পথে নেমে সরকারের সমালোচনায় গর্গ চট্টোপাধ্যায়

Garga Chatterjee Criticizes Government in Public Protest Advertisements এবার বাংলাপক্ষ সংগঠনের গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের (garga chatterjee) মুখে অচেনা সুর। মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হিংসা এবং দাস পরিবারের…

garga-chatterjee-slams-government-in-public-protest

Garga Chatterjee Criticizes Government in Public Protest

Advertisements

এবার বাংলাপক্ষ সংগঠনের গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের (garga chatterjee) মুখে অচেনা সুর। মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হিংসা এবং দাস পরিবারের পিতা-পুত্রের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতার জন্য তীব্র সমালোচনা করেছেন বাংলা পক্ষের নেতা ড. গর্গ চট্টোপাধ্যায় (garga chatterjee)। বাংলা পক্ষ, একটি বাঙালি অধিকার সংগঠন, যা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার এবং বাঙালিদের অধিকার রক্ষার জন্য পরিচিত। গর্গ চট্টোপাধ্যায়, এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের অক্ষমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

   

মুর্শিদাবাদে কী ঘটেছে?

মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে সাম্প্রতিক সময়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জঙ্গিপুর, আমডাঙা এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে একটি পিতা ও তার পুত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। গর্গ চট্টোপাধ্যায় (garga chatterjee) একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “দাস পরিবারের পিতা-পুত্রকে যারা খুন করেছে, তাদের পাতাল থেকে হলেও খুঁজে বের করতে হবে এবং বিচার করে শাস্তি দিতে হবে।” তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, “এই পর্যায়ে আমরা কীভাবে উপনীত হলাম?”

দিল্লি বনাম রাজস্থান হাই-ভোল্টেজ লড়াইয়ে ফ্যান্টাসি গেমে কপাল খুলে দেবে এই তিন বোলার!

বাংলা পক্ষের অবস্থান

বাংলা পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতি ও অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে আসছে। তারা রাজ্যে হিন্দি ও অন্যান্য ভাষার প্রভাবের বিরুদ্ধে এবং বাংলা ভাষার প্রাধান্য বজায় রাখার জন্য আন্দোলন করেছে। সংগঠনটি রাজ্যের চাকরি, শিক্ষা এবং প্রশাসনে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য ১০০% সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে।

গর্গ চট্টোপাধ্যায়, (garga chatterjee) একজন নিউরোসায়েন্টিস্ট এবং ভারতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক, এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি প্রায়ই তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক হিসেবে পরিচিত হলেও, বাংলা পক্ষের কার্যক্রমকে তিনি রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে একটি বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হিসেবে বর্ণনা করেন।

Advertisements

মুর্শিদাবাদের ঘটনায় গর্গ চট্টোপাধ্যায় সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেছেন যে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তিনি ওয়াকফ আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপেরও বিরোধিতা করেছেন, জানিয়েছেন যে বাংলার সম্পত্তির উপর কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়া হবে না।

মমতা সরকারের প্রতিক্রিয়া

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এখনও এই হত্যাকাণ্ড এবং সহিংসতার বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, বাংলা পক্ষের সমালোচনা এবং জনগণের ক্ষোভের মুখে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের এই ধরনের মন্তব্য রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে কিছু প্রতিবাদ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বাংলা পক্ষের বিতর্কিত ইতিহাস (garga chatterjee)

বাংলা পক্ষ এবং গর্গ চট্টোপাধ্যায় অতীতে বিভিন্ন বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন। ২০২০ সালে, গর্গের অসমের আহোম রাজা চাওলুং সুকাফাকে ‘চীনা আক্রমণকারী’ হিসেবে উল্লেখ করার জন্য অসমে তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। এছাড়াও, ২০২৪ সালে শিলিগুড়িতে চাকরিপ্রার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় বাংলা পক্ষের সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল।

গর্গ এই ঘটনায় তার সদস্যদের পক্ষে কথা বলেছিলেন, দাবি করে যে তারা জাল ডোমিসাইল সার্টিফিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল। এই ঘটনাগুলি বাংলা পক্ষের উপর বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছে। কেউ কেউ মনে করেন, সংগঠনটি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষে কথা বললেও, তাদের কিছু কার্যক্রম অ-বাঙালি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক।

মুর্শিদাবাদের সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির জটিলতাকে তুলে ধরেছে। গর্গ চট্টোপাধ্যায় এবং বাংলা পক্ষের সমালোচনা মমতা সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তবে, এই ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং দোষীদের চিহ্নিত করতে পুলিশি তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বাংলা পক্ষের দাবি এবং আন্দোলন রাজ্যের বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রশ্নকে আরও জোরালো করলেও, এটি একই সঙ্গে জাতিগত এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।