কোহলির সঙ্গে প্রীতি জিনটার মিষ্টি মুহূর্ত ভাইরাল

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ২০২৫-এর ‘রিভেঞ্জ উইক’-এ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) রবিবার, ২০ এপ্রিল, মুল্লানপুরে পাঞ্জাব কিংসকে (পিবিকেএস) ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছে। এ…

Virat Kohli Shares Heartfelt Moment With Preity Zinta After RCB's Dominant Win Over PBKS

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ২০২৫-এর ‘রিভেঞ্জ উইক’-এ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) রবিবার, ২০ এপ্রিল, মুল্লানপুরে পাঞ্জাব কিংসকে (পিবিকেএস) ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছে। এ ই ম্যাচে আরসিবি সব বিভাগেই পিবিকেএস-কে ছাপিয়ে গেছে, যা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুই পয়েন্ট এনে দিয়েছে। প্রথমে বোলিংয়ে আরসিবি পিবিকেএস-কে ২০ ওভারে ১৫৭/৬ রানে আটকে দেয়, যেখানে ক্রুণাল পান্ডিয়া এবং সুয়াশ শর্মা দুটি করে উইকেট নেন। এরপর রজত পটীদারের নেতৃত্বে আরসিবি বিরাট কোহলির (Virat Kohli) অপরাজিত ৭৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের সৌজন্যে সহজেই লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নেয়।

ম্যাচের পর একটি হৃদয় ছোঁয়া দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ে, যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। আরসিবি’র তারকা বিরাট কোহলি পিবিকেএস-এর সহ-মালিক এবং বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিন্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায়, দুজনে একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন এবং হাসিমুখে কথোপকথনে মগ্ন। এই মুহূর্ত ক্রীড়াঙ্গনের ভদ্রতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছে। পিবিকেএস-এর বড় পরাজয় সত্ত্বেও প্রীতি জিন্টা হাসিমুখে কোহলির সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকে অভিনন্দন জানান, যা ভক্তদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।

   

সামাজিক মাধ্যমে এই সাক্ষাতের ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভক্তরা এই মুহূর্তকে “আইপিএল-এর আসল চেতনা”, “শ্রেণিবিভাগের প্রতীক” এবং “হৃদয় জয় করা” বলে অভিহিত করেছেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোহলি তার ফোনে প্রীতির কাছে তার সন্তান ভামিকা এবং আকায়ের ছবি দেখাচ্ছেন, এবং প্রীতি হাসিমুখে সেগুলো দেখছেন। এই স্নিগ্ধ মুহূর্ত ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করেছে।

ম্যাচে কোহলির পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। তিনি ৫৪ বলে অপরাজিত ৭৩ রান করেন, যেখানে দেবদত্ত পদিক্কলের সঙ্গে ১০৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। পদিক্কল ৩৫ বলে ৬১ রান করে আউট হন। এই জয়ের মাধ্যমে কোহলি ডেভিড ওয়ার্নারের আইপিএল-এ সর্বাধিক ৫০-প্লাস স্কোরের রেকর্ড ভেঙেছেন। কোহলির এখন ৬৭টি ৫০-প্লাস স্কোর রয়েছে (৫১টি ফিফটি এবং ৬টি সেঞ্চুরি), যেখানে ওয়ার্নারের ছিল ৬৬টি।

পিবিকেএস-এর অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ম্যাচের পর তাদের ব্যাটিং বিভাগের দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান প্রথম বল থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে চায়, কিন্তু আমরা প্রথমে ব্যাট করার সময় উইকেট মূল্যায়নে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা ভালো শুরু পেলেও তা কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা এমন একটি স্কোর করতে পারিনি, যা আমরা ডিফেন্ড করতে পারতাম। তবে ইতিবাচক দিক হলো, আমরা দুর্দান্ত শুরু পেয়েছি, এবং আমাদের বোলাররা দুর্দান্ত কাজ করছে।”

এই ম্যাচে আরসিবি’র বোলিং ইউনিটও প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। ক্রুণাল পান্ডিয়া এবং সুয়াশ শর্মার নেতৃত্বে বোলাররা পিবিকেএস-এর ব্যাটিং লাইনআপকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। বিশেষ করে মিডল ওভারে তারা পিবিকেএস-এর রানের গতি কমিয়ে দেয়, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অন্যদিকে, পিবিকেএস-এর বোলাররা শুরুতে ভালো পারফর্ম করলেও কোহলি এবং পদিক্কলের জুটির সামনে তাদের কোনো উপায় ছিল না।

প্রীতি জিন্টার ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি আবেগ এবং তার দলের প্রতি সমর্থন সবসময়ই ভক্তদের কাছে আলোচনার বিষয়। তিনি মুল্লানপুর স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন এবং ম্যাচ শেষে কোহলির সঙ্গে তার হৃদয় ছোঁয়া মুহূর্ত ভক্তদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। প্রীতি আগেও কোহলির মাঠের আগ্রাসন এবং তার পরিবারপ্রীতির প্রশংসা করেছেন। ২০২৪ সালে একটি প্রশ্নোত্তর সেশনে তিনি বলেছিলেন, “আমি তার মাঠের আগ্রাসন এবং জয়ের ইচ্ছা পছন্দ করি। তার পরিবারের প্রতি ভালোবাসা এবং নাচের ভঙ্গিমাও আমার পছন্দ। আইপিএল-এর শুরুতে তার অনেক নাচের ভঙ্গি দেখেছি।”

এই ঘটনা আইপিএল-এর প্রতিযোগিতার বাইরে ক্রিকেটার এবং দলের মালিকদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্পর্কের একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত। কোহলি, যিনি মাঠে তীব্রতার জন্য পরিচিত, মাঠের বাইরে তার নম্রতা এবং ভদ্রতা দিয়ে ভক্তদের মন জয় করেছেন। প্রীতি জিন্টার মতো একজন প্রিয় ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তার এই মিথস্ক্রিয়া ক্রিকেটের আবেগ এবং মানবিক দিকটিকে তুলে ধরেছে।

আইপিএল ২০২৫-এ আরসিবি’র এই জয় তাদের প্লে-অফের আশা আরও জোরদার করেছে। কোহলির ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং দলের সামগ্রিক প্রচেষ্টা তাদের শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অন্যদিকে, পিবিকেএস-এর জন্য এই পরাজয় তাদের ব্যাটিং কৌশল পুনর্বিবেচনার সুযোগ এনে দিয়েছে। আগামী ম্যাচগুলোতে তারা কীভাবে ফিরে আসে, তা দেখার জন্য ভক্তরা মুখিয়ে আছেন।

এই ম্যাচ এবং কোহলি-প্রীতির মুহূর্ত ক্রিকেটের বাইরেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এটি ক্রীড়াঙ্গনের সৌন্দর্য এবং মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। ভক্তরা এই ধরনের মুহূর্তের জন্যই আইপিএল-কে ভালোবাসেন, যেখানে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বন্ধুত্ব এবং শ্রদ্ধার ছবিও ফুটে ওঠে।