সীমান্তে উত্তেজনার আবহ, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam attack 2025) পরে সারা দেশে যখন চিন্তার মেঘ। ঠিক তখনই এক টুকরো গর্ব আর খুশির খবর নিয়ে এল শিলিগুড়ির (Siliguri) মেয়ে প্রতীতি পাল (Pratiti Paul)। কাঠমান্ডুতে আয়োজিত সাউথ এশিয়ান (South Asia) ইউথ টেবল টেনিস (Table Tennis) চ্যাম্পিয়নশিপে চার-চারটি সোনা জিতে ভারতকে (India) এনে দিল অনন্য সম্মান।
গত ২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত নেপালের কাঠমান্ডু শহরে আয়োজিত হয়েছিল এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। অংশ নিয়েছিল ছয়টি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ— ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপ। এই প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৯ বিভাগে মোট ৮৫ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে। অনূর্ধ্ব-১৫ বিভাগে ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করে প্রতীতি পাল দেখিয়ে দিল, মন দিয়ে পরিশ্রম করলে বয়স কোনো বাধা নয়।
শিলিগুড়ির টেবল টেনিস অ্যাকাডেমির ছাত্রী প্রতীতি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় অনূর্ধ্ব-১৫ বিভাগে। প্রতিযোগিতায় সে জয় করে মোট চারটি সোনা— দলগত, ডাবলস, মিক্সড ডাবলস এবং সিঙ্গলস বিভাগে। দলগত বিভাগে প্রতীতি ও তার ভারতীয় দল শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সোনা জয় করে। ডাবলস বিভাগে আরুষী নন্দীর সঙ্গে জুটি বেঁধে নেপালকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রতীতি জেতে দ্বিতীয় সোনা। মিক্সড ডাবলসে প্রতীতি জুটি বাঁধে অর্থভা নবরঙ্গির সঙ্গে। এই বিভাগে পাকিস্তানকে তারা ৩-০ তে হারিয়ে ভারতের সম্মান রক্ষা করে। একক বিভাগে প্রতীতি তার সঙ্গিনী আরুষী নন্দীকেই ৩-১ ব্যবধানে পরাজিত করে জয় করে চতুর্থ সোনা।
প্রতীতির এই অসাধারণ সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তার পরিবার, কোচ ও গোটা শিলিগুড়ি শহর। প্রতিবেশীরাও তাকে শুভেচ্ছা জানাতে ভিড় করেন। তার কোচ জানিয়েছেন, প্রতীতি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত নিষ্ঠাবান, পরিশ্রমী এবং খেলার প্রতি নিবেদিত। এই সাফল্য সম্পর্কে প্রতীতি নিজেই জানিয়েছে, “ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে চারটি সোনা জিতে আমি গর্বিত। এখন আমার লক্ষ্য অলিম্পিকে দেশের হয়ে সোনা জেতা। সেই লক্ষ্যে আমি কঠোর পরিশ্রম করে যাব।”
এই প্রতিযোগিতায় ভারত মোট ১৩টি সোনার পদক জিতেছে, যার মধ্যে একাই ৪টি সোনা এনে দিয়েছে প্রতীতি। তার এই সাফল্য প্রমাণ করে, দেশের মাটিতে ট্যালেন্টের অভাব নেই— শুধু দরকার সঠিক প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও উৎসাহ। প্রতীতি পাল আজ শুধু শিলিগুড়ির নয়, গোটা ভারতের গর্ব। এই অনবদ্য সাফল্য ক্রীড়াজগতে এক নতুন তারকার জন্ম দিল— প্রতীতি পাল, যার চোখে এখন অলিম্পিক সোনার স্বপ্ন।