মহাসমাবেশে উত্তাল করুণাময়ী, প্রশ্নের মুখে প্রশাসন

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) (SSC protest) অফিসের সামনে উত্তাল বিক্ষোভে মুখর করুণাময়ী চত্বর। সোমবার রাতভর আন্দোলন চালিয়ে গেলেন চাকরিহারা প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি একটাই—যোগ্য ও অযোগ্য…

SSC Controversy: Dismissed Teachers Demand Justice in Karunamoyee Protest

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) (SSC protest) অফিসের সামনে উত্তাল বিক্ষোভে মুখর করুণাময়ী চত্বর। সোমবার রাতভর আন্দোলন চালিয়ে গেলেন চাকরিহারা প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি একটাই—যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের (SSC protest)  তালিকা প্রকাশ করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থেকে, প্রতিশ্রুতি শুনে শুনে ক্লান্ত হয়ে এবার তাঁরা রাস্তায় বসে পড়েছেন।

ভোরের আলো ফুটলেও কমেনি তাঁদের প্রতিবাদের তেজ। “উই ওয়ান্ট জাস্টিস”, “হোক কলরব”—এই ধরনের স্লোগানে গর্জে উঠেছে গোটা এলাকা। মহিলারা, তরুণ-তরুণীরা, (SSC protest) এমনকি বয়স্করাও যোগ দিয়েছেন এই বিক্ষোভে। একটি চাকরি পাওয়ার আশায় যে লড়াই তাঁরা শুরু করেছেন, তা আজ শুধুই চাকরি নয়, তাঁদের অস্তিত্বের লড়াই হয়ে উঠেছে।

   

সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ এক অদ্ভুত দৃশ্য নজরে আসে। এক ব্যক্তি হাতে চায়ের ফ্লাস্ক ও মাটির ভাঁড় নিয়ে এগিয়ে যান এসএসসি ভবনের দিকে। আন্দোলনরতদের চোখে পড়তেই প্রশ্ন উঠেছে—চেয়ারম্যান কি তবে ভিতরে আরামে চা খাচ্ছেন, যখন বাইরে রাস্তায় শতাধিক চাকরিপ্রার্থী সারারাত ঠান্ডা, ক্লান্তি আর ক্ষোভ নিয়ে অপেক্ষা করছেন?

এক আন্দোলনকারী প্রার্থী (SSC protest) , “আমরা সারা রাত জেগে রাস্তায় বসে আছি, আর ভিতরে চেয়ারম্যান ঘুমোচ্ছেন, চা খাচ্ছেন। কেউ আমাদের কষ্ট বুঝতেই চাইছে না।”

আন্দোলনের মধ্যে একাধিকবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটেছে। এক মহিলা প্রার্থী জানান, “পুলিশ আমাদের গুঁতো মারছে। আমরা মারামারি করতে শিখিনি, আমরা পড়াশোনা করে এখানে এসেছি। আমরা চাই ন্যায়বিচার।”

পাল্টা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমাদের মহিলা পুলিশ এখানে রয়েছে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালান, আমরা সহযোগিতা করব।”

Advertisements

তবে পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এখন আর এই আন্দোলন(SSC protest) শুধুমাত্র নিয়োগের প্রশ্নে সীমাবদ্ধ নেই। এটা হয়ে উঠেছে এক অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। এক প্রার্থী বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা চলছে। আমাদের জীবন থেমে গিয়েছে। এইভাবে দিনের পর দিন রাস্তায় বসে থাকতে হবে, তা কখনও ভাবিনি।”

রাতভর বিভিন্ন সময় স্লোগানের ধরণ বদলেছে, কখনও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে সরকার ও প্রশাসনের দিকে, কখনও গান ও কবিতায় প্রতিবাদ প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যেই কেউ কেউ চা বিলি করছেন, কেউ ব্যানার আঁকছেন, কেউ চোখে চোখ রেখে বলছেন—“এই লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সরব না।”

এই প্রতিবাদ কবে অবসান ঘটবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে একটা জিনিস স্পষ্ট—এই চাকরিহারা (SSC protest) যুবক-যুবতীরা তাঁদের আত্মসম্মান রক্ষার লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। তাঁদের চোখে ঘুম নেই, কিন্তু সাহস আর দৃঢ়তা ঠিকরে বেরোচ্ছে।

আর একবার সেই পুরনো প্রশ্ন উঠে আসে—এই প্রতিভা, এই পরিশ্রম, এই লড়াই কি শুধু ফাঁকা প্রতিশ্রুতিতে থেমে যাবে? না কি সত্যিই জবাব দেবে প্রশাসন?