ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিচ্ছিন্ন উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ

নতুন ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ (Wakf Law Protests) ছড়িয়ে পড়েছে। এই আইনের বিরোধিতায় বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় জনগণ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ…

Protests Against Wakf Amendment Law Disrupt Transport Across North and South Bengal

নতুন ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ (Wakf Law Protests) ছড়িয়ে পড়েছে। এই আইনের বিরোধিতায় বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় জনগণ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে, যার ফলে রাজ্যের যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। উত্তরবঙ্গের দিকে যাওয়ার সব বাস পরিষেবা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া, রেল চলাচলেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। বারহাওয়া-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার, আজিমগঞ্জ-মালদা প্যাসেঞ্জার, আজিমগঞ্জ-ভাগলপুর প্যাসেঞ্জার এবং কামাক্ষ্যা-পুরী এক্সপ্রেস সহ একাধিক ট্রেন আটকে রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রেল কর্তৃপক্ষ রাজ্য পুলিশের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করার আবেদন জানিয়েছে।

প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, যাকে অনেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থের বিরুদ্ধে বলে মনে করছেন। উত্তরবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে এবং রেললাইনে ধর্না দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। মালদায় বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশ রেললাইনের উপর বসে পড়ায় ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

   

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষোভকারীরা ওয়াকফ সম্পত্তির উপর সরকারের বর্ধিত নিয়ন্ত্রণ এবং এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। অনেকে এই আইনকে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, “এই আইন আমাদের সম্প্রদায়ের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কথা বলতে চাই।” তবে, প্রতিবাদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বাস টার্মিনালগুলিতে যাত্রীরা আটকে পড়েছেন। উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলি স্থগিত থাকায় অনেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। একইভাবে, ট্রেন আটকে থাকায় হাজার হাজার যাত্রী স্টেশনে অপেক্ষা করছেন। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে না।

Advertisements

রাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। জনগণের নিরাপত্তা এবং শান্তি বজায় রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” তবে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে।

এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলেও তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই আইনের বিরুদ্ধে আগেও সরব হয়েছে এবং রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলি পরিস্থিতির জন্য একে অপরকে দায়ী করছে।
বর্তমানে, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে অযথা ভিড় না করার এবং শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা নির্ভর করছে আগামী কয়েক ঘণ্টার ঘটনাপ্রবাহের উপর।