India Pakistan conflict: বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক উত্তেজনাপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তির ক্রমাগত বিস্তার এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে গোটা উপমহাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। বিশেষত, ভারতের সামরিক জবাবে পাকিস্তানের ড্রোন, মিসাইল এবং যুদ্ধবিমান ধ্বংস হওয়ার ঘটনাগুলি ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান এবং উদ্বেগ একেবারেই স্বাভাবিক।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বহুদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা। পাকিস্তান সীমান্তে ড্রোন এবং মিসাইল পাঠিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চেয়েছিল, কিন্তু ভারতের জবাবে পাক ফোর্সের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে পাকিস্তানি এফ-১৬ এবং এফ-১৭ যুদ্ধবিমান। এই দৃঢ় জবাবে ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে যেমন বিশ্ব অবহিত হয়েছে, তেমনি আশেপাশের ছোট দেশগুলোতেও এক ধরনের ভয় এবং সতর্কতা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রশাসন এই পরিস্থিতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ সামরিক এবং নিরাপত্তা কর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা, আকাশপথের নজরদারি এবং সম্ভাব্য সাইবার হুমকি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বর্তমান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে কোনো তৃতীয় পক্ষ যাতে সন্ত্রাস বা যুদ্ধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হতে পারে, তার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ভয় অনেকাংশে যৌক্তিক। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে কখনো কখনো ছোট দেশগুলিকে বড় শক্তির সংঘর্ষের মধ্যে পড়তে হয়। বাংলাদেশের ভূ-অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত থাকার কারণে। ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব যদি সীমান্ত ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে বাংলাদেশও প্রভাবিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের উচিত নিরপেক্ষ এবং কৌশলী অবস্থান গ্রহণ করা, যাতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজের অবস্থানকে দৃঢ় রাখতে পারে।
এছাড়াও, এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। দেশের আকাশসীমা সুরক্ষিত রাখার জন্য রাডার, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম এবং সামরিক প্রযুক্তি হালনাগাদ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে, জাতীয় নিরাপত্তা নীতি পুনর্বিবেচনার দাবিও উঠেছে।
বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেও একটি উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। অনেকেই সরকারের দৃঢ় অবস্থানের প্রশংসা করছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন, বৃহৎ শক্তিগুলোর সংঘর্ষ থেকে দূরে থাকাই ভালো।
সর্বোপরি, ভারতের শক্তিশালী জবাব শুধু পাকিস্তানের জন্যই বার্তা নয়, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি সতর্ক সংকেত। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে কৌশলীভাবে, শান্তিপূর্ণ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখে চলতে হবে। নিরাপত্তা, কূটনীতি এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন—এই তিনটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করেই বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।