ভারত সোমবার উত্তর ও পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকায় বিমানবন্দর (airports) বন্ধের নির্দেশ প্রত্যাহার করে ৩২টি বিমানবন্দর পুনরায় চালু করেছে। এই নির্দেশটি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এসেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ মে পর্যন্ত এই এলাকায় বিমান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) নির্দেশ অনুসারে
ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) নির্দেশ অনুসারে এই বিমানবন্দর (airports) গুলোতে বেসামরিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছিল। সোমবার থেকে এই বিমানবন্দরগুলোতে স্বাভাবিক বিমান চলাচল শুরু হয়েছে, যা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর জন্য স্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে চণ্ডীগড়, শ্রীনগর সহ উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ৩২টি বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান পরিষেবা পুনরায় শুরু হয়েছে। এই পদক্ষেপটি গত শনিবার নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাস করার বিষয়ে ঐকমত্যের পর গৃহীত হয়েছে।
দিল্লি শিবিরে বড় ধাক্কা! আইপিএলে ফিরবে না ১১.৭৫ কোটির বিদেশি তারকা পেসার?
এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে
এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই) একটি প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, “১৫ মে ২০২৫ সকাল ০৫:২৯ পর্যন্ত বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য অস্থায়ীভাবে বন্ধ থাকা ৩২টি বিমানবন্দর এখন থেকে বেসামরিক বিমান পরিষেবার জন্য চালু করা হয়েছে।”
এএআই আরও জানিয়েছে, “যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে তারা তাদের ফ্লাইটের স্ট্যাটাস সরাসরি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত করুন এবং এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে নিয়মিত আপডেট দেখে নিন।” এই পদক্ষেপের ফলে বিমান চলাচলে যে সাময়িক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংঘাতের পটভূমি এবং বিমানবন্দর বন্ধের কারণ
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে চলা উত্তেজনার কারণে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিমানস্থানে নিরাপত্তার স্বার্থে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। ভারতীয় বিমান বাহিনীর নির্দেশে এই বিমানবন্দর (airports) গুলোতে বেসামরিক উড়ান পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করা হয়।
এই সময়ে এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া একাধিক নোটিস টু এয়ারমেন (নোটাম) জারি করে, যার মাধ্যমে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ৩২টি বিমানবন্দরে বেসামরিক উড়ান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল চণ্ডীগড়, শ্রীনগর, জম্মু, আমৃতসর, এবংঅন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিমান যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক অসুবিধা দেখা দেয়। অনেক ফ্লাইট বাতিল হয়, এবং যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্বের সম্মুখীন হতে হয়। তবে, শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়ে সমঝোতার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ভারতীয় বিমান বাহিনী বিমানবন্দরগুলো পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিমান চলাচল পুনরায় শুরুর তাৎপর্য (airports)
৩২টি বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান পরিষেবা পুনরায় শুরু হওয়ায় বিমান চলাচলে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল, তা অনেকাংশে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বিমানবন্দর (airports) গুলো উত্তর ও পশ্চিম ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সঙ্গে যুক্ত, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর উপর ব্যাপক চাপ পড়েছিল। এছাড়াও, যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ এবং অসুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
এই পদক্ষেপের ফলে বিমান সংস্থাগুলো তাদের ফ্লাইট শিডিউল পুনরায় সাজাতে পারবে এবং যাত্রীদের জন্য স্বাভাবিক পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে। এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে তারা বিমানবন্দরগুলোর অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছে, এবং এখন এই বিমানবন্দরগুলো সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক উড়ানের জন্য প্রস্তুত।
যাত্রীদের জন্য পরামর্শ
এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (airports) যাত্রীদের পরামর্শ দিয়েছে যে তারা তাদের ফ্লাইটের স্ট্যাটাস সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট জানতে এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। এছাড়াও, এয়ারলাইন্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ফ্লাইটের সময়সূচি এবং অন্যান্য তথ্য নিয়মিত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে কিছু ফ্লাইটে বিলম্ব বা সময়সূচি পরিবর্তন হতে পারে, তাই যাত্রীদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসের ফলে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিমানবন্দরগুলো (airports) পুনরায় চালু হওয়ায় এই অঞ্চলের অর্থনীতি এবং পর্যটন শিল্পও ইতিবাচক প্রভাব অনুভব করবে। বিশেষ করে শ্রীনগর, জম্মু, এবং চণ্ডীগড়ের মতো শহরগুলোতে পর্যটন এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুনরায় গতি পাবে।
এই ঘটনা ভারতের বিমান চলাচল খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকার এবং এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমন্বয়ের ফলে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে এবং যাত্রীদের নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা প্রদানের জন্য আরও কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।