পেট্রোল-ডিজেলে লিটারপিছু ২ টাকা করে শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা কেন্দ্রের

Petrol: কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোল এবং ডিজেলের উপর আবগারি শুল্ক প্রতি লিটারে ২ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার জারি হওয়া এই নির্দেশ অনুযায়ী, নতুন শুল্কহার…

Oil Prices Drop on Friday, Check the Latest Rates in Kolkata

Petrol: কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোল এবং ডিজেলের উপর আবগারি শুল্ক প্রতি লিটারে ২ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার জারি হওয়া এই নির্দেশ অনুযায়ী, নতুন শুল্কহার মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে।

নতুন নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, পেট্রোলে আবগারি শুল্ক বাড়িয়ে প্রতি লিটারে ১৩ টাকা এবং ডিজেলে ১০ টাকা করা হয়েছে। যদিও এই বৃদ্ধির ফলে খুচরো দামে কোনও পরিবর্তন আসবে কি না, তা নির্দেশনায় স্পষ্ট করা হয়নি। তবে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, খুচরো দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এক্স-এ (পূর্বতন টুইটার) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “পিএসইউ তেল বিপণন সংস্থাগুলি নিশ্চিত করেছে যে, আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির পরেও পেট্রোল এবং ডিজেলের খুচরো দামে কোনও পরিবর্তন হবে না।”

আন্তর্জাতিক বাজারে দামের পতনের সুযোগে সমন্বয়:
বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে। এর ফলে দেশে পেট্রোল ও ডিজেলের খুচরো দাম কমানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। সরকার সেই মূল্যছাড়ের সুযোগ নিয়ে শুল্ক বাড়িয়ে তা সমন্বয় করার পথ নিয়েছে।

এক উচ্চপদস্থ সরকারি সূত্র পিটিআই-কে জানায়, “আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমার ফলে দেশে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমার কথা ছিল। তবে সরকার সেই সম্ভাব্য দাম কমার অংশটাই শুল্ক বাড়িয়ে নেয়ায় খুচরো দাম অপরিবর্তিত থাকবে।”

এই পদক্ষেপের ফলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। সাধারণ বাজেট ঘাটতি সামাল দিতে এই ধরনের সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

আইনি ভিত্তি ও প্রেক্ষাপট:
সরকার জানিয়েছে, এই আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জনস্বার্থে। এটি সেন্ট্রাল এক্সসাইজ অ্যাক্ট, ১৯৪৪-এর ধারা ৫এ এবং ফাইন্যান্স অ্যাক্ট, ২০০২-এর ধারা ১৪৭-এর আওতায় কার্যকর হয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারের তরফে বলা হয়েছে, “জনসাধারণের কল্যাণে এবং দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে এই শুল্ক বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
এই শুল্ক বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহল থেকে সমালোচনার সুর শোনা যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, সরকার জনগণের উপর করের বোঝা চাপিয়ে চলেছে।

Advertisements

এক বিরোধী নেতা বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও সাধারণ মানুষ তার সুবিধা পাচ্ছেন না। বরং সরকার কর বাড়িয়ে সেই সুযোগকে নিজেদের আয়ের উৎস বানাচ্ছে।”

তবে সরকারের যুক্তি, তেলের দাম না বাড়িয়ে শুল্ক সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষকে দাম বৃদ্ধির হাত থেকে রক্ষা করেছে।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া:
খুচরো দামে পরিবর্তন না হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ঘোষণা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, “দাম না বাড়লেও কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের জন্য খারাপ ইঙ্গিত হতে পারে।” আবার কেউ কেউ বলছেন, “যদি খুচরো দাম না বাড়ে, তাহলে আপাতত চিন্তার কিছু নেই।”

তবে অনেকেই মনে করছেন, ভবিষ্যতে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ফের বাড়ে, তাহলে তখন খুচরো দামে সরাসরি প্রভাব পড়বে।

এই মুহূর্তে পেট্রোল এবং ডিজেলের খুচরো দামে কোনও পরিবর্তন না হলেও, শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদার উপর নির্ভর করে এই সিদ্ধান্তের প্রকৃত প্রভাব বোঝা যাবে।

সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী ভবিষ্যতে আরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপাতত দেশের তেল বাজার স্থিতিশীল রাখাই মূল লক্ষ্য।