নয়াদিল্লি: সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে, তাতে ‘বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের’ সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি উঠেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে দেওয়া এক প্রাথমিক গোয়েন্দা রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে হিংসা ছড়ানোর পিছনে বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চলাফেরার ওপর নজরদারিতে ঘাটতি ছিল রাজ্য সরকারের, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
কীভাবে ছড়াল অশান্তি? Bangladeshi role in Bengal Waqf unrest
গত ১১ এপ্রিল থেকে মুর্শিদাবাদের সুতি ও সামসেরগঞ্জ এলাকায় শুরু হয় বিক্ষোভ, যা দ্রুতই নিয়ন্ত্রণহীন হিংসার রূপ নেয়। বহু দোকান, গাড়ি ও স্থানীয়দের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বহু মানুষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন মোতায়েন করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পুলিশের দাবি, এখন পর্যন্ত মোট ২১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মুর্শিদাবাদে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে।
সীমান্তবর্তী জেলায় অশান্তির ছায়া Bangladeshi role in Bengal Waqf unrest
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদে মুসলিম জনসংখ্যা ৬৬%। এই জেলা সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে। গোয়েন্দাদের ধারণা, এই ভৌগলিক বাস্তবতা সহিংসতা ছড়াতে কিছু বিদেশি চক্রকে সুবিধা করে দেয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও বিক্ষোভ Bangladeshi role in Bengal Waqf unrest
বিক্ষোভ থেমে থাকেনি মুর্শিদাবাদেই। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-এ ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া সেকুলার ফ্রন্ট (ISF) নেতৃত্বাধীন প্রতিবাদ মিছিলও সহিংস হয়ে ওঠে। মিছিলকারীরা কলকাতার দিকে যাওয়ার পথে পুলিশ বাধা দিলে, সংঘর্ষ বাঁধে এবং বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
রাজ্য বনাম কেন্দ্র: রাজনৈতিক চাপানউতোর Bangladeshi role in Bengal Waqf unrest
অশান্তির মাঝে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তৃণমূল সরকারকে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্ট কিছু সংবেদনশীল এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, “রাজ্যে এই আইন রাজ্যে কার্যকর হবে না।”
রাজ্যে ৮০,০০০+ ওয়াকফ সম্পত্তি Bangladeshi role in Bengal Waqf unrest
উল্লেখযোগ্যভাবে, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ৮০,৪৮০টির বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে, যা সংখ্যা অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই আইনের ফলে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির আশঙ্কায়, মুসলিম সমাজের একাংশে অতর্কিত জমি ছিনিয়ে নেওয়ার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্র সরকার যদিও বলেছে, এই আইন স্বচ্ছতা আনার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এটি সম্পূর্ণভাবে সংবিধান সম্মত।