সাত ম্যাচ খেলে ষষ্ঠ KKR, এই পরিবর্তনে ভাগ্য খুলবে শাহরুখ বাহিনীর?

২০১৪ সালের পর দীর্ঘ দশ বছরের অপেক্ষা শেষ করে ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। গত মরসুমের সাফল্যের পর ২০২৫ আইপিএল (IPL…

KKR’s V3 Dominates as Defending Champions Crush SRH by 80 Runs in IPL 2025

২০১৪ সালের পর দীর্ঘ দশ বছরের অপেক্ষা শেষ করে ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। গত মরসুমের সাফল্যের পর ২০২৫ আইপিএল (IPL 2025) শাহরুখ খানের ফ্যাঞ্চাইজি কেকেআরের (KKR) প্রতি কলকাতার সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু গ্রুপ পর্বের সাত ম্যাচ শেষে দলটি সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। মাত্র তিনটি জয় নিয়ে কেকেআর চারটি ম্যাচে হেরেছে, যা চ্যাম্পিয়ন দলের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্সের চেয়ে অনেক কম। দলের খারাপ ফলের পিছনে দল গঠনের ভুল, নেতৃত্বের দুর্বলতা এবং খেলোয়াড়দের ফর্মহীনতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তবে কীভাবে কেকেআর পুনরায় সাফল্যের পথে ফিরতে পারে? কোন পরিবর্তনগুলো দলের হাল ফেরাতে পারে?

Advertisements

নীরাজ চোপড়ার উত্তরসূরি পেল ভারত! সৌদি আরবে ইতিহাস হিমাংশুর

   

প্রথমত, কেকেআরকে ফর্মহীন খেলোয়াড়দের বেঞ্চে বসিয়ে নতুন মুখদের সুযোগ দিতে হবে। দলের ওপেনিং জুটি এই মরসুমে সফলতার মুখ দেখেনি। বিশেষ করে কুইন্টন ডি ককের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ বাদে তিনি কোনো উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেননি। ডি ককের বিকল্প হিসেবে দলে রয়েছেন আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ, যিনি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে সমান দক্ষ। গুরবাজকে ওপেনিংয়ে সুযোগ দেওয়া এখন সময়ের দাবি। তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে দলকে শক্তিশালী শুরু এনে দিতে পারে। এছাড়াও কিপার ব্যাটরের তালিকায় রয়েছে লুভনিথ সিসোদিয়ার নাম।

দলের ব্যাটিং অর্ডারেও পরিবর্তন জরুরি। মিডল অর্ডারে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের উপর নির্ভরতা বেশি, কিন্তু তিনিও এই মরসুমে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না। সুনীল নারিনকে ওপেনিংয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য ব্যবহার করার পরিবর্তে ভেঙ্কটেশকে ওপেনিংয়ে পাঠানো যেতে পারে। শক্তিশালী ওপেনিং জুটি মিডল অর্ডারের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া, রিঙ্কু সিংকে বর্তমানে ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে রাখা হচ্ছে। তাঁকে ফিনিশার হিসেবে ব্যবহার করা হলেও, একটু উপরে নামালে তিনি বেশি বল খেলার সুযোগ পাবেন, যা দলের রান সংগ্রহ বাড়াতে সহায়ক হবে।

কলকাতা ফুটবল লিগে ভূমিপুত্র ইস্যুতে এই সিদ্ধান্তের পথে IFA

আন্দ্রে রাসেলের ফর্মহীনতাও কেকেআরের জন্য বড় চিন্তার কারণ। এই মরসুমে তিনি ব্যাট ও বলে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেননি। রাসেলকে বেঞ্চে বসিয়ে মইন আলি বা রোভম্যান পাওয়েলের মতো অলরাউন্ডারদের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। মইন আলি স্পিন বোলিংয়ের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে স্থিতিশীলতা আনতে পারেন, আর পাওয়েলের বিস্ফোরক ব্যাটিং দলের স্কোর বোর্ডে গতি আনতে পারে।

Advertisements

বোলিং বিভাগেও পরিবর্তন প্রয়োজন। স্পিনারদের মধ্যে সুনীল নারিন এবং বরুণ চক্রবর্তী দলের শক্তি, কিন্তু পেস বোলিং ইউনিট হতাশ করেছে। অ্যানরিখ নরকিয়া চোট-প্রবণ এবং স্পেন্সার জনসন ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে চেতন সাকারিয়া বা বৈভব অরোরার মতো বোলারদের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। সাকারিয়ার বৈচিত্র্যময় বোলিং এবং অরোরার নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থ পেস আক্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

পাখা থেকে সানস্ক্রিন! GT vs DC ম্যাচে গুজরাটের বিশেষ উদ্যোগ সমর্থকদের প্রশংসা

নেতৃত্বের ক্ষেত্রে অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানের উপর চাপ বাড়ছে। দলের ব্যর্থতার জন্য তিনি নিজেকে দায়ী করলেও, কৌশলগত সিদ্ধান্তে আরও স্পষ্টতা প্রয়োজন। গৌতম গম্ভীরের মেন্টরশিপের অভাব এই মরসুমে স্পষ্ট। নতুন মেন্টর ডোয়াইন ব্রাভো এবং সহকারী কোচ ওটিস গিবসনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলকে পুনরায় ট্র্যাকে ফেরানো সম্ভব।

কেকেআরের এই মুহূর্তে প্রয়োজন কৌশলগত পরিবর্তন, খেলোয়াড়দের ফর্মে ফেরা এবং নেতৃত্বের দৃঢ়তা। গুরবাজ, মইন আলি বা পাওয়েলের মতো নতুন মুখদের সুযোগ দেওয়া, ব্যাটিং অর্ডারে রদবদল এবং পেস বোলিংয়ে পরিবর্তন দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। সমর্থকরা এখনও আশায় বুক বাঁধছেন যে, তাদের প্রিয় কেকেআর প্লে-অফের দৌড়ে ফিরে আসবে এবং চতুর্থ শিরোপার স্বপ্ন পূরণ করবে।