সদ্যসমাপ্ত মরসুমে দুর্দান্ত পারফর্ম করে নজর কেড়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস (Mohun Bagan SG)। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) টানা দ্বিতীয়বার লিগ শিল্ড জিতে নেওয়ার পাশাপাশি এবার মূল ট্রফিও নিজেদের ঘরে তুলেছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। দ্বি-মুকুট জয় করে যখন গোটা দল উদযাপনে মেতে, ঠিক তখনই এক অপ্রত্যাশিত খবরে অস্বস্তিতে পড়েছে ক্লাব এবং সমর্থকরা। ফিফার (FIFA) তরফে জাতীয় স্তরের (National level) ফুটবলার (Footballer) সই করানোর ক্ষেত্রে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মোহনবাগানের উপর।
এই নিষেধাজ্ঞার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলার জেসন কামিংস। ২০২৩ সালে এ লিগের ক্লাব সেন্ট্রাল কোস্ট মেরিনার্স থেকে কামিংসকে দলে নিয়েছিল মোহনবাগান। তখন পুরো ট্রান্সফার ফি পরিশোধ করেছিল ক্লাব। কিন্তু ফিফার মতে, কামিংসের প্রাক্তন ক্লাবের প্রশিক্ষণ ও সলিডারিটি পেমেন্ট বাবদ যে নির্দিষ্ট অর্থ দেওয়ার কথা ছিল, তা সময়মতো পরিশোধ করা হয়নি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই মোহনবাগানকে সাময়িকভাবে নতুন ফুটবলার সই করানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে।
সলিডারিটি পেমেন্ট আসলে এক ধরনের অর্থ যা ফুটবলারের আগের ক্লাব বা অ্যাকাডেমিকে দেওয়া হয়, কারণ তারা ফুটবলারকে গড়ে তোলে। ফুটবলার যখন অন্য ক্লাবে সই করে, তখন তার পুরনো ক্লাব সেই পেমেন্টের দাবি জানাতে পারে। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, এই অর্থ না দেওয়া হলে, নতুন ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। মোহনবাগানের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। জানা গিয়েছে, ১০ শতাংশ অর্থ না পাওয়ার অভিযোগে ফিফায় চিঠি জমা পড়ে, যার জেরেই এই নিষেধাজ্ঞা।
তবে মোহনবাগান দাবি করেছে, এই পেমেন্ট সংক্রান্ত সমস্যা কোনোভাবেই তাদের ইচ্ছাকৃত নয়। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত দুই বছর ধরে তারা একাধিকবার এই টাকা পাঠানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই ফিফার তরফে ‘error’ বার্তা এসেছে। অর্থাৎ ক্লাব জানত না, এই টাকা সঠিকভাবে কীভাবে পাঠানো উচিত। একাধিক চিঠি দিয়েও ফিফা থেকে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা না পাওয়ার কারণেই সময়মতো পেমেন্ট করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ এই নিষেধাজ্ঞা একটি টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে হয়েছে বলে দাবি ক্লাবের।
এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে মোহনবাগানের ম্যানেজমেন্ট নিয়ে। এত বড় একটি ক্লাব, যারা পরপর আইএসএল জয় করছে, তাদের ম্যানেজমেন্টে এমন ভুল কীভাবে সম্ভব? আবার অনেকেই বলছেন, যদি বিষয়টি শুধুই টেকনিক্যাল হয় এবং ক্লাব আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে সমস্যার সমাধানে, তাহলে বিষয়টিকে খুব বড় করে দেখার প্রয়োজন নেই।
ফিফার নিষেধাজ্ঞা আসলেও আপাতত তা সাময়িক। জাতীয় স্তরের ফুটবলারদের সই করানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, আন্তর্জাতিক ফুটবলার বা বিদেশি ফুটবলারদের ক্ষেত্রে নয়। তার উপর, ফুটবল মরশুম শেষ। এখনই নতুন খেলোয়াড় সই করানোর চূড়ান্ত সময় নয়। ফলে হাতে সময় রয়েছে মোহনবাগানের। ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে।