মেদিনীপুর: রবিবার রাতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda)। তাঁর গাড়ির সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী টোটোর ধাক্কা লাগে, যার ফলে এক মহিলা ও তাঁর নয় মাসের শিশু সন্তান সামান্য আহত হন। ঘটনাটি ঘটে রাত প্রায় ১০টা নাগাদ, মেদিনীপুর শহরের গির্জা এলাকায়। দুর্ঘটনার পর মন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে আহত মা ও শিশুকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। অনুষ্ঠান শেষে তিনি তাঁর মা চুনীবালা হাঁসদাকে নিয়ে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। গির্জা এলাকায় পৌঁছনোর সময় হঠাৎই একটি যাত্রীবাহী টোটো তাঁর গাড়ির সামনে এসে পড়ে। টোটোর চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় টোটোটি মন্ত্রীর গাড়ির চালকের দিকে উল্টে যায়। এই ধাক্কায় মন্ত্রীর গাড়ির চালকের দিকের লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। টোটোতে থাকা এক মহিলা ও তাঁর নয় মাসের শিশু সন্তানসহ কয়েকজন যাত্রী টোটো থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন।
দুর্ঘটনার পর মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা তৎক্ষণাৎ গাড়ি থেকে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি নিজে উদ্যোগ নিয়ে আহত মহিলা ও শিশুকে উদ্ধার করেন এবং তাঁদের দ্রুত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানা যায়, মা ও শিশুর আঘাত তেমন গুরুতর নয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং কিছুক্ষণ পর তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় মন্ত্রীর দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং মানবিকতার প্রশংসা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মন্ত্রী মহোদয় নিজে গাড়ি থেকে নেমে আহতদের উদ্ধার করেছেন এবং হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। এটা সত্যিই প্রশংসনীয়।” ঘটনার পর মেদিনীপুর শহরের গির্জা এলাকায় কিছুক্ষণের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, টোটোর চালকের অসাবধানতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনার সঠিক কারণ জানতে পুলিশ টোটোর চালক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলছে। মন্ত্রীর গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি সামান্য হলেও, এই ঘটনা রাতের বেলায় শহরের ব্যস্ত রাস্তায় যানবাহন চলাচলের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনের তরফে রাস্তায় টোটো চলাচলের নিয়মকানুন আরও কঠোর করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, রাতের বেলায় টোটো চালকদের আরও সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানো উচিত। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার এই মানবিক পদক্ষেপ এলাকার মানুষের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর প্রথম উদ্দেশ্য ছিল আহতদের নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া। এই ঘটনা একদিকে যেমন দুর্ঘটনার কারণে আলোচনায় এসেছে, তেমনি মন্ত্রীর মানবিকতা সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।