ভারতের সীমান্ত রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর এবং পঞ্জাবে (punjab) পাকিস্তানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন ডিজিপি এসপি বৈদ জানিয়েছেন, “আজ সন্ধ্যা ৮:২০-এর পর জম্মু, উধমপুর, রাজৌরি, পাঠানকোট, সাম্বা এবং আখনুরে প্রায় ৫০-৬০টি বিমান হামলার চেষ্টা হয়েছে। এই সমস্ত হামলা প্রতিহত করা হয়েছে এবং নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আমাদের দুর্ভেদ্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অভিনন্দন।”
পঞ্জাবের (punjab) ভাটিন্ডায় কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সকল বাসিন্দাকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সতর্কতা হিসেবে ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সশস্ত্র বাহিনী আমাদের আকাশ ও সীমান্ত নিরন্তর পর্যবেক্ষণ করছে এবং দক্ষতার সঙ্গে রক্ষা করছে। উপযুক্ত স্ব-সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। কোনো আশ্বাসের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।”
হামলা ও প্রতিরক্ষা
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭-৮ মে রাতে পাকিস্তান উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলার চেষ্টা করে। এই লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল জম্মু, উধমপুর, রাজৌরি, পাঠানকোট, সাম্বা, আখনুর, শ্রীনগর, আমৃতসর, জলন্ধর, লুধিয়ানা, বাথিন্ডা, চণ্ডীগড়, জয়সলমের, পোখরান এবং ভুজ।
তবে, ভারতের ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ‘সুদর্শন চক্র’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলাগুলো নিষ্ক্রিয় করে। প্রাক্তন ডিজিপি এসপি বৈদের মতে, প্রায় ৫০-৬০টি হামলার চেষ্টা সন্ধ্যা ৮:২০-এর পর থেকে প্রতিহত করা হয়েছে, যা ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা প্রমাণ করে। হামলার ধ্বংসাবশেষ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে, যা পাকিস্তানের আক্রমণের প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
পঞ্জাবে ব্ল্যাকআউট ও নিরাপত্তা (punjab)
পঞ্জাবের (punjab) ভাটিন্ডায় সতর্কতামূলক ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের ঘরে থাকার এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্বা, আখনুর, পুঞ্চ, পাঠানকোট, গুরুদাসপুর, হোশিয়ারপুর, ফরিদকোট, জোধপুর, জয়সলমের এবং বারমেরেও ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে।
এই ব্যবস্থা পাকিস্তানের ড্রোন হামলার সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় গ্রহণ করা হয়েছে। পঞ্জাবের ছয়টি সীমান্ত জেলা—ফিরোজপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, আমৃতসর, গুরুদাসপুর এবং তর্ন তরণে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপট
এই হামলাগুলো ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটেছে, যেখানে ৭ মে ভোরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই অভিযান ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়।
অপারেশনে জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। পাকিস্তান এই হামলার জবাবে ভারতের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে, যা ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ব্যর্থ হয়।
জয়সলমেরের কাছে ধ্বংস হওয়া জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের পাকিস্তানি পাইলট বন্দি
ভারতের পাল্টা হামলা
পাকিস্তানের হামলার জবাবে ভারত ৮ মে সকালে লাহোরে পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের একাধিক স্থানে বিমান প্রতিরক্ষা রাডার এবং ব্যবস্থায় হামলা চালায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ভারতের প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানের আক্রমণের সমান তীব্রতায় এবং একই ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়েছে। লাহোরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।”
জনজীবনে প্রভাব
জম্মু ও কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবে (punjab) ব্ল্যাকআউট এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতের ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫৯ জন আহত হয়েছেন। রাজৌরি জেলার সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা গোলাবর্ষণের কারণে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন, তবে বৃহস্পতিবার সকালে তারা ফিরতে শুরু করেছেন। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের ২১টি বিমানবন্দর ১০ মে পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘ উভয় দেশকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে কথা বলেছেন। লাহোরে মার্কিন কনস্যুলেট তাদের কর্মীদের নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
পাকিস্তানের (punjab) ৫০-৬০টি বিমান হামলা প্রতিহত করা ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শক্তি প্রদর্শন করে। বাথিন্ডায় ব্ল্যাকআউট এবং সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জনজীবনে প্রভাব ফেললেও, সরকার আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতা এবং উভয় দেশের সংযম জরুরি।