মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়ে একটি জনসভায় অংশ নেন এবং জেলায় সাম্প্রতিক হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৮০টি পরিবারকে ১.২ লক্ষ টাকা করে চেক বিতরণ করেন। ধুলিয়ানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার অঙ্গীকার করে বলেন, “আমরা কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নই।
আমার একটাই ধর্ম
আমার একটাই ধর্ম—মানবতার ধর্ম। আমি ইসকন মন্দিরের জন্য ৭০০ একর জমি দিয়েছি। স্বামী বিবেকানন্দ ও সিস্টার নিবেদিতার নামে ঘর তৈরি করেছি। আমরা ৭ লক্ষেরও বেশি বাড়িতে জলের সংযোগ দিয়েছি।”
ঝন্টু আলি শেখের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ (mamata)
মুখ্যমন্ত্রী এই সফরে শহীদ সৈনিক ঝন্টু আলি শেখের শোকার্ত স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঝন্টু ২৪ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর জেলায় প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং জঙ্গিদের সাথে গুলি বিনিময়ে শহিদ হন। মমতা (mamata) তাঁর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন এবং তার স্ত্রী কে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। শামসেরগঞ্জে তিনি ঘোষণা করেন, মুর্শিদাবাদে ১৭৫টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হবে এবং ধুলিয়ান, ফরাক্কা ও সুতিতে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে নতুন উপ-বিভাগ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করে মমতা (mamata)কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “বিজেপির কথা শুনবেন না। আমি বাংলায় দাঙ্গা চাই না। যদি কেউ দাঙ্গায় জড়ায়, আমি তাকে সাহায্য করব না। ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে প্রতিবাদ করতে হলে দিল্লি যান। বাংলায় কারও অধিকার কেড়ে নিলে আমি তা রক্ষা করব।”
ভারতীয় ফুটবলের নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটিয়েছেন কোচ জামিল!
মমতা দাবি করেছিলেন
সোমবার মমতা (mamata) দাবি করেছিলেন, গত মাসে মুর্শিদাবাদে ভোটে যাওয়া হিংসা পরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক ছিল। বিজেপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বাংলা দাঙ্গা উস্কানিকারীদের সহ্য করবে না। আমি যখন কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম করি, তখন আমার কাছে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান সবাই সমান। আমি চাই না কোনো ধর্মের মানুষের উপর আক্রমণ হোক।
ঘটনার একদিনের মধ্যে জাতীয় মহিলা কমিশন এখানে চলে এসেছে। তারা মণিপুর, উত্তর প্রদেশ বা রাজস্থানে যায়নি। এই ঘটনা ষড়যন্ত্রমূলক এবং পরিকল্পিত। যারা এই সহিংসতা উস্কে দিয়েছে, বাংলা তাদের সহ্য করবে না।”
বিএসএফ কেন গুলি চালাল?
তিনি আরও বলেন, “বিএসএফ কেন গুলি চালাল? বিএসএফ গুলি না চালালে পরের দিন ঘটনা এতটা উত্তপ্ত হত না। আমি বিজেপিকে বলতে চাই, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির পরিবর্তে সীমান্তের নিরাপত্তার দিকে নজর দিন। ক্ষমতায় থাকলে মানুষকে বিভক্ত করা যায় না। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি, কিন্তু তাদের গোপনে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে? এর পিছনে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর ও বক্তব্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং প্রশাসনিক সক্রিয়তার উপর তাঁর দৃঢ় অবস্থানের প্রতিফলন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, বাংলায় সহিংসতা বা বিভাজনের রাজনীতির কোনো স্থান নেই। তাঁর এই পদক্ষেপ মুর্শিদাবাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য আর্থিক ও নৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি রাজ্যে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।