নরেন্দ্র মোদী (modi) অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রপতি জোয়াও ম্যানুয়েল গোনকালভেস লরেনকোর সঙ্গে নয়াদিল্লিতে একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন । এই সাক্ষাৎ ভারত ও অ্যাঙ্গোলার মধ্যে ৪০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক উদযাপন এবং ভারত-আফ্রিকা সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সারাংশ এই রকম।
ঐতিহাসিক সম্পর্কের উল্লেখ
মোদী (modi) বলেন, ভারত ও অ্যাঙ্গোলার সম্পর্ক ৪০ বছরের কূটনৈতিক বন্ধনের চেয়েও গভীর। অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারত পূর্ণ সমর্থন ও বন্ধুত্বের সঙ্গে তাদের পাশে ছিল। এই ঐতিহাসিক বন্ধন দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করেছে।
উন্নয়ন সহযোগিতা
মোদী (modi) জানান, ভারত অ্যাঙ্গোলার সঙ্গে ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার, মহাকাশ প্রযুক্তি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা ভাগ করে নেবে। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা, হীরা প্রক্রিয়াকরণ, সার এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তিনি অ্যাঙ্গোলার উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতার প্রতি জোর দেন।
‘আত্মঘাতী হামলার জন্য প্রস্তুত’ বলে পাকিস্তানকে নিশানা সংখ্যালঘু মন্ত্রীর
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান
মোদী (modi) সন্ত্রাসবাদ এবং এর সমর্থকদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি পাকিস্তানের নাম না করে সীমান্তের ওপারের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে অ্যাঙ্গোলার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। এটি ভারত-অ্যাঙ্গোলা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, বিশেষ করে পহেলগাঁও হামলার পরিপ্রেক্ষিতে।
ভারত-আফ্রিকা সম্পর্কের প্রসার (modi)
মোদী উল্লেখ করেন, অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রপতির ভারত সফর শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কই নয়, ভারত-আফ্রিকা অংশীদারিত্বকেও নতুন গতি ও শক্তি প্রদান করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে অ্যাঙ্গোলার নেতৃত্বে ভারত এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
দুর্যোগে সহযোগিতা
মোদী বলেন, যে কোনো দুর্যোগে ভারত আফ্রিকার জনগণের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘প্রথম প্রতিক্রিয়াশীল’ হিসেবে কাজ করার সৌভাগ্য লাভ করেছে। এটি ভারতের আফ্রিকার প্রতি দায়বদ্ধতা এবং সংহতির প্রতীক।
ভারত-অ্যাঙ্গোলা সম্পর্কের প্রেক্ষাপট
এই সাংবাদিক সম্মেলনটি অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রপতির ৩৮ বছর পর ভারতে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ ছিল। মোদী (modi) এবং রাষ্ট্রপতি লরেনকোর মধ্যে হায়দরাবাদ হাউসে বৈঠকটি ভারত-অ্যাঙ্গোলা সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি ভারত-আফ্রিকা সম্পর্কের বিস্তৃত কাঠামোর উপর গুরুত্ব দেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও রাষ্ট্রপতি লরেনকোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেন, এই সফর ভারত-অ্যাঙ্গোলা এবং ভারত-আফ্রিকা সম্পর্কের নতুন পথ উন্মোচন করবে।
আফ্রিকার প্রতি মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি
যদিও এই বক্তব্যটি অ্যাঙ্গোলায় দেওয়া হয়নি, তবে এটি আফ্রিকার প্রতি মোদীর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অতীতে, যেমন ২০১৮ সালে উগান্ডার পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে, মোদী আফ্রিকার উন্নয়ন, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতার উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সংযোগ, যেমন উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াই এবং মহাত্মা গান্ধীর আফ্রিকায় কাটানো সময়ের কথা উল্লেখ করেন।
মোদী আফ্রিকাকে ভারতের অগ্রাধিকারের শীর্ষে রাখেন এবং স্বচ্ছ, সমতা-ভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি আফ্রিকার কৃষি সম্ভাবনা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং ডিজিটাল বিপ্লবের সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার কথা বলেন। তিনি আরও জানান, ভারত আফ্রিকার সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে এবং সাইবার নিরাপত্তা ও সমুদ্র নিরাপত্তায় সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পহেলগাঁও হামলার প্রেক্ষাপট
মোদীর বক্তব্যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের বর্তমান অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি অ্যাঙ্গোলার সমর্থনকে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ভারত সন্ত্রাসী ও তাদের সমর্থকদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেবে। এটি ভারতের বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি জোর দেয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য ভারত-অ্যাঙ্গোলা সম্পর্কের গভীরতা এবং ভারত-আফ্রিকা অংশীদারিত্বের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। তিনি উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং দুর্যোগে সহযোগিতার মাধ্যমে আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। অ্যাঙ্গোলায় সরাসরি কোনো ভাষণ না থাকলেও, এই বক্তব্য আফ্রিকার প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভারতের বৈশ্বিক ভূমিকার প্রতিফলন ঘটায়।