পাকিস্তানের চার শহর লাহোর-মুলতান-সারগোধা-ফয়সালাবাদে এয়ার ডিফেন্স ধ্বংস করল ভারত

বৃহস্পতিবার ভারত অপারেশন সিঁদুরে (Operation Sindoor) পাকিস্তানের লাহোর, মুলতান, সারগোধা এবং ফয়সালাবাদে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। যা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে আরও তীব্র…

India Strikes Pakistan's Air Defence Systems in Lahore, Multan, Sargodha, Faisalabad Amid Rising Border Tensions

বৃহস্পতিবার ভারত অপারেশন সিঁদুরে (Operation Sindoor) পাকিস্তানের লাহোর, মুলতান, সারগোধা এবং ফয়সালাবাদে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। যা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে আরও তীব্র করেছে। এর আগে, পাকিস্তান ভারতের একাধিক স্থানে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা ব্যর্থ করে দেয়। সামরিক কর্মকর্তাদের মতে, পাকিস্তান বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের পশ্চিম সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে ড্রোন এবং মিসাইল দিয়ে হামলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সফল হয়নি। পাকিস্তান জম্মু, পাঠানকোট এবং উধমপুরের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানি ড্রোনগুলোকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে এবং হামলার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।

পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ: প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটি—যেমন আওয়ান্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, আমৃতসর, কপুরথালা, জালন্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাটিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই এবং ভুজ—এ ড্রোন এবং মিসাইল দিয়ে হামলার চেষ্টা করেছিল। এই হামলাগুলো ভারতের ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস (আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম) গ্রিড এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা নিষ্ক্রিয় করা হয়। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই হামলার ধ্বংসাবশেষ বর্তমানে একাধিক স্থান থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে, যা পাকিস্তানের হামলার প্রমাণ বহন করে।”

   

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তানের একাধিক স্থানে বিমান প্রতিরক্ষা রাডার এবং ব্যবস্থার উপর নির্ভুল হামলা চালায় এবং লাহোরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা “নিষ্ক্রিয়” করে। সূত্রের খবর, ভারত ইসরায়েল-নির্মিত হারপ ড্রোন এবং এস-৪০০ সুদর্শন চক্র ব্যবহার করে পাকিস্তানের চীন-নির্মিত এইচকিউ-৯ মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ইউনিটগুলোকে আঘাত করে, যা লাহোরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে প্রতিরক্ষাহীন করে দেয়।

অপারেশন সিঁদুর এবং পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া

পাকিস্তানের এই হামলার চেষ্টা ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরিপ্রেক্ষিতে এসেছে, যেখানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বুধবার ভোরে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) এবং পাকিস্তানের নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালায়। এই হামলাগুলো পাহালগামে গত ২২ এপ্রিল ২৬ জন পর্যটকের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়েছিল। ভারত দাবি করেছে, তাদের হামলা জৈশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলোর উপর কেন্দ্রীভূত ছিল এবং কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়নি।

পাকিস্তান অবশ্য দাবি করেছে যে ভারতের হামলায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, এবং তারা ভারতের এই পদক্ষেপকে “যুদ্ধের কাজ” হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, “এই কাপুরুষোচিত আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হবে।” পাকিস্তান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের এই “অন্যায় আগ্রাসন” নিয়ে অভিযোগ তুলেছে এবং বলেছে যে তারা প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রাখে।

ভারতের প্রতিরক্ষা ও প্রতিক্রিয়া

ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে এস-৪০০ সুদর্শন চক্র এবং ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড, পাকিস্তানের ড্রোন এবং মিসাইল হামলা নিষ্ক্রিয় করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “ভারতের এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানের হামলাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ করে দিয়েছে। কোনো ক্ষতি হয়নি, ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত!”

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর বলেছেন, “ভারত পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চায় না, তবে আমাদের উপর সামরিক হামলা হলে তা অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা হবে।” ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানের হামলার সমান তীব্রতা এবং একই ডোমেইনে ছিল। মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী অ-উত্তেজনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে এটি সম্মান করতে হবে।”

পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি ও অভিযোগ

পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেছেন, তারা ভারতের ২৫টি ইসরায়েল-নির্মিত ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে কিছু করাচি এবং লাহোরে ধ্বংস করা হয়। তিনি বলেন, লাহোরের কাছে একটি ড্রোন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, যাতে চারজন সেনা আহত হয়। তবে, পাকিস্তান লাহোরে তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি অস্বীকার করেছে, দাবি করে যে ক্ষতি “নগণ্য” এবং সিস্টেমটি এখনও কার্যকর।

লাহোরে হামলার পর সেখানকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছে উচ্চ শব্দের বিস্ফোরণের পর সাইরেন বেজে ওঠে এবং মানুষ তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ছুটে আসে। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে, এবং সব হাসপাতাল ও চিকিৎসা কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সামরিক সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলে উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছেন। চীন, ইরান এবং সৌদি আরবও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে, তবে ভারত ঐতিহাসিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সমস্যায় তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

স্থানীয় প্রভাব ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্য পাঞ্জাব এবং রাজস্থানে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাঞ্জাবের ছয়টি সীমান্ত জেলায়—ফিরোজপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, আমৃতসর, গুরদাসপুর এবং তারন তারান—স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুল্লা, উড়ি, মেন্ধর এবং রাজৌরি সেক্টরে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে তিনজন মহিলা এবং পাঁচজন শিশু রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছে।

লাহোর, মুলতান, সারগোধা এবং ফয়সালাবাদে পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে ভারত তার সামরিক সক্ষমতা এবং দৃঢ় প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। পাকিস্তানের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করা এবং প্রতিশোধমূলক হামলা ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দক্ষতার প্রমাণ। তবে, এই ঘটনা দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাতের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর এই সাফল্য জাতীয় গর্বের বিষয়, তবে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং উত্তেজনা হ্রাস করা এখন সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাওয়া উচিত।

Advertisements