সিঁদুর মানে সতীত্ব’, অপারেশন সিঁদুরে ধর্মরক্ষার আহ্বান যোগীর

পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত নারকীয় হামলার পর গোটা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শোক, ক্ষোভ এবং প্রতিশোধের আগুন। পাকিস্তানি জঙ্গিরা ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে…

Operation Sindoor ,Yogi Adityanath,terrorism,Indian surgical strike, India retaliation against Pakistan

পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত নারকীয় হামলার পর গোটা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শোক, ক্ষোভ এবং প্রতিশোধের আগুন। পাকিস্তানি জঙ্গিরা ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু নারী-পুরুষ। সিঁথির সিঁদুর মুছে গিয়েছিল বহু ঘরে। ঠিক তখনই ভারতীয় সেনা ও কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পনা করে এক প্রতিশোধমূলক অপারেশন – যার নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor)।

মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতীয় সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার নিখুঁত সমন্বয়ে চালানো হয় এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মোট ৯টি স্থানে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় শতাধিক জেহাদি নিহত হয়েছে এই অভিযানে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্যও এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে।

   

এই অপারেশনকে ঘিরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কড়া বার্তা, “যারা ভারতীয় মেয়েদের সিঁদুরে হাত দেবে, তাদের পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে।” তিনি স্পষ্ট বলেন, এই অপারেশন শুধুমাত্র একটি সামরিক অভিযান নয়, এটি একটি প্রতীক – ভারতের নারীদের সম্মান রক্ষার শপথ।
অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের সদর দফতর, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের ঘাঁটি। এই পুরো অপারেশনটি রাতভর নজরদারিতে রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২৫ মিনিট ধরে এই টার্গেটেড অ্যাটাক চালানো হয়, যা গোটা বিশ্বের নজর কাড়ে।

এই ঘটনার পাশাপাশি ৭ মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে গোটা দেশে একটি অসামরিক মহড়া (মক ড্রিল) অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ২৭টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ২৫৯টি স্থানে এই মহড়া পরিচালিত হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল উত্তরপ্রদেশ। এই মহড়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন ও প্রস্তুত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়।

লখনউয়ে মহড়ায় অংশগ্রহণ করে মুখ্যমন্ত্রী যোগী বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা হল আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। কেউ যদি ভারত মাতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তার ফল ভয়ংকর হবে। দেশকে রক্ষা করা আমাদের যৌথ দায়িত্ব।” তিনি শুধু নিরাপত্তা বাহিনী নয়, এনসিসি, হোমগার্ড, স্কাউট এবং সাধারণ নাগরিকদেরও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

এই মক ড্রিল ও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, তিন বাহিনী এবং গোটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে উত্তরপ্রদেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান।

মহড়ার সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী সুরেশ খান্না, মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) সঞ্জয় প্রসাদ, ডিজিপি প্রশান্ত কুমার, এডিজি অমিতাভ যশ, লখনউ কমিশনার অমরেন্দ্র সিং সেঙ্গার, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিশাখা জি সহ আরও অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

অপারেশন সিঁদুর এখন শুধুই একটি সামরিক প্রতিক্রিয়া নয়, এটি হয়ে উঠেছে ভারতের বোনেদের সম্মানের প্রতীক এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এক দৃঢ় অবস্থানের বার্তা। যারা নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরায়, তাদের জন্য এই অপারেশন এক শক্তিশালী সাবধানবাণী।

Advertisements