Petrol and Diesel Prices Today: ভারতের তেল বিপণন সংস্থাগুলি (ওএমসি) প্রতিদিন সকাল ৬টায় পেট্রোল ও ডিজেলের দাম সংশোধন করে, যা বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের দাম এবং মুদ্রা বিনিময় হারের ওঠানামার উপর নির্ভর করে। এই নিয়মিত আপডেটগুলি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং ভোক্তাদের সবচেয়ে সঠিক ও বর্তমান জ্বালানি মূল্যের তথ্য প্রদান করে। ১৭ এপ্রিল ২০২৫-এ, ভারতের প্রধান শহরগুলিতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম স্থিতিশীল রয়েছে, যদিও কিছু শহরে সামান্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। আসুন, বিভিন্ন শহরে আজকের জ্বালানি মূল্যের বিস্তারিত জেনে নিই।
প্রধান শহরে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম
১৭ এপ্রিল ২০২৫-এ ভারতের প্রধান শহরগুলিতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম নিম্নরূপ:
- • নয়া দিল্লি: পেট্রোল – ৯৪.৭৭ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৮৭.৬৭ টাকা প্রতি লিটার।
• মুম্বই: পেট্রোল – ১০৩.৫০ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৯০.০৩ টাকা প্রতি লিটার।
• কলকাতা: পেট্রোল – ১০৫.০১ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৯১.৮২ টাকা প্রতি লিটার।
• চেন্নাই: পেট্রোল – ১০০.৮০ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৯২.৩৯ টাকা প্রতি লিটার।
• বেঙ্গালুরু: পেট্রোল – ১০২.৯২ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৯০.৯৯ টাকা প্রতি লিটার।
• হায়দ্রাবাদ: পেট্রোল – ১০৭.৪৬ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৯৫.৭০ টাকা প্রতি লিটার।
• আমেদাবাদ: পেট্রোল – ৯৪.৪৯ টাকা প্রতি লিটার, ডিজেল – ৯০.১৭ টাকা প্রতি লিটার।
এই দামগুলি গতকালের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে, তবে রাজ্যভেদে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), পরিবহন খরচ এবং স্থানীয় নিয়মের কারণে দামের তারতম্য দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, মুম্বই এবং হায়দ্রাবাদে উচ্চ ভ্যাটের কারণে পেট্রোলের দাম অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশি।
দাম নির্ধারণের কারণ
ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম নির্ধারণে বেশ কয়েকটি কারণ প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
• আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত তেলের দাম: ভারত তার তেলের চাহিদার প্রায় ৮০% আমদানি করে। ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে দেশীয় জ্বালানি মূল্য বাড়ে।
• রুপি-ডলার বিনিময় হার: রুপির মূল্য হ্রাস পেলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পায়, যা জ্বালানি মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে।
• কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কর: কেন্দ্রীয় সরকারের আবগারি শুল্ক (বর্তমানে প্রায় ২১ টাকা প্রতি লিটার) এবং রাজ্য সরকারের ভ্যাট জ্বালানি মূল্যের একটি বড় অংশ গঠন করে।
• পরিবহন ও ডিলার কমিশন: তেল শোধনাগার থেকে দূরবর্তী শহরে জ্বালানি পরিবহনের খরচ এবং ডিলার কমিশনও দামের তারতম্য ঘটায়।
২০১৭ সালের জুন থেকে ভারতে গতিশীল জ্বালানি মূল্য নীতি (ডায়নামিক ফুয়েল প্রাইসিং) চালু হয়েছে, যার ফলে প্রতিদিন সকাল ৬টায় দাম সংশোধন করা হয়। এই নীতি বাজারের স্বচ্ছতা বাড়ায় এবং বিশ্ববাজারের ওঠানামার সঙ্গে দেশীয় দামের সামঞ্জস্য রক্ষা করে।
অর্থনীতিতে জ্বালানি মূল্যের প্রভাব
পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পরিবহন খরচ বাড়ায়, যা পণ্যের দামের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ডিজেলের দাম বাড়লে বাণিজ্যিক যানবাহনের খরচ বৃদ্ধি পায়, যা মুদ্রাস্ফীতির চাপ সৃষ্টি করে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) এই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়াতে পারে, যা ঋণের খরচ বাড়ায়। ফলে, জ্বালানি মূল্যের পরিবর্তন অর্থনীতিতে একটি শৃঙ্খল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ভোক্তাদের জন্য পরামর্শ
• দৈনিক দাম পরীক্ষা করুন: ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম বা হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের গ্রাহক পরিষেবা নম্বর (১৮০০-২৩৩৩-৫৫৫) বা এসএমএস পরিষেবা (৯২২৪৯৯২২৪৯-এ আরএসপি <ডিলার কোড> পাঠান) ব্যবহার করে সর্বশেষ দাম জানুন।
• জ্বালানি সাশ্রয়: যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, টায়ারের চাপ পরীক্ষা এবং অপ্রয়োজনীয় ড্রাইভিং এড়িয়ে জ্বালানি খরচ কমান।
• বিকল্প জ্বালানি: সিএনজি বা বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার বিবেচনা করুন, যা দীর্ঘমেয়াদে খরচ কমাতে পারে।
১৭ এপ্রিল ২০২৫-এ ভারতের জ্বালানি মূল্য স্থিতিশীল থাকলেও, আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা এবং দেশীয় কর নীতির কারণে ভবিষ্যতে দামের পরিবর্তন হতে পারে। ভোক্তাদের সর্বশেষ দাম সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। গতিশীল মূল্য নীতির মাধ্যমে তেল বিপণন সংস্থাগুলি বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করছে, তবে জ্বালানি মূল্যের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ন্ত্রণে সরকারের নীতিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে