CAG Report to Be Reviewed in Assembly Today: AAP’s Political Future at Stake
দিল্লি বিধানসভার (assembly) স্পিকার বিজেন্দর গুপ্তা আগামী শুক্রবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডেকেছেন । এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হল সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে উত্থাপিত কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG) রিপোর্টগুলির পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করা।
এই রিপোর্টগুলি পূর্ববর্তী আম আদমি পার্টি (AAP) সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কার্যকারিতার উপর আলোকপাত করে। বৈঠকে ডেপুটি স্পিকার মোহন সিং বিষ্ট, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (PAC) চেয়ারম্যান এবং বিজেপি বিধায়ক অজয় মহাওয়ার সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
সম্প্রতি দিল্লি বিধানসভায় (assembly) মোট ১৪টি সিএজি রিপোর্টের মধ্যে আটটি উত্থাপিত হয়েছে। এই রিপোর্টগুলি দিল্লি সরকারের আবগারি বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (DTC), পাবলিক অ্যাকাউন্টস এবং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন অ্যাকাউন্টসের কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে তৈরি।
এই আটটি রিপোর্টের মধ্যে ডিটিসি-র কার্যকারিতা সংক্রান্ত রিপোর্টটি সরকারি উদ্যোগ কমিটির কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বাকি রিপোর্টগুলি পিএসি দ্বারা বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করা হবে। বৈঠকে দিল্লির অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (অডিট) একটি উপস্থাপনাও দেবেন বলে জানা গেছে।
সিএজি রিপোর্ট এবং এএপি সরকারের কর্মক্ষমতা
সিএজি রিপোর্টগুলি সরকারি বিভাগগুলির আর্থিক এবং প্রশাসনিক কার্যকারিতার উপর নিরীক্ষণ প্রদান করে। এই রিপোর্টগুলি প্রায়ই সরকারি ব্যয়, নীতি বাস্তবায়ন এবং প্রশাসনিক ত্রুটিগুলির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে। দিল্লির ক্ষেত্রে, এই রিপোর্টগুলি এএপি সরকারের শাসনকালে বিভিন্ন বিভাগে কীভাবে কাজ হয়েছে তা পরীক্ষা করে। বিশেষ করে, আবগারি নীতি, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং গণপরিবহন ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি এই রিপোর্টগুলির মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এএপি সরকারের আমলে, বিশেষ করে ২০২১-২২ সালের আবগারি নীতি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই নীতির দুর্বল কাঠামো এবং বাস্তবায়নের ত্রুটির কারণে সরকারের প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই রিপোর্টে লাইসেন্স প্রদানে অনিয়ম এবং নিয়ন্ত্রণের অভাবের মতো বিষয়গুলিও উঠে এসেছে। এই অভিযোগগুলি বিজেপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বারবার উত্থাপন করেছে, এবং তারা এই রিপোর্টগুলির মাধ্যমে এএপি-র শাসনকালের ‘অনিয়ম’ প্রকাশ করতে চায়।
ভারতের হাতে রানা, ২৬/১১-র চক্রীকে জেরা করবে NIA
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির ভূমিকা (assembly)
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) সিএজি রিপোর্টগুলির বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দায়ী। এই কমিটি সরকারি ব্যয় এবং নীতি বাস্তবায়নের উপর নজর রাখে এবং অনিয়মের ক্ষেত্রে সুপারিশ প্রদান করে। শুক্রবারের বৈঠকে পিএসি চেয়ারম্যান অজয় মহাওয়ারের নেতৃত্বে এই রিপোর্টগুলির পরীক্ষার কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। স্পিকার গুপ্তা ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন যে পিএসি তিন মাসের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেবে। এছাড়াও, সম্পর্কিত বিভাগগুলিকে এক মাসের মধ্যে তাদের পদক্ষেপের বিবরণ (অ্যাকশন টেকেন নোট) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বৈঠকের মাধ্যমে দিল্লি বিধানসভা এএপি সরকারের শাসনকালের বিভিন্ন দিক পরীক্ষা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষ করে, আবগারি বিভাগের অনিয়ম এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মোহল্লা ক্লিনিকগুলির কার্যকারিতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিএজি রিপোর্টে মোহল্লা ক্লিনিকগুলির অবকাঠামোগত সমস্যা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার ত্রুটির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
দিল্লির রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে উত্তপ্ত। বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এএপি-র বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং আর্থিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে সিএজি রিপোর্টগুলিকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে, এএপি নেতা এবং বিরোধী দলের নেত্রী অতিশী এই রিপোর্টগুলির উপর আলোচনার সময় বিরোধীদের পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি বিধায়কদের তুলনায় এএপি বিধায়কদের কথা বলার জন্য অনেক কম সময় দেওয়া হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলছে।
এছাড়াও, এএপি অভিযোগ করেছে যে বিজেপি সরকার রিপোর্টগুলির মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে। তারা দাবি করেছে, পুরনো আবগারি নীতিতে ত্রুটি ছিল বলেই তারা নতুন নীতি প্রবর্তন করেছিল। তবে, বিজেপি নেতারা এই রিপোর্টগুলির মাধ্যমে এএপি-র ‘দুর্নীতি’ প্রকাশ্যে আনার দাবি করছেন।
ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
শুক্রবারের বৈঠকটি দিল্লির প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈঠকে যে সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হবে, তা পিএসি-র তদন্ত প্রক্রিয়ার দিকনির্দেশনা দেবে। সিএজি রিপোর্টগুলির পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সরকারি বিভাগগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এছাড়াও, এই প্রক্রিয়া দিল্লির জনগণের কাছে সরকারি কাজের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একটি সুযোগ।
দিল্লি বিধানসভার (assembly) এই পদক্ষেপ রাজ্যের শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে এই প্রক্রিয়া কতটা নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আগামী দিনগুলিতে এই বৈঠকের ফলাফল এবং পিএসি-র তদন্তের অগ্রগতি দিল্লির রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠবে।
সিএজি রিপোর্টগুলির পরীক্ষা দিল্লির প্রশাসনিক সংস্কার এবং জবাবদিহিতার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। স্পিকার বিজেন্দর গুপ্তার নেতৃত্বে এই বৈঠকটি পূর্ববর্তী সরকারের কার্যকারিতার বিস্তারিত মূল্যায়নের সূচনা করবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দিল্লির জনগণের কাছে সরকারি কাজের সত্যতা এবং স্বচ্ছতা প্রকাশ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এই প্রক্রিয়া কতটা নিরপেক্ষ থাকবে, তা ভবিষ্যতেই স্পষ্ট হবে।