রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose) আজ মুর্শিদাবাদ সফরে যাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি সত্ত্বেও। রাজ্য-রাজনীতির উত্তাল আবহে এই সফর নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সকালেই তিনি শিয়ালদহ স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন এবং সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দুপুরের মধ্যেই তিনি মুর্শিদাবাদ পৌঁছাবেন। অশান্তির জেরে ঘরছাড়া হয়ে পড়া বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তি নিয়ে রাজ্যজুড়ে তীব্র চর্চা চলছে। বিশেষত, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হিংসার ঘটনায় বহু মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তাদেরই পাশে দাঁড়াতেই রাজ্যপালের এই সফর। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের (C. V. Ananda Bose) এই সফরকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে বারবার জানানো হয়েছে, রাজ্যপালের এমন সফর আগে থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে হওয়া উচিত ছিল। তবুও রাজ্যপাল নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার রাস্তায় রওনা হয়েছেন।
রাজভবন (C. V. Ananda Bose) সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল (C. V. Ananda Bose) মূলত মুর্শিদাবাদের অশান্তিপ্রবণ অঞ্চলগুলো পরিদর্শন করতে চান। তিনি স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশের আধিকারিক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর মতে, ‘রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার দায় তাঁর অন্যতম কর্তব্য।’
রাজ্য সরকার যদিও দাবি করছে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এবং রাজ্যপালের (C. V. Ananda Bose) সফর শুধুমাত্র রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। এমনকি কিছু প্রশাসনিক মহল বলছে, এই সফরের ফলে রাজ্যের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আবার অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। তবুও রাজ্যপাল নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি চাইছেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করতে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সফর রাজ্য-রাজ্যপাল (C. V. Ananda Bose) সংঘাতের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক বরাবরই টানাপোড়েনপূর্ণ। এর আগেও নানা প্রশাসনিক বিষয়ে মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। তবে এবার রাজ্যপালের সরাসরি ময়দানে নেমে যাওয়া রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
এই সফরের ফলাফল কী হবে তা ভবিষ্যৎ বলবে, কিন্তু ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের মানুষদের মধ্যে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে রাজ্যপালের আগমন। তাঁদের আশা, অন্তত একজন সাংবিধানিক প্রধান তাঁদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনবেন, প্রশাসনিক স্তরে কিছু পরিবর্তন আনবেন।
মোটের উপর, রাজ্যপালের এই সফর শুধু এক সফর নয়, এটি রাজ্য ও রাজভবনের দ্বন্দ্বের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।