দিলীপ ঘোষ – (Dilip Ghosh Marriage) বিজেপির এক প্রভাবশালী ও দৃঢ়চেতা নেতা, যাঁর নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে পদ্ম শিবির বহুবার উত্তাল হয়েছে। মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ এবং একসময়ের রাজ্য বিজেপির সভাপতি (Dilip Ghosh Marriage) হিসেবে তাঁর দৃঢ় ভূমিকা বরাবরই চর্চার কেন্দ্রে থেকেছে। কিন্তু এবার তিনি আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছেন একেবারে ভিন্ন কারণে—ব্যক্তিগত জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য। দিলীপ ঘোষ বিয়ে করছেন, আর সেই বিয়ে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিশেষ করে এই সিদ্ধান্তে বেকায়দায় পড়েছে তাঁর নিজের দল, বিজেপি।
সূত্র অনুযায়ী, বিজেপির অন্দর থেকেই দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh Marriage) বিয়ে না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এমনকি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (RSS) তরফ থেকেও নাকি তাকে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh Marriage) নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, মা’র ইচ্ছেতেই তিনি এই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই দলে যতই চাপ আসুক না কেন, দিলীপ ঘোষ নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি।
এই সিদ্ধান্ত যতটা না ব্যক্তিগত, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে। কারণ যাঁর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh Marriage) বিয়ে হচ্ছে, তিনি মহিলা মোর্চার সদস্য রিঙ্কু মজুমদার—এক সময় দিলীপ ঘোষের হাত ধরেই বিজেপিতে প্রবেশ করেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এটি কি নিছকই একটি সম্পর্ক, নাকি রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অংশ? বিশেষ করে তথাগত রায় যেভাবে এক সময় “কামিনী কাঞ্চন” নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, তা ফের নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। বিজেপির একাংশ মনে করছে, রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে বিয়ে যেন সেই বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করল।
বিভিন্ন মহলে এখন কাটাছেঁড়া চলছে। অনেকেই বলছেন, দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh Marriage) যদি অন্য পেশার বা রাজনৈতিক জগতের বাইরের কাউকে বিয়ে করতেন, তাহলে হয়তো এতটা বিতর্ক হতো না। কিন্তু দলীয় এক সদস্যকে বিয়ে করায়, বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই সংঘাতের রূপ নিয়েছে। এতে মহিলা মোর্চার ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ভবিষ্যতে কোনও মহিলা যদি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে চান, তাহলে তাঁকে একাধিকবার ভাবতে হবে – এমনই মত দিলেন বিজেপির এক সিনিয়র নেতা।
আরেকটি বড় প্রশ্ন হল, এই বিয়ে কি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করবে? সাধারণ মানুষ এই বিয়েকে কীভাবে দেখছে? সামাজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে কটাক্ষ, বিদ্রূপ, আবার কেউ কেউ শুভেচ্ছাও জানাচ্ছেন। তবে বেশিরভাগ মন্তব্যেই রয়েছে একধরনের কৌতূহল ও সংশয়। একজন জননেতা হিসেবে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh Marriage) ব্যক্তিগত জীবন নিশ্চয়ই তাঁর অধিকার, তবে পাবলিক লাইফে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে রাজনৈতিক প্রভাব কতটা পড়তে পারে, তা ভেবে দেখা দরকার ছিল – বলছেন দলীয় অনেকে।
এদিকে, বিজেপির মধ্যে দুই ভাগে বিভক্ত মতামত। একদল মনে করছে, দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh Marriage) বিয়ে দলের ভিতরে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। অন্যদিকে আরেক দল বলছে, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে এইভাবে বিশ্লেষণ করা ঠিক নয়। তবে রাজনীতির ময়দানে যখন নির্বাচন সামনে, তখন নেতার প্রতিটি পদক্ষেপের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা উঠে আসবে, এটাই স্বাভাবিক।
সারাংশে, দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh Marriage) বিয়ে আপাতদৃষ্টিতে একটি ব্যক্তিগত ঘটনা হলেও, তা এখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে। বিজেপি এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আর দিলীপ ঘোষ নিজে কীভাবে এই সমালোচনা ও চাপ সামলে রাজনীতিতে আগের মতো সক্রিয় থাকেন, সেটাও নজরকাড়া হবে নিশ্চিত।