বিরোধীদের ক্ষোভে বৈসারানে সেনা অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা কেন্দ্রের

Center Explains Absence of Security Forces in Baisaran Amid Opposition Criticism বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসারানে (baisaran) জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নাগরিক নিহত…

amit shah meeting regarding baisaran

Center Explains Absence of Security Forces in Baisaran Amid Opposition Criticism

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসারানে (baisaran) জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় সর্বদলীয় বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর তীক্ষ্ণ প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধী দল গুলির বক্তব্ব্য জঙ্গি অধ্যুষিত এলাকা সত্ত্বেও ঘটনার দিন বৈসারানে সেনাবাহিনী ছিলনা কেন।

   

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের ডাকা এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরকারের একাধিক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ঘোষণার এক দিন পর। এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক সম্পর্কের মান নামিয়ে আনা, পাকিস্তানি সামরিক অ্যাটাশেদের বহিষ্কার, ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা এবং আটারি স্থল-ট্রানজিট পয়েন্ট বন্ধ করা।

বিরোধীদের প্রধান প্রশ্ন

বৈঠকে বিরোধীদের প্রধান প্রশ্ন কেন্দ্রীভূত ছিল পহেলগাঁওয়ের কাছে বৈসারান (baisaran) নামক পর্যটন কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর অনুপস্থিতি নিয়ে, যেখানে এই নৃশংস হামলা করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন, এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়গে, আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিং সহ আরও অনেকে তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছেন। বিরোধীরা জানতে চেয়েছেন, হামলার জায়গায় কেন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন ছিল না।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে, বৈসারান (baisaran) এলাকাটি সাধারণত জুন মাসে শুরু হওয়া বার্ষিক অমরনাথ যাত্রার আগে নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত করা হয়। সেই সময়ে এই রুটটি আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয় এবং অমরনাথ গুহা মন্দিরের পথে বাইসারানে বিশ্রাম নেওয়া তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

সরকারের দাবি, স্থানীয় ট্যুর অপারেটররা ২০ এপ্রিল থেকে পর্যটকদের এই অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া শুরু করেছিল, যা যাত্রার মরশুমের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপনের অনেক আগে। বৈঠকে সরকারের প্রতিনিধিরা জোর দিয়ে বলেছেন যে, স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পর্যটকদের এই প্রাথমিক পরিদর্শনের কোনো তথ্য ছিল না, ফলে সেখানে সৈন্য মোতায়েন করা হয়নি।

অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে PhonePe ও এয়ারটেল পেমেন্টস ব্যাংকে আকর্ষণীয় অফার! জানুন বিস্তারিত

বিরোধীদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন (baisaran)

বিরোধীদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল, ভারতের যখন পর্যাপ্ত জল সংরক্ষণ ক্ষমতার অভাব রয়েছে, তখন কেন কেন্দ্র সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করল। এর জবাবে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপটি তাৎক্ষণিক ফলাফলের জন্য নয়, বরং একটি প্রতীকী ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত । সরকারের বক্তব্য, “চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অভিপ্রায় দেখানোর জন্য। এটি একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি ভবিষ্যতে সরকারের অবস্থান কী হবে, তাও স্পষ্ট করে।”

বৈঠকের শুরুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। গোয়েন্দা ব্যুরোর ডিরেক্টর তপন ডেকা ২০ মিনিটের একটি উপস্থাপনা দেন, যাতে পাহলগাম হামলার ক্রম, গোয়েন্দা তথ্য এবং ঘটনার পরে নেওয়া পদক্ষেপগুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে বিস্তৃত রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ দেখা গেছে। খড়গে এবং গান্ধী ছাড়াও, বিজেপি সভাপতি এবং রাজ্যসভার সদন নেতা জে পি নাড্ডা উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন সুপ্রিয়া সুলে (এনসিপি-এসপি), প্রফুল পটেল (এনসিপি), সস্মিত পাত্র (বিজেডি), শ্রীকান্ত শিন্ডে (শিবসেনা), প্রেমচন্দ গুপ্তা (আরজেডি), তিরুচি শিবা (ডিএমকে) এবং রাম গোপাল যাদব (এসপি)।

বিরোধীদের সমালোচনা এবং সরকারের অবস্থান

বিরোধী দলগুলি বৈসারানে নিরাপত্তার ঘাটতিকে গোয়েন্দা ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের গতিবিধি সম্পর্কে অজ্ঞ থাকতে পারে। তিনি আরও জানতে চেয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা রোধে ভবিষ্যতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মল্লিকার্জুন খড়গে বলেন, “পহেলগাঁওয়ের (baisaran) মতো সংবেদনশীল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই ধরনের ব্যর্থতা অগ্রহণযোগ্য। সরকারের উচিত জনগণের কাছে স্পষ্ট জবাব দেওয়া।”

সঞ্জয় সিং সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তের ব্যবহারিক দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন(baisaran)। তিনি বলেন, “যদি জল সংরক্ষণের ক্ষমতা না থাকে, তাহলে এই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকর হবে? এটি কি শুধুই রাজনৈতিক কৌশল ?” সরকারের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হয়েছে যে, পহেলগাঁও হামলার পর তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। তবে, বিরোধীরা সরকারের ব্যাখ্যায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়নি এবং আরও স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছে।

পহেলগাঁও (baisaran) জঙ্গি হামলা ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কূটনৈতিক নীতির উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সর্বদলীয় বৈঠকে বিরোধীদের তীক্ষ্ণ প্রশ্ন এবং সরকারের জবাব এই ঘটনার গুরুত্ব এবং জটিলতাকে তুলে ধরেছে। বৈসারানে নিরাপত্তার ঘাটতি এবং সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতকরণের মতো পদক্ষেপগুলি আগামী দিনে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। সরকারের প্রতিশ্রুতি এবং বিরোধীদের সমালোচনার মধ্যে জনগণ এখন আরও কার্যকর এবং স্বচ্ছ পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছে।