দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন যখন সর্বোচ্চ চরমে, তখন তার নিষ্ঠুরতম প্রভাব পড়ল এক অসহায় পরিবারের উপর। ভিসা বাতিলের জেরে মায়ের কোলে (Pakistan Girl and Boy) ফিরে না-যাওয়ার বেদনায় অশ্রুসজল চোখে পাকিস্তানে ফিরে গেল দুই শিশু—১১ বছরের জৈনব ও ৮ বছরের জানিশ।
রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ছিন্ন হল পারিবারিক সম্পর্ক
পহেলগাঁওয়ে (Pakistan Girl and Boy) সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠে গোটা দেশ। কেন্দ্রীয় সরকার সাত দফায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘প্রত্যাঘাত’ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই অংশ হিসেবে ২৭ এপ্রিল থেকে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলের (Pakistan Girl and Boy) ঘোষণা করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। নির্দেশ জারি হয়, ভারতের মাটিতে থাকা সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিককে অবিলম্বে দেশত্যাগ করতে হবে।
এই সিদ্ধান্তের জেরেই দিল্লি থেকে পাকিস্তানে ফিরে যেতে বাধ্য হয় জৈনব ও জানিশ। কিন্তু তাঁদের মা একজন ভারতীয় নাগরিক (Pakistan Girl and Boy) । তাই তিনি আর তাঁদের সঙ্গে ফিরতে পারেননি। মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুই ভাই-বোন, যা তাদের শৈশবের সবচেয়ে নির্মম স্মৃতি হয়ে রইল।
মাকে ছেড়ে যেতে নারাজ সন্তানেরা (Pakistan Girl and Boy)
জানিশ কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে, “আমি মাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না।” তার মুখে কোনও রাজনৈতিক ভাষা নেই, কেবল কান্না আর অসহায়তা। জৈনব আরও পরিণত, কিন্তু তার কণ্ঠেও স্পষ্ট দুঃখ—“আমার বুক ভেঙে যাচ্ছে! মাকে ছেড়ে থাকা খুব কঠিন।”
জৈনব ব্যাখ্যা করে, “আমরা দিল্লিতে এসেছিলাম দিদাকে দেখতে, মা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু এখন আমরা ফিরছি, মাকে ছেড়ে। কারণ মা ভারতীয় আর আমরা পাকিস্তানি।” এই কথাগুলো শুধু একটি শিশুর নয়, বরং দুই দেশের সীমান্তের কাঁটাতারের নিষ্ঠুর সত্যের প্রতিচ্ছবি।
সম্পর্কের উপরে রাষ্ট্রীয় নিয়মের জাল
দিল্লিতে মায়ের (Pakistan Girl and Boy) মামাবাড়িতে এসেছিল জৈনব ও জানিশ। এক মাস আগে অসুস্থ দিদার জন্য পাকিস্তান থেকে এসেছিল তারা। ভিসা থাকার দরুন কোনও সমস্যা হয়নি তখন। কিন্তু হঠাৎ করে পরিস্থিতি বদলে যায়। একদিকে পাকিস্তানি (Pakistan Girl and Boy) নাগরিকদের ভারতের ভিসা বাতিল, অন্যদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও ভারতীয় নাগরিক পাকিস্তানে যেতে পারবেন না। এমনকি পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়দেরও দ্রুত দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই জটিল পরিস্থিতিতে জৈনব ও জানিশের (Pakistan Girl and Boy) মা কিছুতেই সন্তানদের সঙ্গে পাকিস্তানে যেতে পারলেন না। ফলে সন্তানদের মায়ের কোলে ফেরা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াল।
রাজনীতির মাঝখানে ছোট্ট শৈশবের আঘাত
এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের দুঃখ নয়, বরং এটি দুই দেশের মধ্যে রাজনীতির (Pakistan Girl and Boy) সরাসরি প্রভাব কিভাবে নিরীহ মানুষের জীবনকে ক্ষত-বিক্ষত করে, তার একটি মর্মান্তিক উদাহরণ। ছোট্ট শিশুদের মনে এই বিভাজনের যন্ত্রণা হয়তো সারাজীবন রয়ে যাবে।
এই পরিস্থিতিতে বহু পাকিস্তানি নাগরিক ইতিমধ্যে ভারত ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। আবার অনেক ভারতীয় নাগরিকও যারা পাকিস্তানে রয়েছেন, তাদের দ্রুত ফিরে আসার নির্দেশ জারি হয়েছে। কিন্তু এভাবে মা ও সন্তানের (Pakistan Girl and Boy) সম্পর্ক কাগজের পাসপোর্ট আর ভিসার নিয়মে ভেঙে পড়বে, এমনকী কেউ ভাবতেও পারেননি।
মানবিকতা কি রাজনীতির ঊর্ধ্বে নয়? শিশুদের কান্না, মায়ের অসহায়তা—এই গল্প যেন কাঁটাতারের এক নির্মম বাস্তব, যা বারবার মনে করিয়ে দেয়, জাতির সীমা থাকলেও ভালোবাসার কোনও সীমানা নেই।
এই ঘটনা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়—শুধু নিরাপত্তা নয়, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে মানবিকতার স্থান কোথায়?