Missile: ভারত শীঘ্রই তার পারমাণবিক সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চলেছে। এর জন্য, এই ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। শুধু চিন-পাকিস্তান নয়, উত্তর কোরিয়ার অনেক এলাকাও এর আওতায় আসবে। রিপোর্ট অনুসারে, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) K-5 নামে একটি নতুন সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এসএলবিএম) তৈরি করছে যার পাল্লা ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ কিলোমিটার হতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতীয় পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপ করা হবে এবং একসাথে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখবে।
পারমাণবিক সাবমেরিনের জন্য তৈরি হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র
ভারত এখন এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে যা সমুদ্র থেকে পারমাণবিক আক্রমণ চালানোর ক্ষমতাকে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে। ডিআরডিও-র পরবর্তী প্রজন্মের কে-৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আইএনএস অরিহন্ত এবং ভবিষ্যতের এস৫-সিরিজের মতো ভারতীয় পারমাণবিক সাবমেরিনে মোতায়েন করা হবে।
K-5 ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তি হল এর দীর্ঘ পাল্লা। ভারী ওয়ারহেড সহ, এর পাল্লা হবে ৫,০০০ কিলোমিটার, যেখানে হালকা ওয়ারহেড সহ, এটি ৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে। এর ফলে চিন-পাকিস্তানের পাশাপাশি জাপান, কোরিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত ভারতের কৌশলগত নাগাল বৃদ্ধি পাবে।
K-5 ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব কী হবে?
K-5 ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এটি একসাথে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এতে MIRV প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, যা একটি ক্ষেপণাস্ত্র থেকে বিভিন্ন দিকে একাধিক ওয়ারহেড নিক্ষেপ করতে পারে। এর সর্বোচ্চ ওয়ারহেড ধারণক্ষমতা ১,০০০ থেকে ২,০০০ কিলোগ্রাম বলে মনে করা হয়, যা পারমাণবিক পেলোডের দিক থেকে বেশ মারাত্মক। একই সময়ে, ৫০০ কেজি হালকা পেলোড সহ, এটি তার পূর্ণ পরিসরে অর্থাৎ ৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে।
কোন কোন দেশের এমন ক্ষমতা আছে?
K-5 এর মাধ্যমে, ভারত দীর্ঘ-পাল্লার SLBM আছে এমন নির্বাচিত দেশগুলির তালিকায় যোগ দেবে। আমেরিকার আছে ১২,০০০ কিলোমিটার পাল্লার ট্রাইডেন্ট-২, চীনের আছে ১০,০০০ কিলোমিটার পাল্লার জেএল-৩ এবং রাশিয়ারও আছে একই রকম একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
K-5 ভারতের পারমাণবিক ত্রয়ী সম্পন্ন করে, অর্থাৎ, স্থল, আকাশ এবং এখন সমুদ্র থেকেও পারমাণবিক আক্রমণ সম্ভব হবে। এটি ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’ নীতির অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য পাল্টা আক্রমণের বিকল্প প্রদান করে, যা শত্রুকে আক্রমণ করার আগে দশবার ভাবতে বাধ্য করবে।
তাদের কোথায় মোতায়েন করা হবে?
কে-৫ ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রাথমিকভাবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণে অবস্থিত অপারেটিং জোনে মোতায়েন করা পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। সেখান থেকে, এটি কেবল চিন-কোরিয়া নয়, আফ্রিকা-ইউরোপের অনেক দেশ সহ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে কভার করতে পারে।
বর্তমানে, আইএনএস অরিহন্তের মতো পারমাণবিক সাবমেরিনগুলিতে ৪টি মিসাইল টিউব রয়েছে, তবে নতুন এস৫-সিরিজের সাবমেরিনগুলিতে আরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করার ক্ষমতা থাকবে। এই সাবমেরিনগুলি ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দিতে পারে, যা সামুদ্রিক এলাকায় ক্রমাগত টহল দেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। ডিআরডিওর এই অর্জন কেবল আমাদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে না বরং স্বনির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়নেও সহায়তা করবে।