুলিশকে জানানো হয়েছে। এগুলো নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করার পর, জেলা প্রশাসন এই ছয়টি গ্রামের উচ্ছেদকৃত বাসিন্দাদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।”
এই ঘটনার পাশাপাশি, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৭ মে ভোরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) জইশ-এ-মোহাম্মদ (জেএম), লস্কর-এ-তৈবা (এলইটি) এবং হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত নয়টি প্রধান জঙ্গি শিবিরে হামলা চালানো হয়।
এই নয়টি শিবিরের মধ্যে পাঁচটি পিওকে (baramulla) এবং বাকি চারটি পাকিস্তানে অবস্থিত। পাকিস্তানের ধ্বংসপ্রাপ্ত শিবিরগুলোর মধ্যে মুরিদকে এবং বাহাওয়ালপুর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ এগুলো শুধুমাত্র প্রধান সন্ত্রাসী কমান্ডারদের বাসস্থান হিসেবে নয়, বরং লস্কর এবং জইশ-এ-মোহাম্মদের জন্য গোয়েন্দা এবং অস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করত।
এই অভিযানে জইশ-এ-মোহাম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের ভগ্নিপতি রউফ আজহার সহ গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি নেতারা নিহত হয়েছেন। রউফ আজহার একজন নিষিদ্ধ জঙ্গি , যিনি আইসি-৮১৪ বিমান ছিনতাইয়ের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার জন্য ভারতে অভিযুক্ত। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং পাকিস্তানের ১১টি বিমান ঘাঁটিতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
রবিবার নয়াদিল্লিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই (ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশনস), ভাইস অ্যাডমিরাল এ এন প্রমোদ (ডিরেক্টর জেনারেল নেভাল অপারেশনস), এবং এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী (ডিরেক্টর জেনারেল এয়ার অপারেশনস) অংশ নেন।
পাকিস্তানে তাণ্ডব চালানো ‘ব্রহ্মোস’-এর ভক্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ব, চিনের শত্রুও দিল অর্ডার
ভারত পাকিস্তানের ১১টি বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে
তারা নিশ্চিত করেন যে ভারত পাকিস্তানের ১১টি বিমান ঘাঁটিতে (baramulla) হামলা চালিয়ে তাদের সামরিক সক্ষমতার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে। তারা ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সাফল্য ঘোষণা করেন, যা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গি পরিকাঠামো নির্মূল করার লক্ষ্যে পরিচালিত একটি সীমান্তবর্তী পাল্টা অভিযান। এই অভিযানটি স্থল, সমুদ্র এবং আকাশপথে সংযমের সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে, যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়।
এই অপারেশন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উচ্চতর উত্তেজনার পটভূমিতে ঘটেছে, যা ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুরের’-এর পর আরও তীব্র হয়েছে।
এই হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। ভারতের সামরিক অভিযানে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি শিবির হিসেবে চিহ্নিত নয়টি স্থানে নির্ভুল হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে মুজাফফরাবাদ, কোটলি এবং বাহাওয়ালপুরের সন্ত্রাসী শিবির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অপারেশন সিঁদুরের প্রধান লক্ষ্য
অপারেশন সিঁদুরের প্রধান লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর পরিকাঠামো ধ্বংস করা, যারা ভারতের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করে আসছে। মুরিদকে এবং বাহাওয়ালপুরের শিবিরগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এগুলো জইশ-এ-মোহাম্মদ এবং লস্কর-এ-তৈবার মতো সংগঠনগুলোর প্রধান কমান্ডারদের বাসস্থান এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত। এই শিবিরগুলোতে সন্ত্রাসীদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং উগ্রবাদী মতাদর্শে প্রভাবিত করার কার্যক্রম পরিচালিত হত।
অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন। এই অভিযানে ব্যবহৃত নির্ভুল অস্ত্র এবং সযত্ন পরিকল্পনা নিশ্চিত করেছে যে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম রাখা হয়। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে এই হামলাগুলো পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করেনি, যা ভারতের সংযমী এবং অ-উস্কানিমূলক পদ্ধতির প্রতিফলন।
বারামুল্লায় অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের উপস্থিতি
বারামুল্লায় (baramulla) অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের উপস্থিতি এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক সামরিক কার্যকলাপের তীব্রতা এবং এর পরিণতি স্পষ্ট করে। এই গোলাবারুদগুলো নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করার জন্য পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা (baramulla)নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছয়টি গ্রামের বাসিন্দাদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও, বাকি গ্রামগুলোতে এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে, এবং প্রশাসন এই বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে।
এই ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের প্রভাবের একটি স্মারক। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারত স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তবে, এই অভিযানের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি এবং বারামুল্লার (baramulla) মতো অঞ্চলে অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের উপস্থিতি স্থানীয় জনগণের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনী এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।