মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদন মেনে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, অযোগ্য চিহ্নিত নন, এমন চাকরিহারা শিক্ষকদের (Sacked Teachers) কাজে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে, এই রায়কে ঘিরে কিছু শর্তও আরোপ করা হয়েছে। বিশেষত, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি ভুক্ত শিক্ষাকর্মীরা (Sacked Teachers) স্কুলে যেতে পারবেন না।
এর মধ্যেই ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযানের (Sacked Teachers) ডাক দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এই আন্দোলন নিয়ে চাকরিহারা শিক্ষকদের (Sacked Teachers) তরফ থেকে সম্প্রতি বড় ঘোষণা এসেছে। তারা জানিয়েছে, আপাতত নবান্ন অভিযান স্থগিত রাখা হচ্ছে। তবে আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ কবে নেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে জানানো হবে।
এদিন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা (Sacked Teachers) ঐক্যমঞ্চের পক্ষ থেকে দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “আমরা আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর থেকেই পুলিশ ও প্রশাসন বারবার আমাদের আলোচনায় বসার জন্য ডেকেছে। বৃহস্পতিবার হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপর কলকাতা পুলিশ কমিশনার, ডিজিপি সহ একাধিক আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে।
সেখানে আমাদের জানানো হয়েছে, মুখ্যসচিবের সঙ্গে আপাতত আলোচনা হবে এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা এই বিষয়ে মেইলও করেছি।” তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ না সঠিক সমাধান পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ নবান্ন অভিযানের (Sacked Teachers) সিদ্ধান্ত থেকে তাঁরা সরে আসবেন না। তবে ২১ এপ্রিলের নবান্ন অভিযান আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। তিনি জানান, যদি সমাধান সূত্র বের না হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের (Sacked Teachers) প্রস্তুতি নিয়ে নবান্ন অভিযানে আবার অংশগ্রহণ করা হবে।
এই অবস্থার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা (Sacked Teachers) ঐক্যমঞ্চ ২১ এপ্রিল নবান্ন অভিযানে যোগ দেওয়ার ডাক দিয়েছিল। ঐক্যমঞ্চের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের দুর্নীতির কারণে ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী চাকরি হারিয়েছেন এবং তারা আজ পথে বসেছেন। তাই নবান্ন অভিযান তাদের শেষ অস্ত্র হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ২১ এপ্রিল এই অভিযানে বহু মানুষ যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
নবান্ন অভিযানে (Sacked Teachers) যোগ দেওয়ার জন্য ঐক্যমঞ্চ তিলোত্তমার বাবা-মায়ের সঙ্গেও দেখা করে তাদের সমর্থন চেয়েছিল। তবে তিলোত্তমার বাবা-মা জানিয়েছিলেন, তারা নবান্ন অভিযানে সামিল হবেন। এছাড়া, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাকে নবান্ন অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সৌরভের সঙ্গে দেখা হয়নি, পরে সৌরভকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাকে রাজনীতিতে জড়াবেন না।”
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চাকরি হারানো শিক্ষকরা, (Sacked Teachers) যারা অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হননি, তারা কাজে ফিরতে পারবেন। তবে বর্তমানে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি ভুক্ত শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে যেতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর রাজ্যকে আগামী ৩১ মে-এর মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার হলফনামা প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, অযোগ্য চিহ্নিত না হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা আগামী ৯ মাস স্কুলে কাজ করতে পারবেন না।
এই পরিস্থিতি নিয়ে ঐক্যমঞ্চ (Sacked Teachers) জানিয়েছে, তাদের দাবির সমাধান না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। তারা জানায়, আপাতত নবান্ন অভিযান স্থগিত রাখা হলেও, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। চাকরিহারা শিক্ষকরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে, যদি তাদের সমস্যা সমাধানের পথে কোনো অগ্রগতি না হয়।
রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যদিও বিভিন্ন আলোচনা হয়েছে, তবুও চাকরিহারা শিক্ষকদের (Sacked Teachers) মনে এখনও অসন্তোষের ছাপ রয়ে গেছে। তারা চাইছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাদের সমস্যার সমাধান হোক এবং তাদের কাজের সুযোগ ফিরে আসুক। এদিকে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গতকালের আলোচনায় বলা হয়েছে, তারা সঠিক পদক্ষেপ নেবেন এবং এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সমাধান আসেনি, যার কারণে চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া, ২১ এপ্রিলের নবান্ন অভিযান (Sacked Teachers) স্থগিত হলেও, এটি যে একটি সাময়িক বিরতি, তা স্পষ্ট। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা নবান্ন অভিযানে যোগ দেওয়ার তারিখ পরে জানাবেন, এবং যদি যথাযথ সমাধান না মেলে, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে এগোবেন।