Pakistan LoC firing Kashmir
নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, উরি এবং আখনুর সেক্টরে ফের উত্তেজনা। বুধবার রাতেও বিনা প্ররোচনায় নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC)-র ওপার থেকে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান। টানা সপ্তম রাতের মতো সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করল ইসলামাবাদ৷ এমনটাই জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
সূত্রের খবর, পাকিস্তানের গুলিবর্ষণের জবাবে ভারতীয় সেনা সতর্ক ও নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়া জানায়। পাল্টা হামলায় কী ধরনের সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
উরি-কুপওয়ারা উত্তপ্ত, এবার গোলাবর্ষণ আন্তর্জাতিক সীমান্তেও
এখনও পর্যন্ত সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন সীমাবদ্ধ ছিল কেবল LoC-তে। তবে পরিস্থিতির নতুন মোড় নেয় মঙ্গলবার রাতে, যখন পাকিস্তানি সেনা জম্মুর পারগওয়াল সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর গুলিবর্ষণ করে। এর পরই এলাকা জুড়ে অতিরিক্ত বিএসএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সীমান্তে অবস্থানরত ভারতীয় সেনা আধিকারিকরা প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে ডিজিএমও-কে (DGMO) গোটা পরিস্থিতির একটি বিশদ রিপোর্টও দেন।
DGMO স্তরে আলোচনার পরেও চলল গোলাবর্ষণ Pakistan LoC firing Kashmir
মঙ্গলবার DGMO স্তরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হটলাইন সংযোগে আলোচনা হয়। ভারতের তরফে বারবার বলা হয়, পাকিস্তান যেন সংঘর্ষবিরতির নিয়ম লঙ্ঘন না করে। কিন্তু আলোচনার পরের দিনই ফের হামলা—যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও চরমে নিয়ে গেল।
২০২১ সালের সমঝোতা ভেঙে পড়ছে?
২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, দুই দেশের সেনাবাহিনী ২০০৩ সালের সংঘর্ষবিরতির চুক্তি নতুন করে মান্যতা দেওয়ার ঘোষণা করেছিল। গত সপ্তাহ পর্যন্ত সেই সমঝোতা মোটামুটি কার্যকর থাকলেও, পহেলগাঁও-এ ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার পর থেকেই ফের পুরনো পথে ফিরছে পাকিস্তান।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন নিরপরাধ নাগরিকের মৃত্যু হয়। ভারত দাবি করেছে, এই হামলার সঙ্গে পাক-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সরাসরি যোগ রয়েছে।
“সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা”: প্রধানমন্ত্রীর কড়া বার্তা
পহেলগাঁও হামলার পরের দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিরক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সরকারি সূত্র জানায়, সেখানে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, “সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে—কার্যপদ্ধতি, লক্ষ্যবস্তু ও সময় নির্বাচন, সবই তাদের উপর নির্ভর করবে।”
তিনি আরও বলেন, “এটা শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, এটা দেশের সংকল্প—সন্ত্রাসবাদকে চূড়ান্তভাবে মুছে ফেলতেই হবে।”
পাল্টা পদক্ষেপে ভারত, জবাবে কড়া ইসলামাবাদ
পাহলগাম হামলার পর ভারত বেশ কয়েকটি কড়া সিদ্ধান্ত নেয়৷ ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত, আটারি সীমান্ত দিয়ে যাত্রী ও পণ্য চলাচল বন্ধ, দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনমন ইত্যাদি৷ পাকিস্তানও পাল্টা জবাবে নিজেদের আকাশপথ ভারতের জন্য বন্ধ করে দেয় এবং সব রকম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করে দেয়—এমনকি তৃতীয় দেশের মাধ্যমে হওয়া ট্রেডও।
ইসলামাবাদ এও ঘোষণা করে, “ভারত যদি ইন্দাস নদীর জল আটকে দেয়, তাহলে আমরা তাকে যুদ্ধের ঘোষণা হিসেবেই ধরব।”
নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে একের পর এক সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন, পাশাপাশি কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার আশঙ্কা বাড়ছে৷ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনকার ‘নিম্ন মাত্রার সংঘাত’ (Low-intensity conflict) যে কোনো সময় উচ্চ মাত্রার সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে, যদি কূটনৈতিক স্তরে স্থিতি ফেরানো না যায়।
Bharat: Fresh tensions in Kashmir’s Kupwara, Uri, Akhnoor sectors as Pakistan violates ceasefire for the seventh consecutive night along LoC. Firing extends to international border in Jammu. Despite DGMO talks, violations continue, jeopardizing 2021 agreement post-Pahalgam attack.