ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য পশ্চিমের দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়ার উপর। আর সেই কারণে চাপপ বাড়তে পারে ভারতের উপর। সমস্যায় পড়তে পারে ভারত। কারণ রাশিয়া এবার পূর্বের দেশগুলোর দিকে নজর দেবে।
সম্প্রতি চিন সম্পর্কে রাশিয়া বলেছে, তাদের বন্ধুত্ব লোহার আবরণের মতো। তারা কৌশল বজায় রেখে চিন-রাশিয়া অংশীদারিত্বের বিকাশ ঘটাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞার পর চিনের দিকেই নজর দিয়েছে তারা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে উন্নতি করছে চিন ও রাশিয়া। ফলে পুতিনের যখন সাহায্যের প্রয়োজন হবে তখন চিনের দিকে হাত বাড়াবে বলে অনুমান করা যায়। চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, বৃহত্তম সামরিক শক্তিও তাদের দখলে। এছাড়া বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে চিন আত্মনির্ভরশীল হয়েছে। পশ্চিম থেকে যা আমদানি করতে পারে না বা করতে চায় না তা নিজের মতো তৈরি করছে তারা।
এর অর্থ হল যে বেইজিংয়ের কাছে মস্কোকে সাহায্য করার জন্য শুধু অর্থনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক ভাণ্ডারই নয় বরং পরিষেবা এবং প্ল্যাটফর্মও তৈরি। এদিকে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্তকে কেন্দ্র করে সমস্যা দীর্ঘদিন চলে আসছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলএসি-তে কয়েক হাজার সৈন্যকে মোতায়েন রাখে উভয় দেশ। ২০২০ সালের জুনে চিন ও ভারতের মধ্যে গালওয়ানে সংঘর্ষ হয়। তারপর থেকে গোলটেবিল বৈঠক হয়েছে প্রচুর। কিন্তু সমাধান সূত্র মেলেনি।
সামরিক দিক থেকে চিন যতটা উন্নত, ভারত এখনও ততটা স্বনির্ভর নয়। ফলে চিন ও রাশিয়া হাত মেলালে তা অশনি সংকেত হতে পারে ভারতের ক্ষেত্রে। পশ্চিম থেকে কূটনৈতিক সাহায্য আসতে পারে। তবে সামরিক দিক থেকে নয়াদিল্লির উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। ভারতীয় সামরিক সরঞ্জামের আনুমানিক দুই-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। যুদ্ধের সময় সেই সরঞ্জামগুলির সার্ভিসিং, রিস্টকিং বা প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হবে। এখন ইউক্রেন নিয়ে চিন সরাসরি রাশিয়ার পাশে রয়েছে। ভারত এখানে মৌন। তাই মস্কো যদি বেজিংয়ের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ে তবে ভারতের জন্য চিন্তার বিষয়।
তবে সামরিক দিক আরও শক্তিশালী করতে ভারত আমেরিকা, ইসরায়েল এবং ফ্রান্সের দিকে ঝুঁকছে। এটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু, রাশিয়া যদি বেঁকে বসে আর চিনের সঙ্গে বন্ধুত্বের ফলে তার নেকনজর থেকে সরে যায় ভারত, তবে অবশ্যই তা উদ্বেগের কারণ।