সন্তান বিতর্কে হিমন্তকে ফিরতি আঘাত গগৈয়ের

কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ (gogoi) শনিবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তিনি রাজ্যের শিশুদের জ্বলন্ত সমস্যা, যেমন স্কুলছুটের হার বৃদ্ধি,…

gogoi hits back in children controversy

কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ (gogoi) শনিবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তিনি রাজ্যের শিশুদের জ্বলন্ত সমস্যা, যেমন স্কুলছুটের হার বৃদ্ধি, শিশুশ্রম এবং সরকারি শিক্ষার ক্রমশ অবনতিশীল মানের দিকে মনোযোগ না দিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণে ব্যস্ত।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় গগৈ (gogoi) মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্যের জবাব দেন। শর্মা দাবি করেছিলেন, গগৈ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তাঁর সন্তান ভারতীয় নাগরিক, তবে তিনি পদত্যাগ করবেন। গগৈ এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি হিসেবে উড়িয়ে দিয়ে অসমের ভবিষ্যৎ—শিশুদের—প্রকৃত সংকটের দিকে মনোযোগ দেন।

   

গগৈ বলেন (gogoi)

গগৈ (gogoi) বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমার সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা তাঁর পছন্দ, তাঁর অধিকার। আমি অসমের শিশুদের কল্যাণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। আজ স্কুলছুটের হার বাড়ছে। শিশুদের দাসত্বের মতো পরিস্থিতিতে বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি স্কুলগুলোর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। শিশুরা এতটাই দরিদ্র যে তাদের শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে। কংগ্রেস দলের সদস্য হিসেবে আমি এই সমস্যাগুলো সমাধানের দায়িত্ব নিচ্ছি।”

কংগ্রেস সাংসদ বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত বিষয়কে রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুলে বলেন, শাসন ও সামাজিক কল্যাণের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে এ ধরনের বিভ্রান্তি কোনো কাজে আসে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষা ও সামাজিক খাতের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধান না করে এ ধরনের বিষয়ে সময় নষ্ট করা উচিত নয়।

শর্মা গণমাধ্যমের সামনে দাবি করেন

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী শর্মা গণমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, “আমার কাছে প্রমাণ আছে যে গৌরব গগৈয়ের (gogoi) ছেলে ও মেয়ে ভারতীয় নাগরিক নয়। আমরা তদন্ত করছি তিনি পাকিস্তানে ১৫ দিন কী করেছিলেন। পাকিস্তানে কোনো পর্যটন স্থান নেই, সেটি শুধু সন্ত্রাসীদের আড্ডা। এটা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন, কিন্তু ১৫ দিন ধরে কী করেছিলেন? রবার্ট ভাদ্রা এবং গৌরব গগৈ ভারতের চেয়ে পাকিস্তান নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।”

গৌরব গগৈ (gogoi) পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং জাতীয় নিরাপত্তায় ভারত সরকারের অবস্থান নিয়েও মত প্রকাশ করেন। সন্ত্রাসবাদ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে তিনি নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে দৃঢ় কূটনৈতিক জবাবের প্রতি সমর্থন জানান।

আমরা চাই এই সরকার পাকিস্তানকে কঠিন ও যোগ্য জবাব দিক

তিনি বলেন, “আমরা চাই এই সরকার পাকিস্তানকে কঠিন ও যোগ্য জবাব দিক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী যে কোনো উদ্যোগ নেবেন, আমরা তা সমর্থন করি।” তবে তিনি বিজেপির উপর অভিযোগ তুলে বলেন, “কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে তারা তাদের ক্ষোভ ও হতাশা বিরোধীদের উপর ঝাড়ছে। এটি এখন দেশের প্রয়োজন নয়।”

এই মন্তব্য অসমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তীব্র রাজনৈতিক কার্যকলাপের মধ্যে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীর গগৈয়ের পরিবারের উপর মন্তব্য দলীয় সীমানা পেরিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কংগ্রেস এটিকে “হতাশাজনক ব্যক্তিগত আক্রমণ” হিসেবে আখ্যায়িত করে।

অসমের শিশুদের সমস্যার প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা

গগৈয়ের (gogoi) বক্তব্য অসমের শিশুদের সমস্যার প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা এবং রাজ্যের শিক্ষা ও সামাজিক কল্যাণ খাতে সরকারের ব্যর্থতার উপর আলোকপাত করে। তিনি বলেন, “অসমের শিশুদের ভবিষ্যৎ আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলছুট শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে, শিশুশ্রম একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং সরকারি স্কুলগুলোর অবকাঠামো ও শিক্ষার মান ক্রমশ নিম্নগামী। এই সমস্যাগুলো সমাধানে আমি কাজ করে যাব।”

মুখ্যমন্ত্রী শর্মার মন্তব্য গগৈয়ের ব্যক্তিগত জীবনকে লক্ষ্য করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তবে গগৈ এই আক্রমণকে উপেক্ষা করে জনকল্যাণমূলক ইস্যুগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিজেপি ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে রাজনীতি করছে, কিন্তু আমি অসমের জনগণের সমস্যা সমাধানে মনোযোগী।”

অস্ত্র ভাণ্ডারে ঘাটতি, ভারতের সাথে যুদ্ধ হলে কতক্ষন টিকবে পাকিস্তান

আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে আছি

পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে গগৈয়ের বক্তব্য ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি তাঁর দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করে। তিনি বলেন, “পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে আছি।” তবে তিনি বিজেপির উপর অভিযোগ তুলে বলেন, “জাতীয় ইস্যুকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর।”

অসমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এই রাজনৈতিক তরজা তীব্রতর হয়েছে। শর্মার মন্তব্য এবং গগৈয়ের প্রতিক্রিয়া রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কংগ্রেস দল এই আক্রমণকে বিজেপির হতাশার প্রকাশ হিসেবে দেখছে এবং জনকল্যাণের ইস্যুতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

গগৈয়ের (gogoi) বক্তব্য অসমের শিশুদের সমস্যার প্রতি স্পষ্ট ফোকাস এবং রাজনৈতিক বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। তিনি বলেন, “আমি অসমের জনগণের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর। শিশুদের শিক্ষা ও কল্যাণ আমার অগ্রাধিকার।” এই বক্তব্য রাজ্যের জনগণের মধ্যে তাঁর অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।