আম আদমি পার্টির (আপ) প্রতিষ্ঠাতা এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন অমিত মালব্য (amit malviya)। একটি সাম্প্রতিক সামাজিক মাধ্যম পোস্টে তিনি দাবি করেছেন, কেজরিওয়াল নেতৃত্বাধীন আপ দিল্লির জনগণকে পরিত্যাগ করেছে এবং তিনি নিজের “রাজকীয় কল্পনা” পূরণের জন্য করদাতাদের অর্থে বিলাসবহুল “শীশ মহল” তৈরি করেছেন।
এই পোস্টে মালব্য (amit malviya) কেজরিওয়ালকে “আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতারক” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই অভিযোগগুলি দিল্লির রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
The Arvind Kejriwal-led AAP has abandoned Delhi. Good riddance. Being in politics requires an unwavering commitment to serve the people—not to build a Sheesh Mahal at taxpayers’ expense to fulfill one’s monarchical fantasies. Kejriwal is undoubtedly the biggest political fraud of… https://t.co/0xUYUNLJdM
— Amit Malviya (@amitmalviya) April 21, 2025
“শীশ মহল” বিতর্ক (amit malviya)
কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হল, তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সরকারি বাসভবনকে বিলাসবহুলভাবে সংস্কার করেছেন, যাকে সমালোচকরা “শীশ মহল” নামে উল্লেখ করছেন। এই সংস্কারে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে অভিযোগ।
সমালোচকদের মতে
সমালোচকদের (amit malviya) মতে, এএপি যখন সাধারণ মানুষের পার্টি হিসেবে নিজেদের প্রচার করেছিল, তখন এই ধরনের ব্যয়বহুল প্রকল্প তাদের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত পোস্টে বলা হয়েছে, “রাজনীতিতে থাকতে হলে জনগণের সেবায় অটল প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন, করদাতাদের অর্থে রাজকীয় কল্পনা পূরণের জন্য শীশ মহল নয়।”
২০২৩ সালে এই বাসভবন বিতর্ক প্রকাশ্যে আসে, যখন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) অভিযোগ করে যে, কেজরিওয়ালের বাসভবনে বিলাসবহুল ফিটিংস, ব্যয়বহুল আসবাব এবং অত্যাধুনিক সুবিধার জন্য সরকারি তহবিলের অপব্যবহার করা হয়েছে।
বিসিসিআই কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নতুনদের ভিড়, শ্রেয়াসের দুর্দান্ত কামব্যাক
বিজেপি দাবি করেছে
বিজেপি (amit malviya) দাবি করেছে, এই খরচের পরিমাণ ৪৫ কোটি টাকারও বেশি। এএপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বাসভবনের সংস্কার নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। তবে, এই বিতর্ক কেজরিওয়ালের “সাধারণ মানুষের নেতা” ইমেজে আঘাত হেনেছে।
দিল্লি ত্যাগের অভিযোগ
সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে দাবি করা হয়েছে, এএপি দিল্লির জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে রাজ্য ত্যাগ করেছে। এই অভিযোগের পেছনে কেজরিওয়ালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কার্যকলাপ এবং দিল্লির প্রশাসনিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপট রয়েছে।
২০২৪ সালে কেজরিওয়াল দিল্লি আবগারি নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন এবং কয়েক মাস জেলে কাটান। এই সময়ে দিল্লির প্রশাসন কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। যদিও তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ এখন পাঞ্জাব এবং অন্যান্য রাজ্যে বেশি কেন্দ্রীভূত বলে সমালোচকরা দাবি করছেন।
বিজেপি এবং কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছে যে, এএপি দিল্লির জনগণের জন্য প্রতিশ্রুত শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পরিকাঠামোর উন্নয়নে ব্যর্থ হয়েছে। দিল্লির রাস্তার বেহাল দশা, জল সরবরাহের অনিয়ম এবং বিদ্যুৎ সঙ্কটের মতো সমস্যাগুলি এখনও অমীমাংসিত। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে বলছেন, “আপ দিল্লিকে ভালো করে বিদায় জানিয়েছে।”
কেজরিওয়ালের প্রতারণার অভিযোগ
পোস্টে কেজরিওয়ালকে “সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতারক” বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই অভিযোগের মূলে রয়েছে তাঁর প্রাথমিক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং বর্তমান কর্মকাণ্ডের মধ্যে বৈপরীত্য। ২০১১ সালে আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন থেকে উঠে আসা কেজরিওয়াল সাধারণ মানুষের জন্য একটি স্বচ্ছ এবং জনকেন্দ্রিক রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে, সমালোচকদের মতে, তিনি ক্রমশ ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং ব্যক্তিগত সুবিধার দিকে ঝুঁকেছেন।
মনোজ তিওয়ারি বলেছেন
বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি বলেছেন, “কেজরিওয়াল জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন, কিন্তু তিনি শুধু নিজের স্বার্থ দেখেছেন। শীশ মহল এবং আবগারি কেলেঙ্কারি তাঁর প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ করেছে।” এএপি এই অভিযোগগুলিকে “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে, কেজরিওয়াল দিল্লির জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো যুগান্তকারী কাজ করেছেন।
জনগণের প্রতিক্রিয়া
দিল্লির জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ এএপি-র শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অবদানের প্রশংসা করলেও, অনেকে মনে করেন, কেজরিওয়াল তাঁর প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গেছেন। দিল্লির একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা কেজরিওয়ালের উপর ভরসা করেছিলাম, কিন্তু এখন রাস্তা, জল, বিদ্যুৎ—সবই সমস্যায় জর্জরিত।”
অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আপ -র বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলি দিল্লির রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিলতা তুলে ধরছে। শীশ মহল বিতর্ক এবং দিল্লির প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ কেজরিওয়ালের ইমেজে আঘাত হেনেছে। তবে, এএপি-র সমর্থকরা এই অভিযোগগুলিকে বিজেপি-র রাজনৈতিক প্রচারণা হিসেবে দেখছেন। আগামী দিনে এই বিতর্ক দিল্লির রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলবে। তবে, জনগণের প্রত্যাশা এখনও অটুট—একটি স্বচ্ছ এবং জনকেন্দ্রিক প্রশাসন।