ফ্ল্যাট রক্ষণাবেক্ষণে জিএসটি সম্পর্কে বড় আপডেট, জানুন বিস্তারিত

GST on Apartment Maintenance: অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভ্রান্তি এবং উদ্বেগের মধ্যে, সরকারি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে যে অ্যাপার্টমেন্ট রক্ষণাবেক্ষণ চার্জের উপর পণ্য ও পরিষেবা…

GST on Apartment Maintenance

GST on Apartment Maintenance: অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভ্রান্তি এবং উদ্বেগের মধ্যে, সরকারি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে যে অ্যাপার্টমেন্ট রক্ষণাবেক্ষণ চার্জের উপর পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) কোনও নতুন কর নয়। এটি ২০১৯ সাল থেকে কার্যকর একটি বিদ্যমান নিয়ম। সাম্প্রতিক সময়ে কর কর্মকর্তাদের বর্ধিত তৎপরতার কারণে এই নিয়মটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে, যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়া এবং আবাসিক সমিতির বৈঠকে বিভ্রান্তি ও জল্পনা ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কর দপ্তর থেকে স্পষ্টীকরণ জারি করা হয়েছে।

২০১৯ সালে, কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) নির্দেশ জারি করে জানায়, যদি কোনো ফ্ল্যাট মালিকের মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ ৭,৫০০ টাকার বেশি হয়, তবে তাঁকে ১৮ শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হবে। তবে, ২০২১ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে এই নিয়মের কিছু দিক পরিবর্তিত হয়। আদালত ২০১৯ সালের সিবিআইসি’র একটি সার্কুলার বাতিল করে দেয় এবং রায় দেয় যে জিএসটি শুধুমাত্র মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ চার্জের সেই অংশের উপর প্রযোজ্য হবে, যা ৭,৫০০ টাকার বেশি। অর্থাৎ, পুরো পরিমাণের উপর কর দিতে হবে না।

   

এছাড়া, মাদ্রাজ হাইকোর্ট ২০১৯ সালে অথরিটি ফর অ্যাডভান্স রুলিংস (এএআর)-এর একটি রায়ও বাতিল করে, যেখানে বলা হয়েছিল যে ৭,৫০০ টাকার বেশি চার্জের ক্ষেত্রে কোনো কর ছাড় পাওয়া যাবে না এবং পুরো পরিমাণের উপর জিএসটি প্রযোজ্য হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, কর দপ্তর এখনও এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করেনি। ফলে, অন্যান্য রাজ্যের কর কর্মকর্তারা মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই ব্যাখ্যা অনুসরণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

বর্তমানে, আবাসিক সমিতি বা রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (আরডব্লিউএ)-এর উপর জিএসটি আরোপের জন্য দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, প্রতি অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ ৭,৫০০ টাকার বেশি হতে হবে। দ্বিতীয়ত, সমিতির বার্ষিক টার্নওভার ২০ লক্ষ টাকার বেশি হতে হবে। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “যদি এই দুটি শর্ত পূরণ হয়, তবে সমিতিকে জিএসটি-র অধীনে নিবন্ধন করতে হবে এবং পুরো রক্ষণাবেক্ষণ চার্জের উপর কর দিতে হবে, শুধু ৭,৫০০ টাকার বেশি অংশের উপর নয়।”

কর দপ্তর লক্ষ্য করেছে যে টিয়ার-১ শহরগুলির অনেক অ্যাপার্টমেন্ট এই নিয়ম মেনে চলছে না। ফলে, তাদের কর প্রদানে উৎসাহিত করতে কর কর্মকর্তারা তৎপরতা বাড়িয়েছেন। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সম্প্রতি বিভিন্ন আবাসিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা এবং নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে। তবে, এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও অনেক বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। অনেকে মনে করছেন, এটি একটি নতুন কর আরোপ করা হচ্ছে, যা তাদের আর্থিক বোঝা বাড়িয়ে দেবে।

Advertisements

এই পরিস্থিতিতে কর দপ্তরের স্পষ্টীকরণের উদ্দেশ্য হলো ভুল ধারণা দূর করা এবং জনগণকে এই নিয়মের বিষয়ে সঠিক তথ্য দেওয়া। বিশেষ করে, মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে শুধুমাত্র অতিরিক্ত অংশের উপর কর প্রযোজ্য হওয়ার বিষয়টি অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। তবে, যেহেতু অন্য রাজ্যগুলি এই রায় মানতে বাধ্য নয়, তাই জিএসটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে অঞ্চলভেদে ভিন্নতা দেখা যেতে পারে।

এই নিয়মের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে মেট্রো শহরের বড় বড় আবাসিক কমপ্লেক্সগুলিতে, যেখানে রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ প্রায়ই ৭,৫০০ টাকার বেশি হয় এবং সমিতির টার্নওভারও ২০ লক্ষ টাকার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এই সমিতিগুলির জন্য জিএসটি নিবন্ধন এবং কর প্রদান এখন বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, অনেক সমিতি এখনও এই নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন নয় বা নিয়ম মেনে চলতে অনীহা প্রকাশ করছে।

কর দপ্তরের মতে, এই নিয়মের উদ্দেশ্য হলো কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা এবং রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানো। তবে, বাসিন্দাদের জন্য এটি অতিরিক্ত আর্থিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির জন্য। আগামী দিনে এই বিষয়ে আরও স্পষ্ট নির্দেশিকা এবং সম্ভবত উচ্চতর আদালতের রায় পরিস্থিতি আরও পরিষ্কার করতে পারে। ততক্ষণ পর্যন্ত, আবাসিক সমিতি এবং বাসিন্দাদের এই নিয়ম মেনে চলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।