প্রযুক্তির লড়াই! পাকিস্তানি বিমানের নেভিগেশন গুঁড়িয়ে দিতে জ্যামার লাগাল ভারত

India deploys jammers ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে কাশ্মীরের পাহেলগাঁও-এ ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আরও কড়া মোড়…

Operation Sindoor: Indian Navy Was Ready to Strike Karachi Port, Says Vice Admiral A.N. Pramod

India deploys jammers

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে কাশ্মীরের পাহেলগাঁও-এ ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আরও কড়া মোড় নিয়েছে। কূটনৈতিক চাপের সঙ্গে যোগ হয়েছে সামরিক কৌশল — পশ্চিম সীমান্তে ভারত মোতায়েন করেছে অত্যাধুনিক জ্যামিং সিস্টেম, যার প্রধান লক্ষ্য পাকিস্তানের সামরিক প্রযুক্তি নির্ভরতা ভেঙে দেওয়া।

সূত্র বলছে, ভারতীয় এই জ্যামার সিস্টেম একযোগে জিপিএস (যুক্তরাষ্ট্র), গ্লোনাস (রাশিয়া) ও বেইদৌ (চিন)-সহ একাধিক উপগ্রহ-নির্ভর গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (GNSS)-এর সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সংযোগ ব্যাহত করতে পারে।

   

 কীভাবে কাজ করে এই জ্যামিং সিস্টেম?

জ্যামার মূলত শক্তিশালী রেডিও সিগন্যাল নির্গত করে, যা উপগ্রহ থেকে নির্দিষ্ট যন্ত্রে (যেমন যুদ্ধবিমান বা ড্রোনে) পাঠানো জিএনএসএস তথ্যকে বিকৃত বা বিঘ্নিত করে। এর ফলে—

*যুদ্ধবিমানের নেভিগেশন ভুলপথে যায়

*টার্গেটিং সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করে না

*প্রিসিশন গাইডেড মিসাইল বা স্মার্ট বোমার সফলতা কমে যায়

*রিয়েল-টাইম সিচুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস বিঘ্নিত হয়।

এই জ্যামিং কার্যত ‘নিরব যুদ্ধ’ — যা সরাসরি গুলি নয়, কিন্তু শত্রুপক্ষের প্রযুক্তিগত নির্ভরতায় কৌশলগত ছেদ ফেলে।

আকাশপথ বন্ধ: কূটনৈতিক চাপের দ্বিতীয় স্তর India deploys jammers

ভারতের আরেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ — ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত ভারতের আকাশপথে পাকিস্তানি রেজিস্টার্ড সব বিমান প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা কমার্শিয়াল ফ্লাইট এবং মিলিটারি অপারেশন—উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য।

এই ঘোষণা আসে ঠিক তখনই, যখন পাকিস্তানি বিমান সংস্থাগুলি ভারতীয় প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ফ্লাইট রিরাউট করতে শুরু করেছিল। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জারি করা হয় NOTAM (Notice to Airmen)।

 পাকিস্তানের আর্থিক চাপ বাড়ছে

পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (PIA)-এর ফ্লাইটের একটি বড় অংশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত, যেখানে যেতে এখন চিন বা শ্রীলঙ্কার আকাশপথ ঘুরে যেতে হবে। এতে—

*প্রতিটি ফ্লাইটের সময় ১–২ ঘণ্টা বাড়বে

*জ্বালানির খরচ ও ক্রুদের দায়িত্বকাল বাড়বে

Advertisements

*ঘন ঘন ফ্লাইট চালানো সম্ভব হবে না, অর্থাৎ ফ্রিকোয়েন্সি কমাতে হবে

PIA-এর বহরে যেখানে মাত্র ৩২টি বিমান, সেখানে ভারতের ইন্ডিগো-এয়ার ইন্ডিয়া মিলিয়ে চালু রয়েছে ৫৭০টিরও বেশি বিমান—যাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার কোনও প্রভাব পড়বে না।

প্রতিরোধ থেকে প্রতিশোধের কৌশল: ভারতের ধাপে ধাপে পদক্ষেপ

ভারত শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক স্তরেও চাপ বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারত—

*ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত করেছে,

*পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে,

*পাঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে।

জ্যামিং সিস্টেম মোতায়েন তাই এর পরবর্তী ধাপ — যেখানে ভারত কোনও গুলির লড়াই নয়, প্রযুক্তির ভাষায় চেপে ধরছে পাকিস্তানকে।

 বিশ্লেষণ: প্রযুক্তির যুদ্ধে কে এগিয়ে?

বিশ্বব্যাপী আধুনিক যুদ্ধ এখন আর কেবল অস্ত্রের নয় — এটি তথ্য, প্রযুক্তি ও কৌশলগত প্রতিক্রিয়ার সংঘাত। যেখানে জ্যামিং, স্যাটেলাইট ব্লাইন্ডিং, সাইবার হস্তক্ষেপ বড় ভূমিকা নেয়।

এই প্রেক্ষাপটে ভারত GNSS জ্যামিং সিস্টেম মোতায়েন করে শুধু প্রতিক্রিয়া জানায়নি, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রি-এম্পটিভ ডিফেন্স লাইন তৈরি করেছে।

এই পদক্ষেপ সরাসরি কোনও যুদ্ধ ঘোষণা নয়, তবে সিগন্যাল স্পষ্ট — ভারতের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং কৌশলগত ধৈর্য এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত। আর পাকিস্তানের সামনে সময় এখন শুধু প্রতিক্রিয়া জানানোর নয়, নিজেদের রণনীতিও পুনর্বিবেচনার।

Bharat: Escalating India-Pakistan tensions after Kashmir attack. India deploys advanced jamming systems on western border to disrupt Pakistan’s military tech, targeting GPS, GLONASS, BeiDou. Know how this silent warfare impacts navigation and targeting. India also bans Pakistani aircraft.