লখনউয়ে ব্রহ্মস ইন্টিগ্রেশন ও টেস্টিং ফ্যাসিলিটি উদ্বোধন রাজনাথের, প্রশংসা যোগীর

রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (rajnath) উত্তর প্রদেশের লখনউয়ে ব্রহ্মস এরোস্পেস ইন্টিগ্রেশন এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটির উদ্বোধন করেছেন। এই অত্যাধুনিক সুবিধা কেন্দ্রটি ভারতের…

rajnath praises modi and yogi

রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (rajnath) উত্তর প্রদেশের লখনউয়ে ব্রহ্মস এরোস্পেস ইন্টিগ্রেশন এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটির উদ্বোধন করেছেন। এই অত্যাধুনিক সুবিধা কেন্দ্রটি ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই প্রসঙ্গে তিনি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কে স্বাগত জানান। সিং বলেন যোগাজী অসাধারণ কৃতিত্বের নজির গড়েছেন।

ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিং বলেন (rajnath)

ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিং (rajnath) বলেন, এই মুহূর্তে তিনি দিল্লি ছেড়ে যেতে পারছেন না বলে দুঃখিত কারণ এই মুহূর্তে পরিস্থিতি খুব ই গম্ভীর। তিনি আর ও বলেন এই কেন্দ্রটি ভারতের আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি এবং কৌশলগত শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ।

   

তিনি জানান, এই সুবিধা কেন্দ্রটি তৈরি করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এবং এটি গত সাড়ে তিন বছরে নির্মিত হয়েছে। রাজনাথ সিং বলেন, “ব্রহ্মস মিসাইল ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি গর্বের প্রতীক। এই নতুন কেন্দ্রটি ব্রহ্মস মিসাইলের উৎপাদন, ইন্টিগ্রেশন এবং পরীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি শুধুমাত্র আমাদের সামরিক শক্তিকেই বাড়াবে না, বরং স্থানীয় শিল্প ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও অবদান রাখবে।”

ভারতের সামনে পাকিস্তানের JF-17 এবং F-16 বিমান ছিল শক্তিহীন, কিছুক্ষণের মধ্যেই হয় ধ্বংস

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন

তিনি (rajnath) আরও জোর দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলেছে, এবং এই সুবিধা কেন্দ্রটি সেই দৃষ্টিভঙ্গির একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। ব্রহ্মস মিসাইল, ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি, বিশ্বের দ্রুততম সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইলগুলির মধ্যে একটি।

এটি স্থল, সমুদ্র এবং আকাশ থেকে নির্ভুল হামলা চালাতে সক্ষম। লখনউয়ের এই নতুন কেন্দ্রটি মিসাইলের উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং দক্ষ করবে। এটি উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মিসাইলের ইন্টিগ্রেশন এবং কঠোর পরীক্ষণ নিশ্চিত করবে, যা ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য এই অস্ত্রের নির্ভরযোগ্যতা বাড়াবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজনাথ সিং (rajnath) ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পে স্বনির্ভরতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের সুরক্ষা আমাদের নিজেদের হাতে থাকা উচিত। এই কেন্দ্রটি আমাদের সেই লক্ষ্যের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।” তিনি ব্রহ্মস এরোস্পেসের প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী এবং কর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এই প্রকল্পকে সফল করেছে।

উত্তর প্রদেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব

এই সুবিধা কেন্দ্রটি উত্তর প্রদেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। রাজনাথ সিং (rajnath) জানান, এই কেন্দ্রটি শত শত প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, “এটি শুধু প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য নয়, স্থানীয় যুবকদের জন্যও একটি বড় সুযোগ। এটি উত্তর প্রদেশকে প্রতিরক্ষা উৎপাদনের একটি কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের প্রকল্পগুলি ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে শক্তিশালী করছে।

অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কথা

সংবাদ সম্মেলনে রাজনাথ সিং (rajnath) সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান শান্তি চুক্তি এবং অপারেশন সিঁদুর নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “অপারেশন সিঁদুর ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ। আমরা কেবলমাত্র তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছি যারা আমাদের নিরীহ নাগরিকদের রক্ত ঝরিয়েছে।”

তিনি পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে, তিনি শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ভারত এই মুহূর্তে পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে চায় না। তবে, পাকিস্তান যদি উসকানি দেয়, ভারতও যথাযথ জবাব দেবে।”

তিনি জানান, অপারেশন সিঁদুর এ প্রায় ১০০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে, যা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলির উপর ভারতীয় বিমান বাহিনীর নির্ভুল হামলার ফলাফল। তিনি বলেন, “এই অভিযান প্রধানমন্ত্রী মোদীর দৃঢ় নেতৃত্ব এবং সেনাবাহিনীর অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফল।” সিং আরও যোগ করে বলেন এর আগেও আপনারা দেখেছেন ভারত কিভাবে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করেছে। তিনি সংবাদ সম্মেলনে উরি, পুলওয়ামা এবং পাঠানকোটের উদাহরণ দেন।

ব্রহ্মস কেন্দ্রটি ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক

লখনউয়ের এই ব্রহ্মস কেন্দ্রটি ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। এটি ভারতের সামরিক প্রস্তুতি এবং কৌশলগত সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। রাজনাথ সিং বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনীকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত করা আমাদের লক্ষ্য। ব্রহ্মস মিসাইল এই লক্ষ্য অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।” তিনি আরও জানান, এই কেন্দ্রটি ভবিষ্যতে ব্রহ্মস মিসাইলের উন্নত সংস্করণ তৈরি এবং পরীক্ষণের ক্ষেত্রেও কাজ করবে।

এই উদ্বোধনের সঙ্গে ভারত তার প্রতিরক্ষা শিল্পে বিদেশি নির্ভরতা কমানোর প্রতিশ্রুতি পুনরায় নিশ্চিত করেছে। রাজনাথ সিং (rajnath) বলেন, “আমরা শুধু নিজেদের জন্য অস্ত্র তৈরি করছি না, আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি করছি।” তিনি উল্লেখ করেন, ব্রহ্মস মিসাইল ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বন্ধুপ্রতিম দেশের আগ্রহ আকর্ষণ করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ

এই অনুষ্ঠানে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “এই কেন্দ্রটি উত্তর প্রদেশকে ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদনের মানচিত্রে একটি বিশেষ স্থান দেবে।” তিনি রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাজনাথ সিং ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট এবং আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সেনাবাহিনীকে বিশ্বের সেরা সামরিক বাহিনীগুলির মধ্যে একটি হিসেবে গড়ে তুলছি।” তিনি জানান, সরকার স্থানীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন নীতি ও প্রণোদনা চালু করেছে।

এই সুবিধা কেন্দ্রটি ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) এবং ব্রহ্মস এরোস্পেসের যৌথ প্রচেষ্টার ফল। এটি ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা এবং উদ্ভাবনের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। রাজনাথ সিং শেষে বলেন, “এটি আমাদের দেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। আমরা আমাদের সীমানা এবং জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো কসুর করব না।”

Advertisements