বিহারের সমস্তীপুরের ১৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার ভৈবব সূর্যবংশী (Vaibhav Suryavanshi) তার অসাধারণ ব্যাটিং দক্ষতার মাধ্যমে ক্রিকেট বিশ্বে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সম্প্রতি আইপিএল-এ রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৫ বলে শতরান করার কৃতিত্ব অর্জন করে তিনি সকলকে মুগ্ধ করেছেন। এই অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে ‘বিহারের সন্তান’ হিসেবে সম্বোধন করে প্রশংসায় ভূষিত করেছেন। রবিবার বিহারে খেলো ইন্ডিয়া যুব গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় মোদী ভৈববের কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই কিশোর ক্রিকেটারের সাফল্যের পিছনে রয়েছে তার একাগ্রতা এবং অক্লান্ত প্রচেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আইপিএল-এ বিহারের সন্তান ভৈবব সূর্যবংশীর অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখেছি। এত কম বয়সে ভৈবব এমন একটি দুর্দান্ত রেকর্ড গড়েছেন। তার এই পারফরম্যান্সের পিছনে রয়েছে প্রচুর পরিশ্রম।” তিনি আরও বলেন, ভৈববের সাফল্যের মূলে রয়েছে তার একনিষ্ঠ প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন স্তরে অসংখ্য ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতাই তাকে বড় মঞ্চে নির্ভীক ক্রিকেট খেলতে সক্ষম করেছে। মোদী তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যত বেশি ম্যাচ খেলবে, ততই তোমার প্রতিভা প্রকাশ পাবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা এবং নিজেকে প্রমাণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
মোদী জানান, এনডিএ সরকার সবসময় ক্রীড়াবিদদের সুযোগ প্রদানের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হল আমাদের ক্রীড়াবিদদের নতুন নতুন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া। এই কারণেই খেলো ইন্ডিয়া যুব গেমসে গাটকা, খো-খো, মলখাম্ভ এবং যোগাসনের মতো খেলাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ক্রীড়াবিদরা উশু, লন বলস, রোলার স্কেটিং-এর মতো নতুন খেলাগুলোতেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ক্রীড়া ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই নীতির মাধ্যমে আমরা ক্রীড়াকে মূলধারার শিক্ষার একটি অংশ করে তুলেছি। এর লক্ষ্য হল দেশে শুধু ভালো খেলোয়াড় নয়, পেশাদার ক্রীড়াবিদ তৈরি করা।” তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, ক্রীড়া কেবল শারীরিক দক্ষতাই বাড়ায় না, এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়। “ক্রীড়াক্ষেত্রে আমরা দলগত মনোভাব শিখি। আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার গুরুত্ব বুঝতে পারি,” তিনি যোগ করেন।
ভৈবব সূর্যবংশীর মতো তরুণ প্রতিভার উত্থান ভারতের ক্রীড়া ক্ষেত্রে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তার এই অর্জন কেবল বিহারের জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য গর্বের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা এবং সরকারের ক্রীড়া-বান্ধব নীতি তরুণ ক্রীড়াবিদদের আরও উৎসাহিত করবে বলে আশা করা যায়। ভৈববের এই সাফল্য অন্যান্য তরুণদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যারা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চায়। খেলো ইন্ডিয়া যুব গেমসের মতো উদ্যোগ তরুণ প্রতিভাদের জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম প্রদান করছে, যা ভারতকে ভবিষ্যতে ক্রীড়া জগতে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।