‘পাকিস্তান যুদ্ধ বেছে নিয়েছে’- ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসায় সেহওয়াগ-সিন্ধু

Operation Sindoor response: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে যুদ্ধ বেছে নেওয়ার জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের কাছে…

Operation Sindoor, Virender Sehwag,PV Sindhu

Operation Sindoor response: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহওয়াগ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে যুদ্ধ বেছে নেওয়ার জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের কাছে “চুপ থাকার সুযোগ” ছিল, কিন্তু তারা তাদের জঙ্গি সম্পদ বাঁচাতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান জম্মু এবং পশ্চিম সীমান্তের কাছে একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আকাশপথে হামলা চালায়, কিন্তু ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা সফলভাবে ব্যর্থ করে দেয়। এই হামলার জবাবে ভারতীয় বাহিনী প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালায়, যা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

৪৬ বছর বয়সী সেহওয়াগ সহ বেশ কয়েকজন ক্রীড়াবিদ সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানকে যুদ্ধের জন্য দায়ী করে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সেহওয়াগ এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) লিখেছেন, “পাকিস্তান যুদ্ধ বেছে নিয়েছে, যখন তাদের চুপ থাকার সুযোগ ছিল। তারা তাদের জঙ্গি সম্পদ বাঁচাতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে, যা তাদের চরিত্র সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। আমাদের বাহিনী সবচেয়ে উপযুক্তভাবে জবাব দেবে, এমনভাবে যা পাকিস্তান কখনও ভুলবে না।”

   

প্রাক্তন ভারতীয় পেসার বেঙ্কটেশ প্রসাদও সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানকে “দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র” বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “পাকিস্তান একটি সম্পূর্ণ দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র। ভারত তাদের এমনভাবে শিক্ষা দেবে যা তারা কল্পনাও করতে পারে না।” এদিকে, দুইবারের অলিম্পিক পদকজয়ী ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধু ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাহস ও আত্মত্যাগের প্রশংসা করেছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাহসী নারী-পুরুষদের প্রতি—আপনাদের সাহস, শৃঙ্খলা এবং আত্মত্যাগ আমাদের জাতির প্রাণ। অপারেশন সিন্দুরের মতো মুহূর্তে আমরা আপনাদের নীরব শক্তি এবং নিঃস্বার্থ সেবার কথা স্মরণ করি, যা আমাদের তেরঙা পতাকাকে উঁচুতে রাখে। ভারত আপনাদের সঙ্গে আছে। জয় হিন্দ।”

অপারেশন সিন্দুর এবং পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পটভূমিতে গত ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল মিসাইল হামলা চালায়। এই হামলা পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিল ২৬ জন নিরীহ মানুষের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়। ভারত দাবি করেছে, তাদের হামলা জৈশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলোর উপর কেন্দ্রীভূত ছিল। এর জবাবে পাকিস্তান বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের একাধিক স্থানে—জম্মু, শ্রীনগর, পাঠানকোট, আমৃতসর, লুধিয়ানা, চণ্ডীগড়, ফালোদি, উত্তরলাই এবং ভুজ—ড্রোন এবং মিসাইল দিয়ে হামলার চেষ্টা করে। তবে, ভারতের এস-৪০০ সুদর্শন চক্র এবং ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এই হামলাগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।

পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা জম্মু, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকায় ব্ল্যাকআউট এবং সাইরেনের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের বাড়ির মধ্যে থাকার এবং সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। জরুরি প্রোটোকল সক্রিয় করা হয়েছে, এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে ধরমশালায় পাঞ্জাব কিংস এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ আইপিএল ২০২৫ ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে।

ভারতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ

পাকিস্তানের হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তানের লাহোর, মুলতান, সারগোধা এবং ফয়সালাবাদে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। ভারতীয় নৌবাহিনী করাচি বন্দরে ধ্বংসাত্মক হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক জীবনরেখাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সূত্রের খবর, এই হামলায় বন্দরের অবকাঠামো এবং জাহাজগুলো ধ্বংস হয়েছে। ভারত পাকিস্তানের এফ-১৬, দুটি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান এবং একটি এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম (এডব্লিউএসিএস) ভূপাতিত করেছে। এছাড়াও, জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুর, জয়সলমের এবং পুঞ্চে ড্রোন হামলা ব্যর্থ করা হয়েছে।

জনমত এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “ভারতীয় সেনা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে আমাদের গর্বকে উঁচুতে তুলেছে। জয় হিন্দ!” তবে, সীমান্তবর্তী এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জম্মু ও কাশ্মীরে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও উত্তেজনা হ্রাসের জন্য আর্জি করেছেন। তবে, ভারত দ্বিপাক্ষিক সমস্যায় তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যান করেছে।

পাকিস্তানের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের জবাবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী তাদের সাহস এবং দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বীরেন্দ্র সেহওয়াগ, পিভি সিন্ধু এবং বেঙ্কটেশ প্রসাদের মতো ক্রীড়াবিদদের সমর্থন জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তবে, এই সংঘাত দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে আরও বড় সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক সমাধান এখন সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর এই সাফল্য জাতির গর্ব, তবে শান্তি পুনরুদ্ধারই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।

Advertisements