Kolkata Football Tournament: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা, শান্তি এবং ঐক্য—এই পাঁচটি মন্ত্রকে হাতিয়ার করে হালতুর ঐতিহ্যবাহী ‘মিলনায়তন ক্লাব’ গত ৭২ বছর ধরে সমাজের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই ক্লাব সম্প্রতি ছোটদের মধ্যে ফুটবল খেলার জনপ্রিয়তা বাড়াতে দুই দিনব্যাপী (১২ ও ১৩ এপ্রিল, ২০২৫) ‘সারা বাংলা সাব-জুনিওর ফুটবল প্রতিযোগিতা’র আয়োজন করেছিল। হালতু মিলনায়তন ময়দানে নৈশালোকের আলোয় এই প্রতিযোগিতা অসংখ্য দর্শকের উপস্থিতিতে এক মনোরম পরিবেশে সুসম্পন্ন হয়েছে।
এই প্রতিযোগিতায় স্থানীয় পৌরমাতা-পৌরপিতা, স্থানীয় বিধায়ক মাননীয় শ্রী দেবব্রত মজুমদার এবং ভারতের ফুটবল জগতের বেশ কয়েকজন প্রাক্তন খ্যাতনামা ফুটবলার উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফাইনাল ম্যাচে ‘বোসপুকুর ইয়ংস্টার ক্লাব’ দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ‘হালতু মাতৃসংঘ’কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা জিতে নিয়েছে। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ফুটবলারদের হাত থেকে বিজয়ী দল এবং অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়রা পুরস্কার গ্রহণ করেন, যা তরুণ ফুটবলারদের মধ্যে উৎসাহ ও প্রেরণা জাগিয়েছে।

মিলনায়তন ক্লাব দীর্ঘদিন ধরে তার সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত। শিক্ষা প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, সমাজসেবামূলক কাজ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই ক্লাবের অবদান অনস্বীকার্য। ফুটবলের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে সুস্থ, সক্রিয় এবং ঐক্যবদ্ধ রাখার লক্ষ্যে ক্লাবটি ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে। এই সাব-জুনিওর ফুটবল প্রতিযোগিতা তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ক্লাবের সভাপতি জানিয়েছেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো ফুটবলের মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা। এই খেলা শুধু প্রতিযোগিতা নয়, এটি দলগত কাজ, শৃঙ্খলা এবং সম্প্রীতির শিক্ষাও দেয়।”
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে ছিল বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত তরুণ ফুটবলাররা। তাঁদের দক্ষতা এবং উৎসাহ দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ধরনের আয়োজন শুধু খেলাধুলার প্রচারই করে না, বরং সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ জোরদার করে। বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার বলেন, “মিলনায়তন ক্লাবের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ফুটবলের মতো খেলা তরুণদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলে এবং সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখে।”
প্রাক্তন ফুটবলারদের উপস্থিতি তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য বিশেষ অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল। তাঁরা তরুণ ফুটবলারদের উদ্দেশে বলেন, “কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা এবং দলগত কাজের মাধ্যমে ফুটবলে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। মিলনায়তনের এই প্রচেষ্টা তরুণদের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম।” পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিজয়ী দলের পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড়, গোলদাতা এবং গোলরক্ষকদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
মিলনায়তন ক্লাব ভবিষ্যতেও এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করছে। ক্লাবের এক সদস্য জানান, “আমরা শুধু ফুটবল প্রতিযোগিতাই নয়, স্থানীয় তরুণদের জন্য ফুটবল প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এবং অন্যান্য ক্রীড়া কার্যক্রমের আয়োজন করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন প্রজন্মকে খেলাধুলার মাধ্যমে একটি সুস্থ জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।”
এই প্রতিযোগিতা হালতু এলাকার সামাজিক ও ক্রীড়া জীবনে একটি নতুন অধ্যায় যোগ করেছে। মিলনায়তন ক্লাবের এই উদ্যোগ স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।