ভারতের হাতে রানা, ২৬/১১-র চক্রীকে জেরা করবে NIA

কলকাতা: দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে ভারতের মাটিতে এসে পৌঁছল ২৬/১১-র অন্যতম চক্রান্তকারী তাহিউর রানা। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বিশেষ বিমানে দিল্লি নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে গ্রেফতার করে…

NIA to question Tahawwur Rana

কলকাতা: দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে ভারতের মাটিতে এসে পৌঁছল ২৬/১১-র অন্যতম চক্রান্তকারী তাহিউর রানা। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বিশেষ বিমানে দিল্লি নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। রাতেই পাটিয়ালা হাউস আদালতে হাজির করানো হয় তাঁকে। আদালত রানাকে এনআইএ হেফাজতে ১৮ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে। আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁকে জেরা করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ভারতের হাতে রানা, ২৬/১১-র চক্রীকে জেরা করবে NIA

২০০৮-এর সেই বিভীষিকা… NIA to question Tahawwur Rana

২৬ নভেম্বর, ২০০৮— মুম্বই শহর রক্তাক্ত হয়েছিল একের পর এক জঙ্গি হামলায়। ১০ জন লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি তিনদিন ধরে চালিয়েছিল হত্যালীলা। প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৬৬ জন। জখম হয়েছিলেন ২৩৮ জন। আন্তর্জাতিক চক্রান্তের সেই ছক কষা হয়েছিল বহু আগে। আর সেই ছকেই নাম জড়িয়েছিল তাহিউর রানার।

কে এই তাহিউর রানা? NIA to question Tahawwur Rana

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তাহিউর রানা ছিলেন একসময় সেনা চিকিৎসক। পরে মার্কিন মুলুকে গিয়ে বসতি গড়েন। ২৬/১১-র আর এক মূলচক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনি। হেডলির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, হামলার আগে হেডলির ভারত সফরের যাবতীয় ব্যবস্থা ও আর্থিক সহায়তা করেছিলেন রানা।

সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ভারত তাঁকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানায়। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে তাঁকে হস্তান্তর করল আমেরিকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে পৌঁছনোর পরই তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ।

শুরু জেরা, নজরে তিনটি দিক NIA to question Tahawwur Rana

শুক্রবার থেকে শুরু হবে জেরা। সূত্রের খবর, এনআইএ-র লক্ষ্য মূলত তিনটি দিক—

*২৬/১১ হামলার চক্রান্তে রানার ভূমিকা

*লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ

*পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর হাত রয়েছে কি না, সেই সম্ভাবনা

কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে রানা-কে NIA to question Tahawwur Rana

রানাকে রাখা হয়েছে এনআইএ সদর দফতরের তৃতীয় তলার একটি বিশেষ কক্ষে। পাশেই জিজ্ঞাসাবাদের ঘর। দু’টি ঘরেই রয়েছে সিসিটিভি নজরদারি। এমনকি রানার সেলে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে যাতে আত্মহত্যা বা আত্মগোপনের কোনও চেষ্টাই না করতে পারেন তিনি।

Advertisements

রানার জন্য বরাদ্দ ১৪ বাই ১৪ ফুটের ঘরে দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত খাবার ও প্রাথমিক প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সূত্রের খবর, এনআইএ-র এক বিশেষ দল তাঁকে জেরা করছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ডিআইজি জয়া রায়— যিনি তাঁর প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

আদালতে কী বলল এনআইএ? NIA to question Tahawwur Rana

আদালতে এনআইএ জানায়, রানার হেফাজতে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই হামলার পেছনে কারা কারা ছিল, কে কোথা থেকে মদত দিয়েছিল— তা জানার জন্য রানার বক্তব্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এনআইএ আরও জানায়, রানার বিরুদ্ধে ই-মেল ও অন্যান্য নথি-সহ একাধিক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। যদিও এনআইএ ২০ দিনের রিমান্ড চাইলেও আদালত আপাতত ১৮ দিনের হেফাজতে পাঠিয়েছে তাঁকে।

তিহারে স্থানান্তরের প্রস্তুতি

রিমান্ড শেষে তাঁকে তিহার জেলে পাঠানো হবে। ইতিমধ্যেই জেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, যাতে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়। শুধু এনআইএ নয়, দেশের আরও আটটি তদন্তকারী সংস্থা রানাকে জেরা করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে।

মামলার শুনানি করছেন জেলা বিচারক বিমল কুমার যাদব। মামলার দায়ভার পেয়েছেন অভিজ্ঞ আইনজীবী দয়ান কৃষ্ণন এবং স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নরেন্দ্র মান।