তিন বাহিনী প্রধান ও সিডিএস-এর সঙ্গে বৈঠকে রাজনাথ সিং, জরুরি বৈঠক অমিত শাহর

Amit Shah security meeting নয়াদিল্লি: দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও বিমানবন্দরগুলিতে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ দুপুর ১২:৩০টায় জরুরি বৈঠক ডাকলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।…

amit-shah-security-meeting

Amit Shah security meeting

নয়াদিল্লি: দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও বিমানবন্দরগুলিতে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ দুপুর ১২:৩০টায় জরুরি বৈঠক ডাকলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF)-এর মহাপরিচালক, কেন্দ্রীয় শিল্প সুরক্ষা বাহিনী (CISF)-এর মহাপরিচালক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবং অপারেশন সিন্ধু-র পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের হামলা ও প্রতিক্রিয়ার জেরে সীমান্তে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, সেই সঙ্গে বড় শহরগুলির বিমানবন্দরেও সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা পর্যালোচনাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।

   

বৈঠকের মুখ্য উদ্দেশ্য: সীমান্ত সুরক্ষা ও বিমানবন্দর নিরাপত্তা 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, এই বৈঠকে মূলত দুইটি বিষয়কে ঘিরে আলোচনা হবে — সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলিতে নিরাপত্তার পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন। সাম্প্রতিক হামলা ও পাল্টা অভিযানের পর পাকিস্তান সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চল যেমন পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, ও রাজস্থানে BSF-এর মোতায়েন ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।

CISF-এর দায়িত্বে থাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা একটি বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, অমৃতসর ও শ্রীনগর বিমানবন্দরগুলিতে অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। আজকের বৈঠকে এই বিমানবন্দরগুলির বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রযুক্তি ব্যবহার, স্ক্যানিং ও চেকপয়েন্ট কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

গোয়েন্দা সংস্থার ইনপুট, সম্ভাব্য হুমকি বিশ্লেষণ Amit Shah security meeting

গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ভারতীয় ভূখণ্ডে বড় মাপের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা থাকতে পারে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির। এই প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ইনপুটও বিশ্লেষণ করা হবে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি শঙ্কা করছে, সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে এবং বিমানবন্দর-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার ছক কষা হতে পারে।

অমিত শাহ এই বিষয়ে পূর্বেও জানিয়েছেন, “দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা কোনও রকম আপস করবো না। প্রতিটি সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

সীমান্তে নজরদারি ও প্রযুক্তির ব্যবহার

BSF-এর মাধ্যমে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ড্রোন নজরদারি, থার্মাল ইমেজিং, নাইট ভিশন ক্যামেরা এবং সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়েও আজকের বৈঠকে বিশদ আলোচনা হবে। জম্মু ও পাঞ্জাব সীমান্তে কয়েকটি জায়গায় বেআইনি অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা চিহ্নিত হওয়ায়, সেই জায়গাগুলিতে অতিরিক্ত নজরদারির কথা ভাবছে সরকার।

সীমান্তের গ্রামগুলিতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নজরদারি বাড়াতে বলা হতে পারে BSF-কে। কোনও সন্দেহভাজন গতিবিধি দেখা গেলে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য স্থানীয় পুলিশ, রাজ্য প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার বিষয়েও আলোচনা হবে বলে জানা যাচ্ছে।

বিমানবন্দর নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগত উন্নয়ন

CISF সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ বিমানবন্দরগুলিতে স্ক্যানিং সিস্টেমে আপগ্রেড এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-ভিত্তিক নজরদারি প্রযুক্তি বসানো হচ্ছে। এছাড়া, যাত্রীদের ব্যাগ ও দেহ তল্লাশির সময়ে নিরাপত্তা কর্মীদের আরও প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।

বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলিতে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে এবং বিদেশি নাগরিকদের চলাচলের উপর নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে।

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বার্তা

এই বৈঠক থেকে স্পষ্ট, কেন্দ্র সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং প্রতিটি বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য বার্তা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, নিরাপত্তার কোনও দিকেই যেন ফাঁক না থাকে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই বৈঠকের পর প্রতিটি বাহিনীকে নতুন করে নির্দেশিকা জারি করা হবে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের কথাও ভাবা হচ্ছে।

অপারেশন সিন্ধু এবং পাকিস্তানের পাল্টা হামলার জেরে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের নাগরিকদের আশ্বস্ত করবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। দেশের নিরাপত্তা যে সরকার ও বাহিনীগুলির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, তা আজকের এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকেই স্পষ্ট।

Bharat: Amit Shah calls emergency security meeting to review border and airport security amid India-Pakistan tensions post ‘Operation Sindhu’. BSF, CISF chiefs to attend. Focus on Punjab, J&K, airport security.

Advertisements