মুর্শিদাবাদ: ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে উত্তাল মুর্শিদাবাদ। রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদ এলাকায় খুন হলেন এক বাবা ও তাঁর ছেলে। শনিবার নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তাঁদের বাড়িতে হাজির হন রাজ্যপাল সি. ভি. আনন্দ বোস। পরিবারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। (governor visits family of victims)
নিহতদের নাম হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাস। তাঁদের দেহ বাড়ির মধ্যেই রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দুই জনের শরীরেই ছিল একাধিক ছুরির কোপ। ঘটনায় স্তব্ধ এলাকাবাসী।
রাজভবনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “রাজ্যপাল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। তাঁরা এই খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। রাজ্যপাল তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।”
হিংসা কবলিত অন্য এলাকাগুলিও পরিদর্শনে
রাজ্যপালের সফর এখানেই শেষ নয়। তিনি এদিনই আরও তিনটি অশান্ত এলাকা—ধুলিয়ান, সুতী ও জঙ্গিপুরে যাবেন বলে রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৮ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি মুসলিম-প্রধান এলাকায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। প্রশাসন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার জেরে অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ২৭৪ জনকে।
আশ্রয় শিবিরে রাজ্যপালের আশ্বাস
শুক্রবার রাজ্যপাল পরিদর্শন করেন মালদহের একটি অস্থায়ী আশ্রয় শিবির, যেখানে হিংসার মুখে মুর্শিদাবাদ ছেড়ে আসা বহু হিন্দু পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন রাজ্যপাল।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, “শরণার্থী শিবিরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কথা আমি শুনেছি। তাঁরা যা বললেন, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
রাজ্য সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন
এই সফর নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যে মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে সফর স্থগিত রাখার অনুরোধ জানালেও, সেই অনুরোধে কর্ণপাত না করে তিনি নিজের কর্মসূচি অনুসারে এলাকাগুলি পরিদর্শন করছেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ হিংসার শিকার পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে এক শক্ত বার্তা দিচ্ছে। পাশাপাশি, প্রশাসনিক স্তরে আরও স্বচ্ছতা এবং দ্রুত পদক্ষেপের দাবিও জোরদার হচ্ছে।