অপারেশন সিঁদুরের পরদিনই সর্বদলীয় বৈঠক, ব্রিফিং কেন্দ্রের

Centre briefs on Op Sindoor নয়াদিল্লি: রাতের অন্ধকারে নিস্তব্ধতা ভেঙে সীমান্তের ওপারে রাফালের গর্জন। একে একে আঘাত হানল ২৪টি নির্ভুল মিসাইল। সময়ের কাঁটায় তখন মাত্র…

Centre briefs on Op Sindoor

Centre briefs on Op Sindoor

নয়াদিল্লি: রাতের অন্ধকারে নিস্তব্ধতা ভেঙে সীমান্তের ওপারে রাফালের গর্জন। একে একে আঘাত হানল ২৪টি নির্ভুল মিসাইল। সময়ের কাঁটায় তখন মাত্র ২৫ মিনিট—আর তার মধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেল পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ছড়িয়ে থাকা অন্তত নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’—যা কৌশলে সংযত, দায়িত্বশীল অথচ পরিণত প্রতিশোধ।

অপারেশনের বিস্তারিত চিত্র

এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দিল্লিতে ডাকা হয় সর্বদলীয় বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারা দেশের সব বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সামনে তুলে ধরেন এই অপারেশনের বিস্তারিত চিত্র। জানানো হয় অপারেশনের লক্ষ্য, কৌশলগত গুরুত্ব এবং সম্ভাব্য পাল্টা প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়ার ভারতের প্রস্তুতি।

   

অভিযানের প্রথম ধাক্কা লাগে সিয়ালকোটের সর্জাল ক্যাম্পে, এরপর একে একে নিশানায় আসে মেহমুনা জয়া, মুরিদকে’র মারকাজ তাইবা, বাহাওয়ালপুরের মারকাজ সুবহানাল্লাহ। পিওকে-তে টার্গেট করা হয় মুজাফফরাবাদের সাওয়াই নালা ও সাইয়েদনা বিলাল, কোটলির গুলপুর ও আব্বাস ক্যাম্প এবং ভিম্বরের বারনালা ঘাঁটি। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, অভিযান ছিল “প্রতিরোধমূলক, সুনির্দিষ্ট এবং নিরপেক্ষ”, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোর শিকড়ে আঘাত হানা।

সীমান্তে গোলাবর্ষণ অব্যাহত Centre briefs on Op Sindoor

বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হল—জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান আজহার মাসুদ স্বীকার করেছেন, এই হামলায় তার পরিবারের অন্তত দশজন সদস্য নিহত হয়েছেন। যদিও পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও আসেনি, সীমান্তে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই জম্মু ও কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনার শেলিংয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন নিরীহ নাগরিক।

এই অভিযান এমন এক সময়ে সংঘটিত হল, যখন দেশ পহেলগাঁও-এ নারকীয় জঙ্গি হামলার যন্ত্রণায় দগ্ধ৷ বৈসরণ উপত্যরায় জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬ জন নিরপরাধ মানুষ। ‘অপারেশন সিঁদুর’ সেই বর্বরতার সরাসরি জবাব বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। আর কৌশলগতভাবে এটি এক স্পষ্ট বার্তা—ভারত এখন আর সন্ত্রাস সহ্য করবে না, বরং আগেভাগেই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

সামরিক পরিমণ্ডল পেরিয়ে, এই অভিযানের প্রভাব পড়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক্সে (পূর্বতন টুইটার) লেখেন, “আমাদের সেনাবাহিনীর সুনিপুণতা ও সাহসিকতার ওপর গর্বিত। জয় হিন্দ!” অন্য বিরোধী নেতারাও সর্বসম্মতভাবে এই অভিযানের প্রশংসা করেছেন। দেশের প্রতিটি প্রান্তে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, চালানো হচ্ছে ব্ল্যাকআউট মহড়া, বাজানো হচ্ছে সতর্কতা সাইরেন।

আন্তর্জাতিক মঞ্চের প্রতিক্রিয়া

এদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেও প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই উত্তেজনা থামানো দরকার। আমি সাহায্য করতে প্রস্তুত।” এই মন্তব্যে কূটনৈতিক বার্তা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ইঙ্গিত।

সব মিলিয়ে, অপারেশন সিন্দুর শুধু একটি সামরিক পদক্ষেপ নয়—এ এক কৌশলগত বার্তা, রাজনৈতিক অবস্থান এবং একটি রাষ্ট্রের আত্মবিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। ভারত আজ শুধু সন্ত্রাসের শিকার নয়, বরং তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এক বলিষ্ঠ রাষ্ট্র। এবং এই বার্তাই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সীমান্তের ওপারে—অতন্দ্র প্রহরার ছায়ায়, নিরব নিশীথের ঘুম ভেঙে।

Bharat: India’s ‘Operation Sindoor’ destroys 9 terror camps in Pakistan & PoK in a swift missile strike. All-party meet held, border shelling continues. Jaish chief admits losses.

Advertisements