খাস কলকাতার নার্সিংহোমে ভয়াবহ নকল ইঞ্জেকশন! চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড়সড় দুর্নীতি

কলকাতার খাস শহরে এবার এক ভয়াবহ ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের একটি নামী নার্সিংহোমে (Albumin) পাওয়া গেছে জাল অ্যালবুমিন ইঞ্জেকশন, যা রোগীদের জীবন (Albumin)…

Fake Albumin Injections Seized from Kolkata's Nursing Home

কলকাতার খাস শহরে এবার এক ভয়াবহ ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের একটি নামী নার্সিংহোমে (Albumin) পাওয়া গেছে জাল অ্যালবুমিন ইঞ্জেকশন, যা রোগীদের জীবন (Albumin) বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসার এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণটি যে জাল ছিল, তা নিশ্চিত করেছে ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা, যারা উল্টোডাঙ্গার নর্থ সিটি নার্সিংহোম থেকে অভিযান চালিয়ে এই ভেজাল ইঞ্জেকশন উদ্ধার করেছেন।

জীবনদায়ী অ্যালবুমিন (Albumin) ইঞ্জেকশনটি সাধারণত অস্ত্রোপচারের সময় রোগীদের শরীরে প্রবাহিত করা হয়, যাতে তাদের শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূর্ণ করা যায় এবং সুস্থতা দ্রুত ফিরে আসে। কিন্তু এই ইঞ্জেকশনটি (Albumin) যে জাল, তা জানা গেছে মুম্বইয়ের একটি সংস্থার পক্ষ থেকে, যারা এই ইঞ্জেকশন উৎপাদন করে। এই ঘটনা ধরা পড়ার পর, ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা আরও তদন্ত শুরু করেছেন এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ওষুধের দোকান ও ডিস্ট্রিবিউটরদের হানা দিচ্ছেন।

   

ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকদের মতে, এই জাল ইঞ্জেকশনটি মুম্বই থেকে এসে কলকাতার উল্টোডাঙ্গা অবস্থিত নর্থ সিটি নার্সিংহোমে পৌঁছেছে। এই দীর্ঘ পথ পেরিয়ে জাল ইঞ্জেকশনটি যে নার্সিংহোমে ব্যবহৃত হয়েছিল, তা একটি বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ঘটনার পর নর্থ সিটি নার্সিংহোমের জেনারেল ম্যানেজার বিজয় অধিকারী জানান, “১০ বছর ধরে আমরা ওই ডিস্ট্রিবিউটরদের থেকে মাল নিয়ে আসছি। কখনও ভাবতেই পারিনি এমন কিছু হবে। আমাদের কাছে সব রকমের নথি, যেমন জিএসটি এবং ব্যাচ নম্বর রয়েছে।” তবে প্রশ্ন উঠছে, এতদিন ধরে এই ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছ থেকে মাল নেওয়ার পরেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কীভাবে বুঝতে পারল না যে ওই ইঞ্জেকশনগুলো ভেজাল?

Advertisements

এই ঘটনায় শোরগোল তৈরি হয়েছে কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য জায়গাতেও। বিশেষ করে, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, সহ কলকাতার বিভিন্ন ওষুধের দোকানে এখন নজর রাখা হচ্ছে। গত কিছুদিনে একাধিক ডিস্ট্রিবিউটরকে ধরা হয়েছে, যারা এসব ভেজাল ওষুধ সরবরাহ করছিল। ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা এখন এই ভেজাল চক্রের গোড়া ধরার চেষ্টা করছেন, এবং তারা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানাচ্ছে যে তারা কোনোভাবেই এই জাল ওষুধের সঙ্গে জড়িত নন। তবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে যে, সঠিক যাচাই-বাছাই না করে ওষুধ গ্রহণ এবং ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে রোগীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি হয়েছে।

এই ঘটনা জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি করেছে। বিশেষ করে, নার্সিংহোমগুলোর উপর আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই ধরনের জাল ওষুধের প্রবাহ কীভাবে রোধ করা যাবে এবং যারা এর সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা এখন দেখার বিষয়। ড্রাগ কন্ট্রোলের তদন্ত চলমান রয়েছে, এবং আশা করা যাচ্ছে যে শীঘ্রই পুরো চক্রের উন্মোচন হবে।