পাকিস্তানের (pakistan) প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সমর্থন ও অর্থায়নের ইতিহাসের স্বীকারোক্তিকে ভারত “দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র” হিসেবে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রকাশ্য প্রমাণ হিসেবে অভিহিত করেছে। ভারতের মতে, এই স্বীকারোক্তি পাকিস্তানের বিশ্বব্যাপি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করা এবং এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার প্রবণতাকে উন্মোচিত করে।
যোজনা প্যাটেলের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘে ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি, রাষ্ট্রদূত যোজনা প্যাটেল, সোমবার জাতিসংঘের কাউন্টার-টেররিজম অফিসের ‘ভিক্টিমস অফ টেররিজম অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্ক’ এর হাইব্রিড উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান। এই অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রতিনিধি জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার উল্লেখ করলে প্যাটেল “রাইট অফ রিপ্লাই” প্রদান করেন।
প্যাটেল বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক যে একটি নির্দিষ্ট প্রতিনিধি দল এই মঞ্চকে অপব্যবহার করে ভারতের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলতে বেছে নিয়েছে।” তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন যে পাকিস্তানের (pakistan) প্রতিরক্ষামন্ত্রীর স্বীকারোক্তি দেশটির সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংযোগের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
নাগরিকত্ব যাচাইয়ে আধার-প্যান বাতিল, দিল্লি পুলিশের নির্দেশ
পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা
পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা, যাতে ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে, তা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এই অঞ্চলের সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাগুলির মধ্যে একটি। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রতিনিধির মন্তব্য ভারতের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। প্যাটেল স্পষ্ট করেন যে এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র সত্যকে বিকৃত করে না, বরং সন্ত্রাসবাদের শিকারদের জন্য ন্যায়বিচারের প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে।
খাজা আসিফের স্বীকারোক্তি (pakistan)
পাকিস্তানের (pakistan) প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের স্বীকারোক্তি ভারত-পাকিস্তান (pakistan) সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলিকে আশ্রয় ও অর্থ সরবরাহ করে। প্যাটেলের বক্তব্যে এই অভিযোগকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের (pakistan) এই ধরনের কার্যকলাপ শুধুমাত্র এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও বিপদ।”
পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
রাষ্ট্রসংঘের এই মঞ্চে ভারতের এই কঠোর অবস্থান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পাকিস্তানের (pakistan) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্যাটেল জোর দিয়ে বলেন যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনো দেশের দ্বৈত নীতি গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি সন্ত্রাসবাদের শিকারদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা হওয়া উচিত সন্ত্রাসবাদের শিকড় উৎপাটন করা এবং শিকারদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।”
এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পহেলগাঁও হামলার পর ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা বাতিল করেছে, যার মধ্যে মেডিকেল ভিসার বৈধতা ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রতিনিধির মন্তব্য এবং ভারতের প্রতিক্রিয়া দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দূরত্বকে আরও স্পষ্ট করে।
ভারতের এই অবস্থানের তাৎপর্য
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের এই অবস্থান পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াতে পারে। প্যাটেলের বক্তব্যে স্পষ্ট যে ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে এবং এই বিষয়ে কোনো আপস করতে প্রস্তুত নয়। তিনি বলেন, “পাকিস্তানকে তার দায়িত্ব স্বীকার করতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এই ঘটনা রাষ্ট্রসংঘের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা এখন আরও জোরালোভাবে উঠে এসেছে। ভারতের এই কঠোর অবস্থান ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক নীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।