মৃত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পুলিশ সহ সেনা কর্মকর্তা, বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড়

পাকিস্তানে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে মৃত জঙ্গিদের (militants) শেষকৃত্যে পাকিস্তান পুলিশ, সেনা কর্মকর্তা এবং জঙ্গিরা একসঙ্গে অংশ নিয়েছেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল…

militants with pak army

পাকিস্তানে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে মৃত জঙ্গিদের (militants) শেষকৃত্যে পাকিস্তান পুলিশ, সেনা কর্মকর্তা এবং জঙ্গিরা একসঙ্গে অংশ নিয়েছেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ ভাইরাল হয়েছে, যা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রাক্তন ভারতীয় কূটনীতিক মঞ্জু সেঠ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং পাকিস্তানের সেনা ও আতঙ্কবাদীদের মধ্যে গভীর সংযোগের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

ভাইরাল ভিডিও ও জনরোষ

এক্স-এ প্রকাশিত একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তানের একটি শেষকৃত্যে পাকিস্তান সেনার কর্মকর্তারা জঙ্গিদের (militants) সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অংশ নিয়েছেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, মৃত জঙ্গিদের দেহ পাকিস্তানের জাতীয় পতাকায় মোড়া এবং সেখানে উপস্থিত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা শেষকৃত্যে শরিক হয়েছেন।

   

এই ঘটনা পাকিস্তানের সেনা ও জঙ্গিদের মধ্যে সরাসরি সংযোগের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “এটি পাকিস্তানের সত্যিকারের চেহারা। তারা জঙ্গিদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দিচ্ছে।”

এই ভিডিও ভারত জুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর। ২২ এপ্রিলের এই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, এবং ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে (টিআরএফ) দায়ী করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ভিডিওটি ভারতের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।

মঞ্জু সেঠের মন্তব্য

প্রাক্তন কূটনীতিক মঞ্জু সেঠ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “এই ভিডিও পাকিস্তানের দ্বৈত চরিত্রের প্রমাণ। একদিকে তারা আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে, অন্যদিকে তাদের সেনা ও পুলিশ জঙ্গিদের জানাজায় অংশ নিচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এটি কেবল পাকিস্তানের সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর জঙ্গিদের (militants) সঙ্গে সংযোগের প্রমাণ নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি সতর্কবার্তা। পাকিস্তানের এই আচরণ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইকে দুর্বল করছে।”

মঞ্জু সেঠ জোর দিয়ে বলেন, “এই ঘটনা রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য বিশ্ব শক্তির কাছে উত্থাপন করা উচিত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।” তিনি পাহালগাম হামলার (militants) প্রেক্ষাপটে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রশংসা করে বলেন, “ভারতের নির্ভুল হামলা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা। তবে এই ভিডিও দেখায় যে পাকিস্তান তার অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনছে না।”

সুযোগ সীমিত! মারুতি সুজুকি একাধিক মডেলের গাড়িতে ৬৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়

অপারেশন সিঁদুর ও পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৬-৭ মে রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করে পাকিস্তান ও পিওজেকে-র নয়টি জঙ্গি (militants) ঘাঁটি ধ্বংস করে। এই অভিযান পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়। অভিযানে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, সিয়ালকোট এবং পিওজেকে-র পাঁচটি লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল হামলা চালানো হয়। ভারতের এই পদক্ষেপের পর পাকিস্তান সেনা সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পুঞ্চ ও তাংধারে বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণ শুরু করে, যাতে ১৫ জন নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়।

পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে পুঞ্চের গুরুদ্বার শ্রী গুরু সিং সভা সাহিব ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেখানে তিনজন শিখ নাগরিক নিহত হন। এই ঘটনায় শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিং বাদল এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে ভাইরাল ভিডিওটি পাকিস্তানের দ্বৈত নীতির প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই ভিডিও প্রকাশের পর ভারতীয় কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ জোরদার করেছে। বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি বলেন, “পাকিস্তান তার মাটিতে জঙ্গি (militants) ঘাঁটি ধ্বংস করার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পাহালগাম হামলার নিন্দা করে ভারতের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে, পাকিস্তানের মিত্র চীন এই ঘটনায় পাকিস্তানের সমর্থন করেছে, যা ভারতের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

জনমত ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

ভারতে এই ভিডিও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “পাকিস্তান একটি সন্ত্রাসবাদী (militants) দেশ। তাদের সেনা ও পুলিশ জঙ্গিদের সমর্থন করছে।” হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তবে, মঞ্জু সেঠ সতর্ক করে বলেন, “এই মুহূর্তে সামরিক সংঘাত জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আমাদের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে।”

জঙ্গিদের জানাজায় পাকিস্তান সেনা ও পুলিশের অংশগ্রহণ পাকিস্তানের জঙ্গিদের প্রতি সমর্থনের সুস্পষ্ট প্রমাণ। এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। মঞ্জু সেঠের মন্তব্য এই ঘটনার গুরুত্ব তুলে ধরেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

পাকিস্তানের এই আচরণের বিরুদ্ধে ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং অপারেশন সিঁদুরের মতো পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করে। তবে, সীমান্তবর্তী এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।

Advertisements