শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে রাজ চক্রবর্তীর নাম নিয়ে তোলপাড়, তদন্তে নতুন মোড়

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার তদন্তে নতুন মোড় নিতে চলেছে। বৃহস্পতিবার কলকাতার বিশেষ আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলার শুনানি চলাকালে সিবিআই এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য…

cbi-raids-at-ed-officers-house-in-shimla-one-person-arrested

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার তদন্তে নতুন মোড় নিতে চলেছে। বৃহস্পতিবার কলকাতার বিশেষ আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলার শুনানি চলাকালে সিবিআই এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। সিবিআই জানিয়েছে, তারা রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে এবং তাঁদের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজ চক্রবর্তীর নামও রয়েছে, যা নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

২০২২-২৩ সালে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় একের পর এক শাসক দলের নেতা গ্রেফতার হন। এর মধ্যে ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা এবং আরও অনেকেই। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কি হতে চলেছে? সিবিআই-এর এই নতুন তথ্যে তেমনই একটি সংকেত মিলছে। বিশেষ আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, তারা রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে, যাদের নাম তাদের খুঁজে পাওয়া তালিকায় রয়েছে।

   

সিবিআই-এর তদন্তে জানা গেছে যে, বিকাশ ভবনের একটি ওয়ার হাউজ থেকে একটি তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে ৩২১ জন অযোগ্য প্রার্থীর নাম ছিল। এই প্রার্থীদের মধ্যে ১৩৪ জন চাকরি পেয়েছেন। সিবিআই দাবি করেছে, এই চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের পেছনে রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশ ছিল। এর ফলে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাজতবাসের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে এবং বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতার জন্য নতুন বিপদ আসতে পারে।

Advertisements

সিবিআই জানায় যে, সুপারিশকারী নেতাদের তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ, তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর, তৃণমূল বিধায়ক বীণা মণ্ডল, গুলশন মল্লিক, নির্মল ঘোষ, শওকত মোল্লা, শ্যামল সাঁতরা এবং আরও অনেকের। এদের মধ্যে রাজ চক্রবর্তীর নামও রয়েছে, কিন্তু তার সাথে কোনও ডেজিগনেশন নেই, যা প্রশ্ন তৈরি করছে। রাজ চক্রবর্তী অবশ্য এ বিষয়ে একটিই মন্তব্য করেছেন – “এটা আমি না। অন্য কারোর নামের সঙ্গে গোলাচ্ছে না তো?”

ফেব্রুয়ারি মাসে যখন এই নেতাদের নাম সামনে আসে, তখন শ্যামল সাঁতরা দাবি করেছিলেন যে, “এটা তাঁকে টার্গেট করা হয়েছে”। অন্যদিকে, শওকত মোল্লা বলেন, “চক্রান্ত করে এই ধরনের নোংরামি করা হচ্ছে”। বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি, তবে ভারতী ঘোষ বলেছেন, “সিবিআই আমার নাম পেলেও, আমাকে একবারও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি, যা নর্মাল তদন্তের মধ্যে পড়ে।”

এদিকে, তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “এ ধরনের কাজ আমি কখনও করি না, করিওনি।” বিরোধীরা এই ঘটনায় সরব হয়েছেন। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “মানুষ এঁদের আর সমাজে দেখতে চায় না। সিবিআই-কে আরও সজাগ হতে হবে।”

সবশেষে, সিবিআই জানিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড, তবে এর ‘হ্যান্ডস’ কতটা, সেটা তদন্ত করে সামনে আনা হবে। এখন দেখার বিষয় হবে, সিবিআই এই তদন্তে কেমন সাফল্য পায় এবং কতটা রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সামনে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।