মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, (Mamata Banerjee) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, সম্প্রতি লন্ডনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ কলেজে একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁর এই সফর ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে তিনি রাজ্যের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি এবং ভারতীয় ছাত্রদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা তুলে ধরেন। তবে, এর মাঝেই একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, যা রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
বৃহস্পতিবার, মমতার (Mamata Banerjee) বক্তব্যের মাঝেই কিছু বিক্ষোভকারী, যাদের মধ্যে সিপিএম সমর্থকরা ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাবাদীর অভিযোগ তুলে। তারা তাঁর রাজনৈতিক পদক্ষেপগুলো এবং রাজ্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মমতা, যা সাধারণত অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত, তাতে একেবারেই উত্তেজিত হননি। বরং, তিনি ঠান্ডা মাথায় সেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাদেরকে বলেন, “দয়া করে রাজনীতি করবেন না, এটি রাজনৈতিক মঞ্চ নয়।” মমতা নিজের ভাষায় আরো বলেন, “আপনারা মিথ্যা বলছেন। আমি সবাইকে ভালোবাসি।”
এই মুহূর্তে, মমতা (Mamata Banerjee) নিজের জীবনের এক স্মরণীয় ঘটনা তুলে ধরেন। ১৯৯৩ সালে, যখন তিনি মহাকরণ অভিযানে গুরুতর আহত হন, তখন তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা একটি ছবি প্রকাশ করেন। এই ছবি দিয়ে তিনি বিক্ষোভকারীদের দেখাতে চেয়েছিলেন যে, তাদের দল তার জীবন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তিনি কখনোই ভেঙে পড়েননি। তাঁর এই সাহসিকতা এবং ধৈর্য্যকে অনেকেই প্রশংসা করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁর বক্তব্যে আরো একবার পরিষ্কারভাবে বলেন, “আমি সকলের জন্য। আমি হিন্দু-মুসলিম-শিখ সকলের জন্য। আমি একতার পক্ষে। আপনারা নন।” তাঁর এই বার্তা ছিল সর্বধর্ম সমন্বয়ের। তিনি আরও বলেন, “আমি সত্যিই খুব খুশি। আমি চেষ্টা করব প্রতি বছর দু’বার এখানে আসার।”
মমতা, যারা তাঁর বিরোধিতা করেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা আমাকে বিরোধিতা করে আমাকে আরও শক্তিশালী করেন। দিদি কাউকে পরোয়া করে না। দিদি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।” তাঁর এই বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনোই অন্যায়ের সামনে মাথা নত করেন না।
তিনি এরপর আরও বলেন, “দয়া করে দেখুন এই ছবিটি। কীভাবে আপনাদের দল আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এটা নাটক নয়। এরকম ব্যবহার করবেন না। দুর্ব্যবহার করবেন না।” তাঁর এই মন্তব্যে বিরোধী শিবিরকে এক ধরনের সতর্কতা দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁর রাজনৈতিক দৃঢ়তা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেছেন। তাঁর এই সাহসিকতা এবং ধৈর্য্য ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা আগামী দিনে এক নয়া রাজনীতি গড়তে সহায়তা করবে।
