বাম জমানায় বাংলায় ১০০০ কোটির ওয়াকফ কেলেঙ্কারি!

নয়া ওয়াকফ আইন নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা। তোলপাড় দেশ। পশ্চিমবঙ্গ গরম। এ রাজ্যেই ভয়ানক ওয়াকফ কেলেঙ্কারির (West Bengal Wakf scam) ইতিহাস রয়েছে। বাম জমানায়…

West Bengal’s ₹1000 Crore Wakf Scam Under Left Rule Resurfaces Amid Political Uproar

নয়া ওয়াকফ আইন নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা। তোলপাড় দেশ। পশ্চিমবঙ্গ গরম। এ রাজ্যেই ভয়ানক ওয়াকফ কেলেঙ্কারির (West Bengal Wakf scam) ইতিহাস রয়েছে। বাম জমানায় এক হাজার কোটি টাকার ওয়াকফ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে বাংলায়।

সালটা ১৯৯৬। কলিন স্ট্রিটের ওয়াকফ সম্পত্তিতে অনিয়ম ধরা পড়ে। এ নিয়ে তোলপাড় হয়। ওই বছরই তৎকালীন বিচারবিভাগীয় সচিব পি কে সেনগুপ্ত এই বিষয়ে তদন্ত করেন। কেঁচো খুড়তে কেউটে বেড়িয়ে আসে। উঠে আসে এক হাজার কোটির কেলেঙ্কারি।

প্রায় ৩০ বছর আগের সেই স্মৃতি এখন অনেকের মনেই ফিকে। তখনও তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কংগ্রেসের নেত্রী। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের মন্ত্রিসভায় থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী নন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তখন জ্যোতি বসু।

তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওয়াকফ কেলেঙ্কারির তদন্তে কমিশন গঠন করে। এক সদস্যের তদন্ত কমিশন। যার মাথায় ছিলেন বিচারপতি গীতেশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। ১৯৯৬ সালের তৈরি তদন্ত কমিশন রিপোর্ট দিতে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় নেয়। ২০০১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই কমিশন তার ১,৪০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয়। তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদল। কেন্দ্রে সরকার বদল। এই সময়ের মধ্যেই একাধিকবার লোকসভা ভোট হয়েছে। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল তৈরি হয়। ওয়াকফ কেলেঙ্কারির তদন্ত কমিশনের ধীর গতি নিয়ে বিধানসভায় সরব হয় বিরোধীরা। রিপোর্ট এলেও এই তদন্তের ফলাফল নিয়ে তখন থেকেই বিতর্ক চলছে।

এরপর ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার চার মাসের মাথায় বাম জমানার ওয়াকফ কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই তদন্তের রিপোর্ট আজও অজানা। তদন্ত হয়েছিল কিনা সেটাও স্পষ্ট নয়।

Advertisements

এই পরিস্থিতিতে এখন ফের আলোচনায় ওয়াকফ আইন। মুর্শিদাবাদ অগ্নিগর্ভ। সুতি-সামশেরগঞ্জে হিংসা ছড়িয়েছে। যা নিয়ে রাজনীতির ময়দানে বিজেপি। তৃণমূলও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে।

তবে বাম জমানার কেলেঙ্কারির বিষয়ে কেউ মুখ খোলেনি। মুর্শিদাবাদের হিংসার পিছনেও কি সেই কেলেঙ্কারি? কারণ মুর্শিদাবাদের ওয়াকফ সম্পত্তির একটা বড় অংশ নেতাদের দখলে। সেই সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার ভয়েই তাঁরা হিংসায় উসকানি দিয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করতে থাকা সম্পত্তি কেই বা হাতছাড়া করতে চায়? তাছাড়া বেশি গভীরে গেলে আরও বড় কেলেঙ্কারিও সামনে আসতে পারে।

যে তৃণমূল বামেদের ওয়াকফ কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তারা এ নিয়ে এখন চুপ। উল্টে ঘাসফুল শিবিরের একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধেও ওয়াকফ সম্পত্তি দখলের অভিযোগ রয়েছে। তালিকায় এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর নামও রয়েছে। যদিও কেউই এই অভিযোগ স্বীকার করেননি। বামেরা তো এ নিয়ে মুখই খোলেনি। তাঁরা আইনের বিরুদ্ধে সরব।