নাগপুরে সাম্প্রদায়িক হিংসার মধ্যে মহিলা পুলিশ কর্মীর শ্লীলতাহানি

নাগপুরে গত সপ্তাহে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় একজন কর্তব্যরত মহিলা পুলিশ কর্মীর উপর হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। গণেশপেঠ থানায় দায়ের করা একটি এফআইআরে এই চাঞ্চল্যকর…

https://kolkata24x7.in/wp-content/uploads/2025/03/Riots.jpg

নাগপুরে গত সপ্তাহে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় একজন কর্তব্যরত মহিলা পুলিশ কর্মীর উপর হামলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। গণেশপেঠ থানায় দায়ের করা একটি এফআইআরে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এফআইআর অনুযায়ী, হিংসার সময় উপস্থিত এক দাঙ্গাবাজ ওই মহিলা পুলিশ কর্মীর ইউনিফর্ম ধরে টানাটানি করে এবং তার সঙ্গে অশোভন আচরণের চেষ্টা করে। এছাড়াও, দাঙ্গাকারীদের একটি দল এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষ্যে উস্কানিমূলক স্লোগান দেয় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় মোট ৫১ জনের নাম এফআইআরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এফআইআরের বিবরণ অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে যখন ওই মহিলা পুলিশ কর্মী দ্রুত নিয়ন্ত্রণ পুলিশ (আরসিপি) দলের সদস্য হিসেবে হিংসাস্থলে দায়িত্ব পালন করছিলেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মহিলা পুলিশ কর্মীর ইউনিফর্ম ধরে টান দেয় এবং তার শরীরে অশালীনভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করে। ঘটনার পরপরই ওই কর্মী তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানান। তার অভিযোগের ভিত্তিতে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের করা হয়। শ্লীলতাহানির অভিযোগ ছাড়াও, এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে যে একই অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য মহিলা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেছে। দাঙ্গাকারীদের ভিড় কুৎসিত ইঙ্গিতপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করে এবং অশ্লীল মন্তব্য করে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে।

   

নাগপুরে গত সপ্তাহে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে পুলিশকে বড় আকারে মোতায়েন করতে হয়। এই হিংসার প্রেক্ষাপটে পুলিশ বাহিনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা ও অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ওই মহিলা পুলিশ কর্মী তার অভিযোগে জানিয়েছেন, দাঙ্গাকারীদের আচরণ শুধু তাকে লক্ষ্য করেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং অন্যান্য মহিলা পুলিশ সদস্যদেরও একইভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনা পুলিশের মর্যাদা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এফআইআর দায়েরের পর তদন্ত শুরু হয়েছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই ধরনের আচরণ কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা শুধু পুলিশের উপর হামলা নয়, বরং আইন-শৃঙ্খলার প্রতি চ্যালেঞ্জ।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন বাসিন্দা বলেন, “পুলিশ আমাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে। তাদের সঙ্গে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।” রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিরোধী দলগুলো সরকারের কাছে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। এই ঘটনা নাগপুরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে। তদন্তে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হলে এই মামলার পুরো চিত্র আরও স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে।