মহারাষ্ট্রে অব্যাহত ‘লাড়কি বহিন’ ঘোষণা অজিত পাওয়ারের

Ajit Pawar Reaffirms Continued ‘Ladki Behna’ Scheme in Maharashtra Advertisements মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী অজিত পাওয়ার (ajit pawar) ঘোষণা করেছেন যে রাজ্য সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প…

ajit-pawar-continues-ladki-behna-scheme-maharashtra

Ajit Pawar Reaffirms Continued ‘Ladki Behna’ Scheme in Maharashtra

Advertisements

মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী অজিত পাওয়ার (ajit pawar) ঘোষণা করেছেন যে রাজ্য সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প ‘মুখ্যমন্ত্রী মাঝি লাড়কি বহিন যোজনা’ অব্যাহত থাকবে এবং এটি বাতিলের কোনো সম্ভাবনা নেই। এই প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের মহিলাদের প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। গত বছরের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে মহাযুতি জোটের (বিজেপি, শিবসেনা এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপি) জয়ে এই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বলে মনে করা হয়।

   

অজিত পাওয়ার (ajit pawar) বলেন

মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অজিত পাওয়ার (ajit pawar) বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ করা হয়েছে। লাড়কি বহিন যোজনা বাতিলের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।” তিনি আরও জানান যে এই প্রকল্প রাজ্যের মহিলাদের কল্যাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকার এটি অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

লাড়কি বহিন যোজনা কী?

‘মুখ্যমন্ত্রী মাঝি লাড়কি বহিন যোজনা’ মহারাষ্ট্র সরকারের একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প, যার লক্ষ্য মহিলাদের আর্থিক স্বাবলম্বী করা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। এই প্রকল্পের অধীনে, ২১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারা, যাদের বার্ষিক পারিবারিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার কম, তারা প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পান। এই অর্থ সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়, যা তাদের দৈনন্দিন খরচ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা ছোটখাটো ব্যবসায়িক উদ্যোগে সহায়তা করে।

২০২৪ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পটি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এবং শহরাঞ্চলের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মহিলারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত বিধানসভা নির্বাচনে মহাযুতি জোটের বিজয়ের পিছনে এই প্রকল্পটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মহিলা ভোটারদের মধ্যে এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা জোটের জয়কে আরও সহজ করেছে।

অজিত পাওয়ারের বক্তব্য

অজিত পাওয়ার (ajit pawar) জানিয়েছেন যে লাডকি বাহিন যোজনা শুধু একটি আর্থিক সহায়তা প্রকল্প নয়, এটি মহিলাদের ক্ষমতায়নের একটি মাধ্যম। তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাধীন করতে চাই। এটি তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। আমরা এই প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করেছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।”

তিনি আরও জানান যে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বাড়ানো এবং প্রকল্পের কার্যকারিতা আরও উন্নত করার জন্য সরকার নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাওয়ারের এই বক্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন কিছু বিরোধী দল এবং সমালোচক প্রকল্পটির দীর্ঘমেয়াদী টিকিয়ে রাখার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে, অজিত পাওয়ারের দৃঢ় ঘোষণা এই জল্পনার অবসান ঘটিয়েছে।

নতুন অর্থবছরে আয়কর রিটার্ন জমা কবে শুরু হবে? জেনে নিন বিস্তারিত

Advertisements

রাজনৈতিক প্রভাব

লাড়কি বহিন যোজনা মহাযুতি সরকারের একটি মূল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। এই প্রকল্পটি বিশেষ করে গ্রামীণ মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। নির্বাচনের সময়, বিজেপি, শিবসেনা এবং এনসিপি নেতারা এই প্রকল্পকে তাদের প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছিলেন। ফলস্বরূপ, মহিলা ভোটারদের বড় অংশ মহাযুতির পক্ষে ভোট দিয়েছিল।

বিরোধী দলগুলো, যেমন কংগ্রেস এবং শরদ পাওয়ারের এনসিপি (এসপি), এই প্রকল্পের সমালোচনা করে বলেছে যে এটি নির্বাচনী সুবিধা অর্জনের জন্য একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ। তারা দাবি করেছে যে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা এই প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদী ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে পারবে না। তবে, অজিত পাওয়ারের সাম্প্রতিক বক্তব্য এই সমালোচনার জবাব হিসেবে এসেছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে সরকারের বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল রয়েছে এবং এটি বন্ধ হবে না।

মহিলাদের উপর প্রভাব

লাড়কি বহিন যোজনা মহারাষ্ট্রের লক্ষ লক্ষ মহিলার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গ্রামীণ এলাকার মহিলারা এই অর্থ ব্যবহার করে তাদের পরিবারের দৈনন্দিন খরচ, সন্তানদের শিক্ষা, এবং এমনকি ছোট ব্যবসা শুরু করার জন্য বিনিয়োগ করছেন। শহরাঞ্চলের মহিলারাও এই সহায়তার মাধ্যমে তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়িয়েছেন।

একজন সুবিধাভোগী, পুনের বাসিন্দা সুনিতা পাটিল, বলেন, “এই ১,৫০০ টাকা আমার পরিবারের জন্য একটি বড় সহায়তা। আমি এই টাকা দিয়ে আমার সন্তানদের স্কুলের বই কিনি এবং বাড়ির কিছু খরচ চালাই।” এই ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রকল্পটির সাফল্য এবং জনপ্রিয়তার প্রমাণ।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

অজিত পাওয়ার জানিয়েছেন যে সরকার এই প্রকল্পের পরিধি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। আরও মহিলাকে এই সুবিধার আওতায় আনার জন্য নতুন নীতি প্রণয়ন করা হবে। এছাড়াও, প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী মাঝি লাড়কি বহিন যোজনা মহারাষ্ট্রের মহিলাদের ক্ষমতায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অজিত পাওয়ারের ঘোষণা এই প্রকল্পের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। এটি কেবল মহিলাদের আর্থিক সহায়তাই প্রদান করছে না, বরং রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করছে। মহাযুতি সরকারের এই উদ্যোগ আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে এবং মহিলা কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।